কলকাতা: ত্রিপুরায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় ধিক্কার মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করবে তৃণমূল কংগ্রেস। ত্রিপুরাতেই এই প্রতিবাদ কর্মসূচি সংগঠিত হবে। রবিবার এসএসকেএম হাসপাতালে তৃণমূলের যুবনেতাদের দেখতে এসে এ কথা জানালেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষ।
আরও পড়ুন: অভিষেকের উপর হামলা, কোথায় মানবাধিকার কমিশন? প্রশ্ন কুণালের
সায়নী বলেন, ‘ত্রিপুরার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে ত্রিপুরায় গিয়েই বিক্ষোভ-প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে তৃণমূলের যুবশক্তি। আমাদের কর্মীরা ত্রিপুরাতে যাবেন।’ জয়া দত্ত ও সুদীপ রাহা এখন স্থিতিশীল আছে বলে জানান সায়নী। এ দিন সকালে ঝাড়গ্রাম যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এসএসকেএম-এ যান।
সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী। ত্রিপুরায় দানবীয় শাসন চালাচ্ছে বিজেপি বলে তোপ দেগেছেন তিনি। তাঁর দাবি, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী নন, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে হামলা চালানো হয়েছে তৃণমূলের নেতাদের ওপর। অভিষেকের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মমতা।
আরও পড়ুন: সংসদের অদূরে ‘মুসলিম বিরোধী’ স্লোগান, এফআইআর করেই দায় সারল শাহি-পুলিশ
তাঁর ক্ষোভ, বাচ্চা বাচ্চা ছেলে মেয়েদেরও ছাড়েনি বিজেপি সরকার। তাঁদের মারধর করা হয়েছে। দেবাংশু, জয়া, সুদীপ এরা সকলেই ছাত্র। এই ঘটনার প্রতিবাদে সকল ছাত্র সমাজের গর্জে উঠুক। এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন ওই তিনজন। ১০৩ কেবিনে রয়েছেন সুদীপ রাহা। ২০৩ নম্বর কেবিনে আছেন জয়া দত্ত। সুদীপ রাহার মাথার স্ক্যান করানো হয়েছে।
ত্রিপুরার ধোলাইয়ের আমবাসায় শনিবার আক্রান্ত হন তৃণমূলের সুদীপ রাহা, জয়া দত্ত, দেবাংশু সহ তৃণমূলের নেতারা। খোয়াই থানায় নিয়ে যাওয়া হলে প্রতিবাদে তাঁরা রাতভর বিক্ষোভ দেখান। এরপর রবিবার সকালে তাঁদের বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ত্রিপুরা পৌঁছন ব্রাত্য বসু, কুণাল ঘোষ ও দোলা সেন।
আরও পড়ুন: ত্রিপুরায় হামলা চালানো হয়েছে অমিত শাহের নির্দেশে: মমতা
পরে থানায় হাজির হন অভিষেকও। ধৃতদের মুক্তির দাবিতে প্রায় ৬ ঘণ্টা থানায় ছিলেন অভিষেক। কোন অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে তার নথি থানার অফিসারের কাছে দেখতে চান অভিষেক৷ প্রশ্ন করেন, হামলায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতাদের কেন গ্রেফতার করা হবে না? থানার বাইরে এত লোক কেন? ব্রাত্য বসু, দোলা সেনরাও তর্কাতর্কি শুরু করে দেন৷
রবিবার খোয়াই আদালতে পেশ করা হয় ১১ জনকে৷ কিন্তু মামলা শেষ পর্যন্ত টেকেনি আদালতে৷ ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডের বিনিময়ে দেবাংশু-জয়াদের জামিন মঞ্জুর করে দেন বিচারক৷ তৃণমূল নেতাদের হয়ে সওয়াল করেন ১২ জন আইনজীবী৷ দেবাংশুদের ছাড়াতে কলকাতা থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৮ জন আইনজীবীকে৷
আরও পড়ুন: অভিষেককে মারতে বিমানেও গুন্ডা তুলে দিচ্ছে বিজেপি, বিস্ফোরক মমতা
শুনানি চলাকালীন খোয়াই থানাতেই বসেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, তৃণমূল নেতাদের জামিন না পাওয়া অবধি থানা ছেড়ে কোথাও যাবেন না৷ তবে আদালতে গিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ, ব্রাত্য বসুরা৷ আক্রান্তদের ছাড়িয়ে নিয়ে রবিবার কলকাতা ফেরেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক।