মুম্বই: কৃষকদের খালিস্তানি জঙ্গির সঙ্গে তুলনা করে বিপাকে কঙ্গনা রানাউত (Kangana Ranaut)। বলি-অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল মুম্বই পুলিশ। সূত্রের খবর, তাঁর বিরুদ্ধে ২৯৫এ ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। দিন কয়েক আগে ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে কঙ্গনা রানাউত (Kangana Ranaut FIR) কৃষক আন্দোলনকারীদের (Farm Laws) সঙ্গে খালিস্তানি জঙ্গিদের তুলনা করেন। নাম না করে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য করেন অভিনেত্রী।
মুম্বই পুলিশ সূত্রে খবর, সোশ্যাল মিডিয়ায় শিখ সম্প্রদায়ের মানুষদের সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগে মঙ্গলবার কঙ্গলা রানাউতের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। মুম্বইয়ের ব্যবসায়ী অমরজিৎ সিং সান্ধু, দিল্লি শিখ গুরুদ্বার কমিটি এবং অকালি দলের অভিযোগের ভিত্তিতেই এফআইআর দায়ের হয়েছে। কৃষি আইন প্রত্যাহারের পর থেকেই আন্দোলনকারীদের সম্পর্কে কঙ্গনার একাধিক মন্তব্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে অভিনেত্রী লেখেন, ‘খালিস্তানি জঙ্গিরা আবারও সরকারের বিরুদ্ধে মাথাচাড়া দিচ্ছে…কিন্তু একজন মহিলাকে ভুললে চলবে না…দেশের একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী নিজের জুতোর তলায় বিচ্ছিন্নতাবাদী খালিস্তানপন্থীদের পিষে দিয়েছিলেন।’ এই স্টোরিতে আন্দোলনকারী কৃষকদের যেমন তুলোধনা করা হয়েছে, ঠিক তেমনই ইন্দিরার পদক্ষেপের প্রশংসা করলেও তাঁকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি কঙ্গনা।
আরও পড়ুন: কৃষকরা খালিস্তানি! ইন্দিরা পিষে মেরেছিলেন জঙ্গিদের, লিখলেন কঙ্গনা
অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘ওঁনার (ইন্দিরার) এই পদক্ষেপের জন্য দেশকে কতখানি অসুবিধায়ও পড়তে হয়েছে তা প্রাসঙ্গিক নয়। নিজের জীবনের বিনিময়ে খালিস্তানিদের মশার মতো মেরেছিলেন উনি… দেশকে কোনওভাবেই ভাঙতে দেননি।’ কঙ্গনা রানাউতের এই মন্তব্য নিয়েই যাবতীয় বিতর্কের সূত্রপাত।
কঙ্গনার বক্তব্যে পরিষ্কার, মোদিকে গণতন্ত্রপ্রিয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন তিনি। অভিনেত্রীর মতে, কৃষকদের টানা আন্দোলন সত্ত্বেও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলেননি প্রধানমন্ত্রী। বরং শান্তি বজায় রাখতে তিনটি কৃষি আইন বাতিল করার কথা ঘোষণা করেছেন। এই আইন চালু থাকলে হয়তো কৃষকদের ভালো হত, কিন্তু মোদি সবার মতকে প্রাধান্য দেন বলেই তিনি আইন প্রত্যাহার করলেন, কঙ্গনার বক্তব্যে এই বিষয়টিই ফুটে উঠেছে।
আরও পড়ুন: ‘এক্কেবারে অনুচিত’, মোদির কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণায় ফোঁস করে উঠলেন কঙ্গনা
আটের দশকে পঞ্জাবে বিচ্ছিন্নতাবাদী খালিস্তানপন্থীদের আন্দোলন মাথাচাড়া দেয়। তরুণ প্রজন্ম আলাদা রাষ্ট্রের দাবিতে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। নেতা ছিলেন ভিন্দ্রানওয়ালে। পঞ্জাবে তখন প্রতিদিন হিংসা। ইন্দিরা আইপিএস অফিসার কে পি এস গিল-কে সেখানে পাঠান। এর পর শুরু হয় অপারেশন ব্লু-স্টার। অমৃতসরের স্বর্ণ-মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছিল সন্ত্রাসবাদীরা।
সেনা অভিযানে সবাইকে শেষ করা হয়। মারা যান ভিন্দ্রানওয়ালে। বদলা আসে ইন্দিরার দেহরক্ষীদের কাছ থেকে। সন্তবন্ত সিং, বিয়ন্ত সিং নামে দুই দেহরক্ষীর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা। এর পর দিল্লি সহ গোটা দেশ জুড়ে শুরু হয় শিখ নিধন।
আরও পড়ুন: জেহাদি-মন্তব্যের জের, কঙ্গনার বিরুদ্ধে থানায় কংগ্রেস