ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব কর্তারা তো এভাবে ভাবতেই সাহস পাবেন না। এমন কি এ টি কে – মোহনবাগান কর্তারাও ভাবার সাহস দেখাতে পারবেন না। কিন্তু দেশ নয় , বিদেশের মাঠে দলের খেলা দেখতে যাওয়ার “পাকেজ” ফ্রী করে দেওয়ার কথা তিনি ভাবতে পারেন! তিনি – ম্যানচেষ্টার সিটি’ র মালিক। অন্যতম তেল কুবের – শেখ মনসুর। তাঁর দল উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল খেলছে। সেই ফাইনাল দু ‘ দেশ ঘুরে করোনা কম্পনকে পাস কাটিয়ে ইস্তাম্বুল থেকে ইংল্যান্ড হয়ে পর্তুগালের মাটিতে হতে চলেছে। সেই ফাইনাল দেখার জন্য দলের সাপোর্টারদের এমন অফার বিশ্বের কোনো ক্লাব মালিক কখনও দিয়েছেন কিনা জানা নেই।
এতো সেই প্রবাদ : লাগে টাকা, দেবে গৌরী সেন! ম্যানচেস্টার সিটি মালিক শেখ মনসুর এখন আরব দুনিয়ার অন্যতম প্রথম সারির তেল ব্যবসায়ী। আজ তিনিই “গৌরী সেন” হয়ে হাজির!
চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল দেখতে, মাঠে বসে দলকে সাপোর্ট করতে ম্যানচেস্টার সিটির যেসব অফিশিয়াল ( মেম্বারশিপ আছে এমন যাঁরা ) সমর্থক পর্তুগাল যাবেন, তাঁদের সেই খরচ বহন করবেন ক্লাবটির এই মালিক।
২৯ মে পর্তুগালের শহর পোর্তায় এস্তাদিও দ্রাগাও স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে চেলসির মুখোমুখি হবে ম্যানচেস্টার সিটি।
নিজেদের ক্লাব ইতিহাসে এই প্রথমবার ইউরোপ–সেরা ক্লাব হওয়ার দৌড়ে ফাইনালে উঠেছে ম্যানচেস্টারের ক্লাবটি। করোনা মহামারির মধ্যে ফাইনালে ওঠা দুই ক্লাবের ৬ হাজার করে সমর্থককে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসে খেলা দেখার অনুমতি দিয়েছে উয়েফা। অর্থাৎ স্টেডিয়ামে হাজির থাকতে পারবে মোট ১২ হাজার দর্শক – সমর্থক। প্রত্যেককে দূরত্ব বিধি মেনে এবং কভিড বিধি মেনে স্টেডিয়ামে ঢুকে ম্যাচ দেখতে হবে।
সিটি সমর্থকদের ফাইনাল ম্যাচ দেখা প্রসঙ্গে ক্লাবের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এই বিশেষ বিষয়টি। লেখা হয়েছে: “পোর্তোয় চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল দেখতে অফিশিয়াল এই ভ্রমণে ফ্লাইটে আসা যাওয়া এবং অন্যান্য খরচ বহন করবেন শেখ মনসুর” ।
প্রচারমাধ্যমকে শেখ মনসুর বলেন, ” পেপ এবং তার দল অসাধারণ এক মরশুম আমাদের উপহার দিয়েছেন । চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল ক্লাবটির কাছে এক অতি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এই বিশেষ ম্যাচে গ্যালারিতে ক্লাবের সমর্থকদের থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যাঁরা সিটির ভালো ও খারাপ সবসময়ে সমর্থন করে এসেছেন।”
ম্যান সিটির চেয়ারম্যান খালদুন আল মুবারক বলেন, “এমন উদ্যোগে আশা করা যায় সমর্থকরা এই মহামারির মধ্যে যাতায়াত খরচের ভাবনা ভুলে ম্যাচটা নিশ্চিন্তে দেখতে যেতে পারবেন।”
যে খবর মিলছে তাতে স্পষ্ট জানা যাচ্ছে, পর্তুগাল করোনা মহামারি নিয়ে অতি সতর্ক। ম্যানচেস্টার থেকে সিটি সমর্থকদের পর্তুগালে গিয়ে ম্যাচ দেখেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত আসতে হবে।
৬ হাজার সমর্থকদের সবার জন্য একটি করে ‘টুর প্যাকেজ’ ঠিক করেছে সিটি। বিমান টিকিট এবং ভ্রমণের অন্যান্য সব ইস্যু নিয়ে পরে ক্লাবের পক্ষ থেকে আরও অনেক তথ্য জানানো হবে। তবে ফাইনাল দেখতে যাওয়া সমর্থকসংখ্যা ৬ হাজারে বেঁধে দেওয়ার সময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত আসার সময়সীমা বিধিটি জানায়নি উয়েফা।
ইংল্যান্ডের তালিকায় করোনা মহামারিতে পর্তুগাল ‘নিরাপদ’ অবস্থানে থাকায় দেশটি ঘুরে এসে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে কোনো দলের খেলোয়াড় থেকে সমর্থকদের। ম্যানচেস্টার থেকে পোর্তায় বিমানপথে ৬ হাজার সমর্থকের যাওয়া–আসা খরচ বাবদ প্রায় ২৪ কোটি টাকা গুনতে হবে শেখ মনসুরকে।