২৮ সেপ্টেম্বর থেকে দোহায় বসতে চলেছে এশিয়ান টেবল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপ। তারজন্য ভারতীয় দল ঘোষণাও করা হয়ে গেছে। সেই দলে জায়গা হয়নি ভারতের টিটি’র গ্ল্যামার গার্ল মণিকা বাত্রার।
ফেডারেশনের গাইড লাইন মেনে মণিকা ট্রায়ালে অংশই নেননি।নির্বাচকরা তাই তাঁকে দলে রাখেনি। এই ইস্যুতে আদালতে পৌঁছে গেলেন মণিকা।তিনি জাতীয় দলে না থাকার জন্য চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন টিটি ফেডারেশনের এই সিদ্ধান্তকে।আদালত, এই দল নির্বাচন এবং সৌম্যদীপ রায়(Soumyadeep Roy)ইস্যুতে ফেডারেশন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাউন্সেলের কাছে দু’দিনের মধ্যে উত্তর জানতে চেয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে বলা হয়েছে, ফেডারেশনের কাজকর্ম কিভাবে চলে তাও বিস্তারিতভাবে জানাতে।
আরও পড়ুন: তৃতীয় রাউন্ডেই হার, মহিলা সিঙ্গলস থেকে বিদায় মণিকা বাত্রার
এশিয়ান টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপের দল বাছার জন্য ফেডারেশনের যুক্তি ছিল জাতীয় ক্যাম্পে যোগ না দিলে জাতীয় দলে কাউকে নির্বাচন করা হবে না।মণিকা ক্যাম্পে যোগ না দিয়ে, নিজস্ব কোচের তত্বাবধানে পুনেতে অনুশীলন করে গেছেন। এরপর দলে জায়গা না পেয়ে ফেডারেশনের বিরুদ্ধে দিল্লি আদালতে পিটিশন দাখিল করেন মণিকা।আইনজীবী রেখা পল্লীর অধীনে সোমবার এই মামলার প্রথমদিনের শুনানি হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের তরফে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ফেডারেশনের কাছে দু’দিনের মধ্যে উত্তর তলব করা হয়েছে।বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছেন বিচারক রেখা পাল্লি। কোর্টের বক্তব্য, এরকম মারাত্মক অভিযোগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারকেও দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
Olympian Manika Batra’s tussle with TTFI: Delhi HC seeks Centre’s stand#Law #Latest #LatestLaws #LegalNews #India #IndianNews #News #Legal #manikabatra #highcourt https://t.co/se34akT9AD
— LatestLaws.com (@latestlaws) September 21, 2021
মণিকা বাত্রার তরফে কোর্টে সওয়াল করেন সচিন দত্ত। তিনি ফেডারেশনের জাতীয় ক্যাম্পে যোগ না দিলে দলে নির্বাচন না করার ফেডারেশনের যে নিয়ম তাতে, আপাতত স্থগিতাদেশ চান। সেটা হলেই নভেম্বর মাসে আসন্ন টুর্নামেন্টে মণিকা জাতীয় দলে যোগ দিতে পারেন। বাত্রার আইনজীবীর মতে, এই নিয়ম না বদলালে মণিকার মতন প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার নাকি শেষ হয়ে যেতে পারে। মণিকা তাঁর পিটিশনে জানান, জাতীয় দল নির্বাচন নিয়ে অনেক অস্বচ্ছতা রয়েছে।
মণিকার মনের কথা:
টোকিয়ো গেমস থেকেই ভারতের খেলোয়াড় মণিকা বাত্রা এবং জাতীয় কোচ সৌম্যদীপ রায়ের ঝামেলা একেবারে প্রকাশ্যে চলে আসে। দেশে ফিরে তাঁর অভিযোগ ছিল টোকিয়ো গেমসের কোয়ালিফাইং রাউন্ডে তাঁকে একটি ম্যাচ ছাড়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কোচ সৌম্যদীপ। ম্যাচ গড়াপেটার সেই প্রস্তাব কান্ড নিয়ে টেবিল টেনিস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার একটি বৈঠকও ডাকা হয়। পরে ৫ জনকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠিত হয়। উল্লেখ্য মণিকা আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, ১৮/০৩/২০২১ তারিখে ম্যাচের আগের দিন অর্থাৎ ১৭/০৩/২০২১ তারিখে সৌম্যদীপের তরফে এই ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মণিকা কেন তাঁর ব্যক্তিগত কোচ সঞ্জয়কে নিয়ে টোকিয়ো গিয়েছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।৫ সদস্যের কমিটির কাছে নানান তথ্য জমে হয়েছে-যা বাত্রাকে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে।
সৌম্যদীপের বিরুদ্ধে ম্যাচ গড়াপেটার বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছিলেন মনিকা। এরপরও ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে দোহায় অনুষ্ঠিত হওয়া এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের দলে রাখা হয়েছে বাংলার কোচকে। কিন্তু জাতীয় শিবিরে যোগ না দেওয়ায় মণিকাকে দলে রাখা হয়নি। সেইজন্য জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার দাবিতে টেবিল টেনিস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন মণিকা।
কেন এমন বির্তক:
টোকিয়ো অলিম্পিক্সে মণিকা বাত্রা অনেক প্রত্যাশা নিয়ে হাজির হয়েও, হতাশাই শুধু বিলিয়ে ফিরেছিলেন। শুধু তাই নয়, বোর্ডের বাইরে টেনে এনেছেন বিচিত্র এক বিতর্ক। জাতীয় দলের কোচ সৌম্যদীপের বিরুদ্ধে ‘ম্যাচ গড়াপেটার’ অ্ভিযোগ এনে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন।
টোকিয়ো অলিম্পিক্সে সিঙ্গলস ম্যাচে হেড কোচ সৌম্যদীপের থেকে কোনও পরামর্শ নেননি তিনি। পুনা থেকে নিজের ব্যক্তিগত কোচকে নিয়ে যান। তাঁর সঙ্গেই বেশি সময় কাটেন। সেখান থেকেই যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত। সেই বিতর্কের পর জাতীয় শিবিরে যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক করে দিয়েছিল টেনিসের সর্বাধিক নিয়ামক সংস্থা। কিন্তু এরপরেও মণিকা শিবিরে যোগ দেননি। অবশ্য কারণ হিসেবে মণিকা বলেছিলেন পুনেতে ব্যক্তিগত কোচ সন্ময় পরাঞ্জপের তত্ত্বাবধানে অনুশীলন করায় সোনিপথের জাতীয় শিবিরে যোগ দিতে পারেননি তিনি। যদিও তাঁর যুক্তিতে সন্তুষ্ট নয় টেবিল টেনিস ফেডারেশন।
তাই তাঁকে জাতীয় দল থেকে ছেঁটে ফেলেছিলেন কর্তারা। যদিও টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ এই অলিম্পিয়ান। এরই প্রতিবাদে এবার আদালতে মামলা দায়ের করে দিলেন। এবার মণিকার আদালতে যাওয়ার পর এই বিতর্ক কতদূর গড়ায় সেটাই দেখার।
ছবি: সৌ-টুইটার।