Placeholder canvas
কলকাতা রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ |
K:T:V Clock
লস্করের নতুন চাল
শুভেন্দু ঘোষ Published By:  • | Edited By: সাহাজান পুরকাইত
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২১, ০৬:০৩:২৮ পিএম
  • / ৩৩৯ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By: সাহাজান পুরকাইত

অবশেষে মহিষের আড়াল থেকে অসুর বেরিয়েই এল। ভূস্বর্গে হিন্দিভাষী, পক্ষান্তরে বিহারি খুনের দায় স্বীকার করল লস্কর। এতকাল জুম্মায় মসজিদে হামলা, এলোপাথাড়ি গুলি নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে— এসবই করত জঙ্গিরা। কিন্তু এবার তাদের নিশানা অ-কাশ্মীরি মানুষ। হঠাৎ তাদের এই মতিবদল কেন? যারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে একাধিক হামলা, বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, আজ তারাই নিতান্ত গরিবগুর্বো খেটেখাওয়া বিহারিদের তাক করল। এর পিছনে গভীর রহস্য রয়েছে, অবশ্যই সুস্থির, পরিকল্পিত উদ্দেশ্যও রয়েছে।

প্রথমত, জঙ্গিরা চাইছে, কাশ্মীরি যুবকদের মধ্যে উগ্র জাত্যভিমান গড়ে তুলতে। দ্বিতীয়ত, কর্মহীন, বেকার স্থানীয় যুবকদের মনে ভিনরাজ্যের করে খাওয়া মানুষের প্রতি তীব্র বিদ্বেষবিষ ঘুলিয়ে দিতে। তৃতীয়ত, কাশ্মীরে ছোটখাট ব্যবসা বা কাজ করে দিন গুজরান করা মানুষগুলোকে ভয় দেখিয়ে এলাকাছাড়া করা। কারণ, জঙ্গিরা সন্দেহ করে তারা সকলেই হিন্দুত্বের দালাল এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির টিকটিকি। চতুর্থত, বিহারি বা ভিনরাজ্যের অধিবাসীদের আয় করা অর্থের অধিকাংশটাই চলে যায় তাঁদের দেশোয়ালি পরিবারের হাতে। অর্থাৎ, কাশ্মীরিদের পকেটের টাকা স্থানান্তরিত হয় বিহার, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, গুজরাত সহ দক্ষিণ ভারতেও। এছাড়াও রাজ্যে উত্তরোত্তর অ-কাশ্মীরি জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় যুবকরা। সর্বোপরি, হিন্দিভাষীদের মধ্যে ধর্মগত ও ভারতবোধের কারণে জঙ্গিদের দাবিদাওয়া সম্পর্কে মমত্ব দেখানো অসম্ভব। সেটাও তাদের চক্ষুশূল হওয়ার কারণ। আর সে কারণেই মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, গুজরাত, অসম, মণিপুরের মতো বিহারি খেদাও বা বিহারি-মেধ শুরু হল বলা যায়। যার ফলস্বরূপ কাশ্মীর ছেড়ে এখনই দলে দলে পালাচ্ছেন ভিনরাজ্যের বাসিন্দারা। অর্থাৎ, নিছক রক্ত-ঝিলম বইয়ে সাধারণ মানুষের অভিশাপ কুড়োতে চায় না জঙ্গিরা। এবার কাশ্মীরি যুবকদের মনের আরও গভীরে ঢুকে তাদের আর্থিক স্বাধীনতা, বিশেষত রাজ্যের অর্থনৈতিক পূর্ণ স্বরাজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে ব্যগ্র লস্কর। বলা বাহুল্য, সেটা সত্যি হলে আগের থেকে আগুনের শিখা তীব্রতর হবে। তবে এই চক্রান্তের নেপথ্য মস্তিষ্ক পাকিস্তান না চীন, তার তদন্তের দায়িত্ব দেশের গোয়েন্দা বিভাগের জন্য তোলা থাক।

বিহার থেকে ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের স্রোত বইতে থাকে মূলত ব্রিটিশ আমল থেকে। রেল নির্মাণ, পাথর ভাঙা শ্রমিক, কুলি, মুটে ও বন্দরের মজুর হিসেবে সস্তায় মুনিষ পাওয়া যেত বিহার থেকেই। সেই বহতা ধারা কোনওদিন থামেনি। তবে বিষয়টি জাত্যভিমান ও রাজনৈতিক রূপ পায় অনেক পরে। ১৯৮০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিহারের অর্থনীতি ছিল একেবারেই পঙ্গু। তার শাগরেদ ছিল চরম প্রশাসনিক দুর্নীতি, ‘বিহারের দুঃখ’ কোশী নদীতে ফি বছর বন্যা। যার ফলস্বরূপ গোটা রাজ্য এক নৈরাজ্যে পরিণত হয়। একের পর এক সরকারি কর্মী, পদাধিকারীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, মধ্যবিত্ত ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভয়ভীতি গড়ে তোলে। তাঁরা গাঁও ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে শুরু করেন। আর গরিবগুর্বো বিহারিরা সামান্য মজুরিতে ভিনরাজ্যে কাজের খোঁজে পাড়ি দেন।

আরও পড়ুন-বিয়েতে পণ নিয়েছেন? সরকারি কর্মীদের কাছে লিখিত উত্তর চাইল যোগী সরকার

বিহারি খেদাও প্রথম শুরু হয় অসমের জঙ্গি গোষ্ঠী উলফার নেতৃত্বে। ২০০০ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে প্রায় ২০০ হিন্দিভাষীকে খুন করা হয়। ২০০৮ সালের অক্টোবরে একটি রেলের পরীক্ষা দিতে আসা উত্তর ভারতের পরীক্ষার্থীদের উপর হামলা হয় মুম্বইয়ে। মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার রাজ থ্যাকারের নেতৃত্বে এটা ঘটে। এক বিহারি ছাত্রের মৃত্যু হয়। কল্যাণের এক গ্রামে একই ধরনের হামলায় ৪ জনকে খুন করা হয়। ২০১৬ সালের মে মাসে রাজস্থানের কোটায় এক ছাত্রকে পিটিয়ে খুন করা হয়। শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’য় প্রয়াত বাল থ্যাকারে বিদ্বেষমূলক নিবন্ধে লিখেছিলেন, ‘এক বিহারি শ’ বিমারি, দো বিহারি লড়াই কি তৈয়ারি, তিন বিহারি ট্রেন হামারি, পাঁচ বিহারি তো সরকার হামারি।’

আরও পড়ুন-পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ বাংলাদেশ-মায়ানমারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কেএলও জঙ্গির

ফলে দেখা যাচ্ছে, লস্কররা যে পদক্ষেপ করছে, তা নতুন কিছু নয়। কারণ, অতীতের ঘটনাগুলোয় প্রচুর রাজনীতি, বিদগ্ধ সমালোচনা, বনধ, ট্রেনে আগুন, পালটা খুন হলেও অসম থেকে দলে দলে বাঙালি ও বিহারি, অন্য রাজ্য থেকেও হিন্দিভাষীরা পাততাড়ি গুটিয়ে পালাতে বাধ্য হয়। সুতরাং, বোঝাই যাচ্ছে যে, লস্কর জঙ্গিদের এবারের আঘাতটা শরীরে নয়। কাশ্মীরের জনতার মনে নাড়া দিতে চলেছে। খুনের রাজনীতি করে এতদিন ঘৃণা কুড়োচ্ছিল জঙ্গিরা, এবার আর্থিক স্বাধিকারের টোপ ছড়িয়ে কাশ্মীরি জনতার মনে বিপজ্জনক বিষ মেশানোর খেলায় নেমেছে।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২
১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯
২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬
২৭ ২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

স্বপ্ন পূরণের তালিকা নাম লেখালেন বাংলার অর্চিষ্মান
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
২১ জুলাই ইডেনে কেকেআর এর ম্যাচ, কতক্ষণ চলবে মেট্রো?
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
‘সবার উপরে সংবিধান’, ধনখড়ের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
মুর্শিদাবাদে কত বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত? দ্রুত সমীক্ষার কাজ শেষ করার নির্দেশ মুখ্য সচিবের
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
বেআইনি বালি খাদান, জলা জমি ভরাট নিয়ে কড়া অবস্থান নবান্নর
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
বর্ষার আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে, উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে জানাল নবান্ন
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
বিবাদ ভুলে ২০ বছর পর হাত মেলাচ্ছেন উদ্ধব এবং রাজ ঠাকরে?
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
রবিবার বিগ্রেড, শহরের নিরাপত্তায় মোতায়েন প্রায় ২৫০০ পুলিশ
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
দিল্লির মুস্তাফাবাদে বাড়ি ধসে মৃতের সংখ্যা ১১, তালিকায় রয়েছেন ভবনের মালিক
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
অনলাইনে প্রতারণার ফাঁদ! সতর্ক করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
লাগাতার অভিযানে কোণঠাসা মাওবাদীরা! এল যুদ্ধবিরতির অনুরোধ
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
কেন্দ্রের প্রশাসনিক পদে একাধিক রদবদল, নয়া রাজস্ব সচিব অরবিন্দ শ্রীবাস্তব
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
এবার লেডিস স্পেশালে উঠতে পারবেন পুরুষরাও
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
প্রাক্তন গুরুর প্রত্যাবর্তন, এবার কি জয়ে ফিরবে KKR?
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
২১ এপ্রিল নবান্ন অভিযান স্থগিত চাকরিহারা ঐক্যমঞ্চের
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.
Developed By KolkataTV Team