চেক প্রজাতন্ত্র–১ ক্রোয়েশিয়া–১
(প্যাট্রিক শিক-পেনাল্টি) (ইভান পেরিসিচ)
২০১৮-র বিশ্ব কাপ রানার্স ক্রোয়েশিয়ার হলটা কী? এবারের ইউরোর পর পর দুটো ম্যাচে তারা জিততে পারল না। প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর শুক্রবার গ্লাসগোর হ্যাম্পডেন পার্কে তারা চেক প্রজাতন্ত্রকেও হারাতে পারল না। তবে কপাল ভাল তাদের ৩৭ মিনিটে গোল খাওয়ার দশ মিনিটের মধ্যেই গোলটা শোধ হয়ে গেল। কিন্তু তার পরেও তো তেতাল্লিশ মিনিট খেলা বাকি ছিল। তা সত্ত্বেও লুকা মরদিচের দল আরও একটা গোল করতে পারল না কেন? তবে মন্দের ভাল পেরিসিচের গোলটা হয়ে যাওয়ায়। না হলে তো এদিনই বিদায় ঘন্টা বেজে যেত তাদের। এখন শেষ ম্যাচে স্কটল্যান্ডকে হারাতে পারলে ক্রোয়েশিয়ার নক আউটে যাওয়া হয়তো অসম্ভব হবে না। কিন্তু তার পর কী হবে তার উত্তর অজানা।
দু ম্যাচের পর জয়হীন হলেও ক্রোটদের গোলটার প্রশংসা করতে হবে। গোলদাতা ইন্টার মিলানের স্ট্রাইকার কাম মিডফিল্ডার ইভান পেরিসিচ। ৩২ বছর বয়সী ফুটবলারটি এই গোলটা করার সঙ্গে সঙ্গে এক অনন্য রেকর্ডের অধিকারী হয়ে গেলেন। ২০১৪-র বিশ্ব কাপ, ২০১৬-র ইউরো, ২০১৮-র বিশ্ব কাপে গোল করার পর ২০২০-র ইউরোতেও গোল করে ফেললেন। এদিনের গোলটা ছিল দেখার মতো। তখন বিরতির পর সবে খেলা শুরু হয়েছে। একটা ফ্রিক থেকে বল পেয়ে বাঁ প্রান্ত দিয়ে দৌড় শুরু করলেন ক্রামারিক। বক্সের ঠিক সামনে তখন পেরিসিচ। বলটা একেবারে ঠিক মতো পাস করলেন ক্রামারিক। বলটা ধরেই বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের দুরন্ত শটে গোল করলেন পেরিসিচ। ওই গোলটা এদিনের মতো তাঁর দলের হার বাঁচাল।
তবে প্রশংসা করতে হবে চেকদেরও। বিশেষ করে তাদের তরুণ স্ট্রাইকার প্যাট্রিক শিকের। স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে জোড়া গোল ছিল বেয়ার লেভারকুসেনের স্ট্রাইকার শিকের। তার মধ্যে দ্বিতীয়টি মাঝ মাঠ থেকে, গোল লাইন থেকে যার দূরত্ব ৪৯.৭ মিটার। এখন পর্যন্ত এবারের ইউরোর সেরা গোল এটাই। কিন্তু এদিনের গোলটা আরও রোমহর্ষক। বক্সের মধ্যে তাঁর সঙ্গে এঁটে উঠতে না পেরে ক্রোট ডিফেন্ডার ডেভন লোভরেন কনুই চালালেন শিকের মুখে। রেফারি যখন পেনাল্টি দিলেন তখন শিকের নাক ফেটে রক্ত বেরোচ্ছে। ওই অবস্থায় দমে না গিয়ে পেনাল্টি মারলেন শিক এবং গোল করলেন। অসাধরণ, সত্যিই অসাধারণ।
ক্রোয়েশিয়ার মতো টিমকে রুখে দেওয়ার পিছনে চেকদের একটা মন্ত্রই কাজ করল। তা হলে পাল্টা আঘাত। তুমি আলেকজান্দার হতে পার, কিন্তু আমিও পুরু। দুই যুদ্ধবাজের লড়াই এদিন নিষ্ফল হলেও হৃদয় জিতে নিল চেকদের অকুতোভয় ফুটবল। আর ক্রোয়েশিয়া হয়তো প্রথম রাউন্ডের বাধা টপকাবে। কিন্তু তারাপর কত দূর যেতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। আসলে প্রায় একই টিম তাদের। সবারই বয়স বেড়েছে তিন বছর। নতুন কেউ সেভাবে উঠে আসেনি। সেই মদরিচ, পেরিসিচ, কোভাসিচ…। শুধু অভিজ্ঞতা দিয়ে কি সব সময় যুদ্ধ জেতা যায়? দরকার তারুণ্যের। সেটারই বড় অভাব ক্রোয়েশিয়ার। এই যে প্যাট্রিক শিক দুই ম্যাচে তিন গোল করে এখন টপ স্কোরার তার বয়স তো মোটে ২৫।