ভুবনেশ্বর: মোবাইলের নেটওয়ার্ক ভালো নেই। ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেই কারণে পড়ার জন্য পাহাড়ে উঠেছিল সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া ছাত্র। আর ওই পাহাড়ের উপর থেকে পড়ে গিয়ে প্রাণ হারাতে হল তাকে।
আলোচিত পড়ুয়ার নাম আদিরা জাগারাঙ্গা। পড়শি রাজ্য ওড়িষার রায়গাদা জেলার বাসিন্দা ছিল সে। ওই জেলার দক্ষিণে অবস্থিত পদ্মপুর ব্লকের কাধাপান্ডুরাগুডা গ্রামের স্কুল পড়ুয়াদের সমস্যা নতুন নয়। অত্যন্ত প্রত্যন্ত হওয়ার কারণে যোগাযোগ নিয়ে সমস্যা ছিলই। দূরের স্কুলে পড়তে যেতে হয় তাদের। করোনা আবহে লকডাউন জারি হওয়ার শুরু হয় অনলাইন ক্লাস।
বাড়ি থেকেই হবে লেখাপড়া। স্কুলে যাতায়াত নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। এমনই ভেবেছিল সবাই। কিন্তু সমস্যা শুরু হল ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে। প্রত্যন্ত গ্রামে মোবাইলের নেটওয়ার্কের সমস্যা থাকায় ইন্টারনেট সংযোগ ভালো পাওয়া যায় না। তাই পাহাড়ের চূড়ায় কিংবা জল ট্যাঙ্কের মাথায় উঠতে হয় পড়ুয়াদের। যাতে সুস্থ উপায়ে নির্বিঘ্নে স্কুলের ভার্চুয়াল ক্লাস করা যায়। আর সেটাই কাল হল সপ্তম শ্রেণীর ওই পড়ুয়ার।
আরও পড়ুন- নতুন অ্যাকাউন্টে স্কুলগুলিকে টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের
ভুবনেশ্বরের একটি স্কুলের পড়ুয়া ছিল আদিরা জাগারাঙ্গা। চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার পাহাড় থেকে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। আদিরার সঙ্গে আরও চার ছাত্র অনলাইন ক্লাস করার জন্য ওই পাহাড়ের উপরে উঠেছিল। তাদের ব্যান অনুসারে, একটা ভাঙা পাথরের উপরে বসেছিল আদিরা। মোবাইল আহতে নিয়ে অন্য একটি পাথরের সঙ্গে হেলান দিয়েছিল সে। সেই পাথরটিও আলগা থাকায় আচমকা গড়িয়ে যায়। তখনই পাহাড় থেকে পড়ে যায় আদিরা। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পদ্মপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। যদিও শেষরক্ষা হয়নি।
সমগ্র রায়গাদা জেলা জুড়ে মাওবাদীদের উৎপাত রয়েছে। জঙ্গল ঘেরা এলাকায় মোবাইলের নেটওয়ার্কের সমস্যাও পুরনো। যা নিয়ে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েও কাজ হয়নি। পালটা সরকারের সাফাই এলাকাবাসীর দাবি পূরণে কাজ হচ্ছে। যা দাবি করা হয়েছিল তার অর্ধেকের বেশি মোবাইল টাওয়ার বসানো হয়েছে। বাকিগুলি বসানোর কাজ চলছে।
আরও পড়ুন- ফুসফুস প্রতিস্থাপন ছাড়াই ১০৯ দিন ইসিএমও-ভেন্টিলেটর সাপোর্টে সুস্থ রোগী
সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন পদ্মপুর থানার সাব-ইনস্পেক্টর হীরেন ভাতি। তিনি ওই ঘটনার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন। তাঁর কথায়, “গ্রামটি রায়গাদা জেলা সদর দফতর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে। তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশকেও নেটওয়ার্কের সমস্যার শিকার হতে হয়েছিল। যেখানে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে সেই জায়গাটি আদিরার গ্রাম থেকে ৪০০ মিটার দূরে।”