নয়া দিল্লি: শুরু হয়ে গেল লোকসভা নির্বাচন। আজ প্রথম দফায় নির্বাচন। আজ প্রথম দফার ২১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২ টি কেন্দ্রে ভোট হল। বাংলা ছাড়াও বিহারের চারটি আসন, উত্তরাখণ্ড এবং মহারাষ্ট্রের ছ’টি, উত্তরপ্রদেশের আটটি , রাজস্থানের ১২টি, অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, মেঘালয়ের দু’টি করে আসন, ছত্তীশগঢ়, মিজ়োরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম, ত্রিপুরা, উত্তরাখণ্ড, আন্দামান ও নিকোবর, জম্মু ও কাশ্মীর, লক্ষদ্বীপ এবং পুদুচেরির একটি করে আসনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হল।
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে পশ্চিমবঙ্গে। এই রাজ্যে ভোট পড়ল ৭৭.৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা। বিক্ষিপ্ত কিছু গোলমাল ছাড়া শুক্রবার বাংলার প্রথম দফার ভোট (Lok Sabha Election 2024) শান্তিপূর্ণ ভাবেই কাটল। তীব্র গরমকে উপেক্ষা করে গণতন্ত্রের উৎসবে সবাই শামিল হন।
প্রথম দফার ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রিসভার আট মন্ত্রী— নিতিন গডকড়ী (নাগপুর), কিরেণ রিজিজু (অরুণাচল পশ্চিম), ভূপেন্দ্র যাদব (অলওয়ার), সর্বানন্দ সোনওয়াল (ডিব্রুগড়), জিতেন্দ্র সিংহ (উধমপুর), অর্জুন রাম মেঘওয়াল (বিকানের), সঞ্জীব বালিয়ান (মুজফ্ফরনগর) এবং এল মুরুগান (নীলগিরি)। রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।বিজেপি, কংগ্রেস সহ রাজনৈতিক দলগুলির অনেক তারকা প্রার্থীরই ভাগ্য পরীক্ষা হল আজ। দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ভাগ্য চূড়ান্ত হল। অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সোনওয়ালের পাশাপাশি বিজেপি বিপ্লব দেব (ত্রিপুরা পশ্চিম), উত্তরখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়তকে (হরিদ্বার) লোকসভা ভোটে লড়েছেন। পাশাপাশি বেশ কয়েক জন দলবদলু প্রার্থীও লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছেন প্রথম দফায়।
আরও পড়ুন: প্রথম দফায় বাংলায় ভোট কীরকম হলো?
মহারাষ্ট্রের নাগপুর আসন থেকে লোকসভার বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গড়করি। এই নিয়ে টানা তৃতীয়বার তিনি এই আসন থেকে দাঁড়ালেন৷ এই আসনে গডকরির বিরুদ্ধে প্রার্থী ছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক বিকাশ ঠাকুর। জিতিন প্রসাদ হলেন বিজেপির হেভিওয়েট মুখ। ২০২১ সালে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন জিতিন প্রসাদ। উত্তর প্রদেশের পিলভিট কেন্দ্র থেকে তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে। কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈয়ের ভাগ্যপরীক্ষাও হল প্রথম দফার নির্বাচনে। অসমের জোরহাট আসন থেকে লড়ছেন গৌরব। বিজেপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত জোরহাট। কংগ্রেস নেতা এবং শিবগঙ্গার সাংসদ কার্তি চিদম্বরমের এই দফায় ভাগ্য চূড়ান্ত হল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজুকে অরুণাচল প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চল থেকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। তিনিও তিনবারের সাংসদ। কোয়েম্বাত্তুর লোকসভা আসন থেকে দাঁড়িয়েছেন তামিলনাড়ুর বিজেপি সভাপতি কে আন্নামালাই। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতন রাম মাঝি বিহারের গয়া আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মধ্য প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের ছেলে নকুল নাথও লড়ছেন। বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত রাজস্থানের বিকানের লোকসভা আসন থেকে ভোটে লড়েছেন৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিককে কোচবিহার থেকে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে ভোটে লড়ছেন৷
বিজেপির শক্ত ঘাঁটি উত্তরবঙ্গ। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে আটটি আসনের মধ্যে তৃণমূলকে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছিল। সাতটি পেয়েছিল বিজেপি। একটি পায় কংগ্রেস। বিধানসভা ভোটে সেই ক্ষত কিছুটা মেরামত হয় তৃণমূলের। এবারের নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের আসনগুলি তৃণমূলের কাছে পাখির চোখ। বিজেপির হাত থেকে উত্তরবঙ্গ ছিনিয়ে নিতে নয়া স্ট্র্যাটেজি নিয়ে নির্বাচনী ময়দানে নেমেছে তৃণমূল।
অন্য খবর দেখুন