১৯২০ সালের পয়লা আগস্ট জন্ম ইস্ট বেঙ্গলের। সেই বছরই হারকিউলিস কাপে খেলেছিল ইস্ট বেঙ্গল। সেই ১৯২০ সালের জার্সি রয়েছে আর্কাইভে। পঞ্চ পাণ্ডবের মূর্তি রয়েছে সেখানে। অকালপ্রয়াত ফুটবলার কৃশানু দে-র বুট জোড়া রয়েছে। আসিয়ান কাপ জয়ের স্থপতি সুভাষ ভৌমিকের মূর্তি বসানো হয়েছে আসিয়ান কাপের উপরে। এ রকম নানা রকম ঐতিহাসিক এবং দুষ্প্রাপ্য জিনিসে ভরা সুরেশ চৌধুরি মেমোরিয়াল আর্কাইভের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং তার পর তাঁর নিজের বক্তব্যে বললেন, “এই আর্কাইভ বিশ্বের সেরা।” ইস্ট বেঙ্গল কর্তাদের দাবি ভূভারতে কোনও ক্লাবের এ রকম আর্কাইভ নেই। মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, এর পর ক্লাবের লাইব্রেরি করার জন্য ইতিমধ্যেই ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ৫৭ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছেন। এর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী নিজেও ইস্ট বেঙ্গলের উন্নয়নের জন্য পঞ্চাশ লক্ষ টাকা অনুদানের কথা ঘোষণা করলেন। একই পরিমাণ টাকা দেওয়া হবে মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবকেও।
দুর্দান্ত একটি মঞ্চ। চমৎকার এবং সুপরিকল্পিত অনুষ্ঠান। ছিমছাম এবং নিখুঁত। মুখ্যমন্ত্রী বুধবার বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ এসে পৌছলেন ইস্ট বেঙ্গল তাঁবুর সামনে। তাঁকে বরণ করলেন দেবব্রত সরকার এবং সহসচিব রূপক সাহা। ক্লাবে পা দিয়েই মুখ্যমন্ত্রী সোজা উঠে গেলেন দোতলার আর্কাইভে। তাঁর সঙ্গে তিন মন্ত্রী ববি হাকিল, অরূপ বিশ্বাস এবং মনোজ তিওয়ারি। আর্কাইভ উদ্বোধন করে সপার্ষদ মমতা সেটা ঘুরে দেখেন। তার পর মাঠের দক্ষিণে র্যাম্পার্টের গা ঘেঁষা মঞ্চে আসেন। আরশিনগর ব্যান্ডের শিল্পীরা লাল হলুদের জয়গাথা নিয়ে গান বেঁধেছেন। সেই গান শুনে সবাই খুব খুশি। এর পর ক্লাবের সহসভাপতি ডাঃ শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্তের অভিভাষণের পর মুখ্যমন্ত্রীকে বরণর পালা। বিকাশ পাঁজি উত্তরীয় পরাতে গেলে মমতা নিজেই তা পরিয়ে দিলেন বিকশের গলায়। এর পর তাঁকে যত উপহার দেওয়া হল তা তিনি ফেরত দিয়ে দিলেন। কিন্তু ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের বিশেষ উপহার লাল হলুদ জার্সিটি তিনি নিয়ে গেলেন। জার্সির পিছনে লেখা দিদি ১০০। মমতার অনুরোধে বক্তব্য রাখলেন ইমামি গ্রুপের কর্ণধার আদিত্য আগরওয়ালও জানালেন ইস্ট বেঙ্গলের সঙ্গে তাঁদের গাঁটছড়া বাঁধার কথা। মঞ্চে এলেন ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের কোচ স্টিভন কনস্ট্যানটাইন এবং বিনু জর্জ। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের গলায় পরালেন উত্তরীয়। এর পর ইস্ট বেঙ্গলের ছোট ছোট ছেলে এবং মেয়ে ফুটবলাররা প্রণাম করলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। মমতা তাদের হাতে তুলে দিলেন ফুটবল। মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে স্মারক ছবি তুলে দেওয়া হল সুভাষ ভৌমিকের ছেলে অর্জুন এবং সুরজিৎ সেনগুপ্তের স্ত্রী শ্যামলীর হাতে। এর পর মমতা নিজেই ফুটবল ছুড়লেন দর্শকদের উদ্দেশে। নয় নয় করে গোটা দশেক। এবং নিজের বক্তব্যের সময় মমতা ঘোষণা করলেন রাজ্যে তিনি একটি ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবেন।
সব মিলিয়ে বুধ দুপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ইস্ট বৈঙ্গল ক্লাবের আর্কাইভ উদ্বোধন বেশ স্মরণীয় হয়ে রইল।