সুন্দরবন: সমুদ্রের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত পাথরপ্রতিমার (Pathar Pratima) গোবর্ধনপুর গ্রাম। পূর্ণিমার ভরা কোটালে গত দু’দিন ধরে নোনা জল ঢুকছে গ্রামে। তবে সোমবার ভাঙা বাঁধ দিয়ে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ নোনা জল গ্রামের ভেতরে ঢুকে পড়ে। এই ঘটনার জেরে কয়েকশো বিঘা জমি নোনা জলে প্লাবিত হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই জমিতে আর আমন ধানের চাষ করা যাবে না। বেশ কয়েকটি পরিবার উঁচু জমিতে সবজি চাষ করেছিল, সেই সবজি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও এই গ্রামের সব পুকুরে নোনা জল ঢুকে গিয়ে মাছও মারা গিয়েছে। গ্রামের বহু বাড়ি এখন নোনা জলে জলমগ্ন।
বঙ্গোপসাগরের উপকূলে জি-প্লট পঞ্চায়েতের গোবর্ধনপুর গ্রাম (Gobardhanpur Village)। গোবর্ধনপুরের দক্ষিণ দিকে বঙ্গোপসাগর (Bay of Bengal) রয়েছে। এটাই এ রাজ্যের প্রান্তিক জনপদ। বিগত কয়েক বছর ধরে ভাঙনে জেরবার এই এলাকা। ভাঙন রুখতে গত তিন বছর আগে কংক্রিটের বাঁধ তৈরীর পরিকল্পনা করে রাজ্য সরকারের সেচ দপ্তর। প্রায় ৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। সেই কাজ ধীরগতিতে এগোয়। বাঁধের কাজ শেষ হয় গতবছর। এবার সেই কংক্রিট বাঁধের ১২০০ মিটার ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। সমুদ্র ও লোকালয় মিলেমিশে একাকার। জোয়ারের জল ঢুকছে, বের হচ্ছে। বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি ও পরিকল্পনায় ত্রুটি নিয়ে সরব হয়েছেন এলাকার দুর্গত বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন: ফের সক্রিয় মৌসুমী অক্ষরেখা, রাজ্যজুড়ে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা
স্থানীয়দের অভিযোগ, সমুদ্রের তীরে যে কংক্রিটের বাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছিল, তার সামনে কোনও চর ছিল না। বাঁধের সোজাসুজি গভীরতা ছিল অনেকটাই। সেই কারণে সমুদ্রের ঢেউ এসে সরাসরি বাঁধের উপরে ঝাপটা মারতো। বাঁধের সামনে যদি চর থাকতো তাহলে সমুদ্রের ঢেউ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তো। সমুদ্রের বাঁধের উপর সজোরে আছড়ে পড়তো না।
বর্তমান যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এই গ্রামের সব মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেই জানিয়েছে এলাকাবাসী। সমানে আরও বড় কোটাল আছে। সেই কোটালে আরও বেশি এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় এখন থেকেই ঘুম উড়েছে বাসিন্দাদের। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় নতুন বাঁধ তৈরীর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সৌরভ দাস।
আরও খবর দেখুন