আগরতলা: একরাত পর পুলিশি হেফাজত থেকে মুক্তি পেয়ে আদালতকে ধন্যবাদ জানালেন যুব তৃণমূল নেত্রী সায়নী ঘোষ (Saayoni Ghosh)। সোমবার বিকেলে আগরতলা সিজেএম আদালতে জামিন মঞ্জুর হওয়ার পর সায়নী বলেন, ‘মহামান্য আদালতকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। অবশেষে বিচার পেলাম। এই লড়াইয়ে আমার পাশে থাকার জন্য এবং সাহস জোগানোর জন্য ত্রিপুরা-বাংলার মা-মাটি-মানুষকে ধন্যবাদ।’ রবিবার বিকেলে খুনের চেষ্টার মামলায় (Tripura Violence) আগরতলা পূর্ব মহিলা থানার পুলিশ সায়নী ঘোষকে (Saayoni Ghosh Bail) গ্রেফতার করেছিল। মঙ্গলবার তিনি কলকাতায় ফিরছেন।
আদালতের নির্দেশে মুক্তি পেয়ে যুব তৃণমূল নেত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। একরাত থানায় থেকে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হয়েছে। বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা থানা চত্বরে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল। আমার প্রাণ সংশয় দেখা দেওয়ায় রাতেই অন্য থানায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের উপস্থিতিতে যদি এ ভাবে বিজেপির গুন্ডারা হামলা চালাতে পারে, তা হলে মেয়েদের নিরাপত্তা কোথায়? একরাতের এই অভিজ্ঞতা থেকে আমার মনে হয়েছে, বিজেপি শাসিত রাজ্যে মহিলাদের কোনও নিরাপত্তা নেই।’
শনিবার ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সভাকে কেন্দ্র করেই আগরতলায় রাজনৈতিক উত্তেজনার সূত্রপাত। অভিযোগ, বিপ্লব দেবের সভার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সায়নী ‘খেলা হবে’ স্লোগান দেন। তার প্রেক্ষিতেই থানায় খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগকারীর বক্তব্য, সায়নী ‘উস্কানি’ থেকে অনেকের প্রাণহানি হতে পারত। যদিও এ দিন আদালতে এই অভিযোগ ধোপে টেকেনি। ত্রিপুরা পুলিশ সায়নীকে দু’দিনের জন্য হেফাজতে চেয়ে আবেদন করলেও আদালত তা নাকচ করে দেয়।
আরও পড়ুন: সায়নী ঘোষের জামিন মঞ্জুর, মঙ্গলবার বিকেলে ফিরছেন কলকাতা
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ টুইটে লেখেন, ‘জামিন পেলেন সায়নী ঘোষ। আদালতকে ধন্যবাদ। ভিত্তিহীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার আইনি জবাব।’ বঙ্গ যুব তৃণমূলের সভানেত্রী, অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে গ্রেফতার করতে রবিবার সকালে প্রথমে আগরতলার হোটেলে যায় পুলিশ। প্রথমে এর প্রতিবাদ জানান তৃণমূলের নেতারা। কোনও নোটিস ছাড়া কী ভাবে কোনও একজনকে আটক বা গ্রেফতার করা যায়, সেই প্রশ্ন তোলেন কুণাল ঘোষ, সুবল ভৌমিক সহ তৃণমূলের অন্যান্য নেতারা।
ত্রিপুরার "মুখ্য" মন্ত্রীর সভায় হাতে গুনে ৫০ জন লোক। এর থেকে বেশি আমাদের ক্যান্ডিডেটদের সভায় দেখা যাচ্ছে। ত্রিপুরার মা-মাটি-মানুষের সমর্থনে চোখে চোখ রেখে খেলা হবে ও বিজেপির গুন্ডারাজের অবসান ঘটবে।
পুনশ্চ: গাড়ি কিছুটা আঘাত প্রাপ্ত কিন্তু আমি, @aitcsudip, @ArpitaGhoshMP অক্ষত। pic.twitter.com/3ryJyFfXIf
— Saayoni Ghosh (@sayani06) November 20, 2021
এ দিন আগরতলায় পৌঁছেই সায়নীর গ্রেফতারির নিন্দা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খেলা হবে’ বলা অপরাধ হলে, আগে বিজেপি নেতাদের গ্রেফতার করা উচিত৷ সেই তালিকায় নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহেরাও থাকবেন৷ তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন কম্যান্ডের কথায়, ‘একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় এসে খেলা হবে বলে মানুষকে উস্কানি দিয়েছেন৷ কিন্তু, বাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সৌজন্যতা দেখিয়ে কাউকেই কিছু বলেননি৷ বিপ্লব দেবের উদ্দেশে বলেন, ‘রাজনৈতিক সৌজন্যতা দেখানো যদি দুর্বলতা ভাবেন, তা হলে ভুল হবে৷’
আরও পড়ুন: ‘ত্রিপুরায় হিংসা হবে না’, আশ্বস্ত করলেন অমিত শাহ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় ভরসা নেই তৃণমূলের