Placeholder canvas
কলকাতা শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
পলিটিকালবিট: ‘রাজভবন নবান্ন বিরোধ’ ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যে রাজ্যে
শুভাশিস মৈত্র Published By: 
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৬ মার্চ, ২০২২, ০৮:০১:০৬ পিএম
  • / ৪১৯ বার খবরটি পড়া হয়েছে

আমাদের সংবিধানের এক নম্বর ধারায় লেখা আছে ‘India, that is Bharat, shall be a Union of States. মোদী সরকারের আমলের প্রাক্তন ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইসার, বর্তমানে তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আর এন রবির এই ভারতীয় ইউনিয়নের চরিত্র কী, তা নিয়ে করা একটি মন্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে। রবি সম্প্রতি কোয়েবাটুরে উপাচার্যদের সভায় বলেন, ভারত আমেরিকার মতো কোনও ‘কনট্রাকচুয়াল ইউনিয়ন’ নয়, একটি অখণ্ড পরিচয় তার (অরগানিক ওয়ান)।  ‘সাউথ জোন ভাইস চ্যান্সেলরস মিট’-এ করা রবির এই মন্তব্যের পর এমডিএমকে দলের সাধারণ সম্পাদক ভাইকো দাবি করেছেন, তামিলনাড়ুর সব বিশ্বিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে রবিকে সরিয়ে দেওয়া হোক। ভাইকোর এই দাবি যদি তাঁর একার হত তাহলে হয়তো তার তেমন গুরুত্ব থাকতো না। কিন্তু বিষয় অন্য হলেও, এই দাবি পশ্চিমবঙ্গেও করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

তিনি নবান্ন-রাজভবন বিরোধ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। অন্তর্বর্তিকালীন হিসেবে সেই পদে মুখ্যমন্ত্রীকে আনার ভাবনার কথাও বলেন তিনি। এ বিষয়ে আইনজীবীদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন।

যদিও পরে ব্রাত্য তাঁর করা মন্তব্য কিছুটা বদলে  টুইটে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবর্তে  আচার্য পদে বড় মাপের শিক্ষাবিদদের আনার পক্ষে সওয়াল করেন।

আচার্য পদে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে আরও বেশ কিছু অবিজেপি শাসিত রাজ্যে। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন কিছু দিন আগেই ঘোষণা করেন তাঁর সরকার ভাবছে কী করে উপাচার্য নিয়াগের ক্ষমতা রাজ্যপালের হাত থেকে নিয়ে নির্বাচিত রাজ্য সরকারের হাতে দেওয়া যায়। মহারাষ্ট্র ইতিমধ্যেই রাজভবনের সঙ্গে বিরোধে ক্লান্ত হয়ে এই ধরনেরই একটি বিল বিধানসভায় পাস করিয়েছে। যদিও অনুমোদনের জন্য সেই বিল রাজ্যপালের কাছেই পাঠাতে হবে। ফলে তা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা কম। ১৯৯৪ সালে তামিলনাড়ুতে মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা রাজভবনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়গের প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখতে এবং মুখ্যমন্ত্রীর হাতে সেই ক্ষমতা তুলে দিতে একটি বিল এনেছিলেন বিধানসভায়। তখন সেখানে রাজ্যপাল চেন্না রেড্ডি। চেন্না রেড্ডি স্বাভাবিক ভাবেই সেই বিলে সই করেননি। পরে ডিএমকে ক্ষমতায় এসে সেই বিল প্রত্যাহার করেছিল। আজ আবার তামিলনাড়ুতে ডিএমকের পক্ষ থেকেই সেই একই দাবি তোলা হচ্ছে।

সম্প্রতি উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে এক বিরোধের জেরে কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান বলেছেন তিনি আচার্য থাকতে চান না। যে ক’টি রাজ্যের কথা এখানে বলা হল সবই অবিজেপি রাজ্য। কেন অবিজেপি রাজ্যে রাজ্যপালের সঙ্গে ক্রমাগত নির্বাচিত সরকার বিরোধ লেগেই থাকছে? উত্তরটা খুব স্পষ্ট। বিরোধ আসলে কেন্দ্রের সঙ্গে।

নির্বাচিত রাজ্য সরকার এবং মনোনীত রাজ্যপালের মধ্যে এমন বিরোধ যে হতে পারে, ভারতের জন্মলগ্ন থেকেই সেই আশংকা ছিল।  তবে কনস্টিটিউশন ড্র্যাফটিং কমিটির চেয়ারম্যান বাবাসাহেব আম্বেদকর আশা ছিল, এমন কিছু ঘটবে না।  কনস্টিটুয়েন্ট অ্যাসেমব্লিতে বিতর্কের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘রাজ্যপালের বিশেষ ক্ষমতা কখনই মন্ত্রিসভার কাজে হস্তক্ষেপ বা বাধা দানের জন্য ব্যবহৃত হবে না’।

আমরা সবাই জানি, বাবাসাহেব যেমন ভেবেছিলেন, তেমন ঘটেনি। রাজ্যে রাজ্যে রাজ্যসরকার-রাজ্যপাল সংঘাতের ইতিহাস একেবারেই অন্য কথা বলে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এবং খুব স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যপালদের একটা দলীয় রাজনীতির অতীত থাকে।  ক্রমাগত অভিযোগ উঠছে, রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত তাঁর পুরোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে যাচ্ছে।  অনেক সময়ই সেই বিরোধ সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে মিমাংসা হয়েছে। এই ধরনের অনেক মামলা সুপ্রিম কোর্টের রায়ই বলে দেয়, রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যসরকারের বিরোধ দেখা দিচ্ছে তখনই যখনই কেন্দ্রে এবং রাজ্যে একই দলের সরকার থাকছে না।

১৯৪৯ সালের জুলাইয়ে কনস্টিটুয়েন্ট অ্যাসেমব্লিতে যখন সংবিধানের খসরা নিয়ে আলোচনা চলছে তখন অনেক সদস্যই নির্বাচিত রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালের মধ্যে এই ধরনের বিরোধের সম্ভাবনার কথা বলে সংবিধানে রাজ্যপালের ক্ষমতার উপর রাশ টানার পরামর্শ দিয়েছিলেন। অনেকেই আশংকা প্রকাশ করে বলেছিলেন, ইংরেজরা ভারতীয়দের বিশ্বাস করত না বলেই মাথার উপরে একজন করে গভর্নর বসিয়েছিল। সেই ১৯৩৫ সালের ভারতশাসন আইনের থেকে ধার করে প্রায় একই রকম ধারায় এই সব রাজ্যপালদের বসানোর কথা ভাবা হচ্ছে।  অনেকের মত ছিল, এর মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যপালের অধীন করে দেওয়া হচ্ছে।

১৯৪৯ সালের ২ জুন কনস্টিটিউয়েন্ট অ্যাসেম্বলিতে বিতর্কে যোগ দিয়ে বিহারের কংগ্রেস সদস্য ব্রজেশ্বর প্রসাদ বলেছিলেন, রাজ্যে উঁচু মাপের নেতার অভাব রয়েছে। যোগ্য মানুষের অভেব রয়েছে। যতই অগণতান্ত্রিক মনে হোক,  এই মুহূর্তে দেশের স্বার্থে কেন্দ্রিভূত রাজনৈতিক ক্ষমতাই ভালো। সোসালিস্ট সদস্য এইচ ভি কামাথ বলেন, ‘রাজ্যপালকে বিশেষ ক্ষমতার মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের দৈনন্দিন কাজ-কর্মের উপর হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যপালকে যে কোনও তথ্য জানতে চাওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে। তাঁর মতে এটা হল ঘোড়ার আগে গাড়ি বেঁধে দেওয়ার মতো। হওয়া উচিত ছিল, মুখ্যমন্ত্রী যদি মনে করেন কোনও বিষয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা করবেন, একমাত্র তখনই সেই বিষয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলবে রাজ্য সরকার। লালা লাজপৎ রায়ের অনুগামী বিশ্বনাথ দাস (পরে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী) বিতর্কে যোগ দিয়ে বলেছিলেন, এখন বোঝা যাচ্ছে না, কিন্তু এমন দিন আসবে, যখন কেন্দ্রে এবং রাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে। তখন এমন হতেই পারে, কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া কোনও রাজ্যপালকে রাজ্যের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল মেনে নিল না। তখন রাজ্যপালের হাতে বিশেষ ক্ষমতা থাকলে, তার ব্যবহারে সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠবে। তাই এই ধরনের ক্ষমতা রাজ্যপালের হাতে না থাকাই বাঞ্ছনীয়। সব শেষে বাবা সাহেব আম্বেদকার বলতে ওঠেন। রাজ্যপালের বিশেষ ক্ষমতা সংক্রান্ত সব বিরোধিতা খারিজ করে দিয়ে তিনি বলেছিলেন, রাজ্যপাল কাজ করবেন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভাবে, মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে। তাঁর কাজ প্রধানত দুটো। এক সরকারের সাংবিধানিক অভিভাবক হিসেবে থাকা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সরকারকে পরামর্শ দেওয়া।

বাকি ইতিহাস আমাদের সবার জানা।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

রায়বরেলি থেকে প্রার্থী রাহুল, জানাল কংগ্রেস
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ, রাজভবনে মোদি
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
শ্লীলতাহানির অভিযোগের পিছনে চক্রান্ত দেখছে রাজভবন
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
কয়েক মিনিটের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ সুন্দরবনের কয়েকটি ব্লক
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমাকে বয়কটের সিদ্ধান্ত রাজ্যপালের
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
বানানো ঘটনা নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নই: রাজ্যপাল
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
কোভিশিল্ড বিতর্কের মধ্যেই ভ্যাক্সিন সার্টিফিকেট থেকে উধাও মোদির ছবি
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ রাজভবনের অস্থায়ী কর্মীর
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
বিজেপির সুভাষের বিরুদ্ধে নির্দলে মনোনয়ন পেশ দলীয় নেতার
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
আইএএস, আইপিএস অফিসারদের বিজেপির হয়ে কাজ করতে চাপ, অভিযোগ মমতার
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ঘিরে উত্তেজনা তমলুকে
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
তীব্র তাপপ্রবাহ, আলিপুরদুয়ারে খেতে শুকোচ্ছে সবজি
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
দল নির্বাচন নিয়ে কী যুক্তি দিলেন রোহিত-আগরকর?
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team