শনিবারও পরিবর্তিত চুক্তিপত্র পাঠাল না শ্রী সিমেন্ট। তাই কার্যকরী কমিটির সভা ডেকেও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারলেন না ইস্ট বেঙ্গল কর্তারা। পরিবর্তিত চুক্তিপত্র না আসায় সভা শুরুই হয়নি। কেন তারা পরিবর্তিত চুক্তিপত্র পাঠাতে দ্বিধা করছে তার কোনও সন্তোষজনক ব্যাখ্যাও দিতে পারেননি শ্রী সিমেন্ট কর্তারা। অথচ ইস্ট বেঙ্গল কর্তাদের আশা ছিল, শনিবারই পরিবর্তিত চুক্তিপত্র এসে যাবে। এবং কার্যকরী কমিটির সভায় সেটি অনুমোদন করে জানিয়ে দেওয়া হবে শ্রী সিমেন্ট কর্তাদের। এবং ১৬ আগস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবর্তিত খেলা হবে দিবসে দু পক্ষের মধ্যে চুক্তিতে সই সাবুদ পর্ব মিটিয়ে ফেলা হবে, যাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় দল গঠনের কাজ শুরু করা যায়। কিন্তু বিকেল চারটেয় সভা শুরু হয়ে যাওয়ার তিন ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরেও পরিবর্তিত চুক্তিপত্র না আসায় এদিন সভার কাজই শুরু করা হয়নি। তাই বলা যায়, শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে ইস্ট বেঙ্গলের সমস্যা যেন মিটেও মিটছে না।
এখন দেখার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করে সমস্যা মেটান কি না। যদিও ইস্ট বেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলাররা নিজেদের মধ্যে সভা করে চুক্তি সমস্যা মেটাতে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রার্থানা করেছিলেন। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আর্জি জানিয়ে আবেদনও করেছিলেন। কিন্তু নবান্ন থেকে কোনও জবাব আসেনি। এর মধ্যে ইস্ট বেঙ্গল কার্যকরী কমিটিও চুক্তিজট কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু জবাব আসেনি তারও। কিন্তু বসে না থেকে ইস্ট বেঙ্গল তাদের প্রাক্তন সচিব পার্থ সেনগুপ্তের মাধ্যমে চুক্তিজট কাটানোর উদ্যোগ নেয়। দু পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পার্থবাবু চুক্তির মধ্যে থাকা সাতটি বিষয়ে পরিবর্তনও করেন। নীতিগতভাবে দু পক্ষ মেনেও নেয় সেগুলি। এবার ইস্ট বেঙ্গলের অপেক্ষা ছিল পরিবর্তিত চুক্তিপত্র পাঠাবে শ্রী সিমেন্ট। সেই প্রত্যাশায় শুক্রবার কার্যকরী কমিটির সভা ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সেদিনও কিছু আসেনি। শনিবারও সভা ডাকা হয়। কিন্তু এদিনও কিছু এল না। তাই কোনও আলোচনাই হয়নি। সভা শুরুই করাই যায়নি।
এখন দেখার শ্রী সিমেন্টের টালাবাহানায় চুক্তিজট কবে কাটে। তবে একটা জিনিস কিন্তু পরিষ্কার, ইস্ট বেঙ্গলকে অসহায় পেয়ে শ্রী সিমেন্ট কিন্তু শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবকে নিয়ে ছেলেখেলা করছে। তাদের এই দুরভিসন্ধিমূলক অপচেষ্টা কবে শেষ হয় তাই এখন দেখার। আর স্পোর্টিং রাইটস শ্রী সিমেন্টের হাতে থাকায় ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবেরও হাত-পা বাঁধা। তাদেরও তাই কিছু করার নেই। আসলে শ্রী সিমেন্ট চেয়েছিল, তাদের পাঠানো চুক্তিপত্র ইস্ট বেঙ্গল চোখ বুজে সই করে দেবে। কিন্তু যে সব শর্ত রেখেছিল শ্রী সিমেন্ট তাতে সই করা মানে ক্লাব বিক্রি দেওয়ার নামান্তর। লাল হলুদ কর্তারা সেটা বুঝতে পেরে প্রথম থেকেই চুক্তিতে সই করার বিরুদ্ধে। কিন্তু ক্লাবের স্বার্থে তারা অনেক নমনীয় হয়ে প্রাক্তন সচিবকে দিয়ে সাতটি ব্যাপারে পরিবর্তন করিয়েছিলেন। আশা করা হয়েছিল এর পর চুক্তি হতে সমস্যা হবে না। কিন্তু পরিবর্তিত চুক্তি না আসায় সব আশায় জলাঞ্জলি।
এখন কবে এই অন্ধকার কাটবে তাই এখন দেখার।