কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: আবার আতঙ্কের প্রহর। আবার মৃত্যুভয়ে ভিটেছাড়া। জঙ্গি-গুলিতে প্রাণ হারানোর চেয়ে রুটিরুজি, জমিঘর, চাকরি-ব্যবসা ছেড়ে অজ্ঞাত নির্বাসনে পাড়ি দিচ্ছেন কাশ্মীরি পণ্ডিত ও হিন্দুরা। সেই নয়ের দশকের দুঃসহ স্মৃতি যেন নতুন করে ফিরে এসেছে ভূস্বর্গে।
কেন ঘর ছেড়ে পালাচ্ছেন কাশ্মীরি পণ্ডিত ও হিন্দুরা?
রোজগারের আশায় বহু মানুষ বছরের পর বছর ধরে রয়ে গিয়েছেন শ্রীনগর ও কাশ্মীর উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু, সেসব ছেড়ে জঙ্গি-আতঙ্কে লোটাকম্বল নিয়ে পালাতে হচ্ছেন তাঁরা। জঙ্গিরা ইদানীং বেছে বেছে ভিনরাজ্যের হিন্দু ও পণ্ডিতদের সহজ নিশানা করে নিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালেই কুলগাঁওয়ের একটি গ্রামীণ ব্যাঙ্কে ঢুকে ম্যানেজারকে গুলি করে খুন করে। বিজয় কুমার নামে ওই ম্যানেজার রাজস্থানের হনুমানগড়ের বাসিন্দা। চাকরিসূত্রে এখানে থাকতেন। এদিন ব্যাঙ্ক খোলার পর এক জঙ্গি ভিতরে ঢুকে তাঁকে খুব কাছ থেকে গুলি করে মারে।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: অভিষেক-রুজিরাকে দুবাই যাওয়ার অনুমতি হাইকোর্টের, ইডির কাছে দিতে হবে ঠিকানা
এর দু’দিন আগেই কুলগাঁওয়ে এক শিক্ষিকা রজনী ভাল্লাকে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। এভাবে একের পর এক খুনের জন্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পণ্ডিত সম্প্রদায় ও কাশ্মীরে বসবাসকারী হিন্দুরা। সে কারণে দলে দলে কাশ্মীর ছেড়ে পালিয়ে যেতে শুরু করেছেন তাঁরা। বিজয় কুমারের মৃত্যু নিয়ে একমাসের মধ্যে ৮ জন খুন হয়েছেন জঙ্গিদের গুলিতে। তাই বাইরে থেকে আসা চাকরিজীবী কাশ্মীরি পণ্ডিতরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁরা ভূস্বর্গ ছেড়ে চলে যাবেন।
চাকরিজীবীরা আপাতত বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে রয়েছেন। সেখানে বিপুল নিরাপত্তায় ঘিরে রাখা হয়েছে তাঁদের। হত্যালীলা নিয়ে তাঁরা বেশ কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ দেখালেও প্রতিবাদ তুলে নিয়ে জম্মু ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিক্ষোভরত চাকরিজীবীদের নেতা অমিত রায়না জানান, এখানে আর থাকার কোনও অর্থ হয় না। এখানে থাকলে জঙ্গিরা যে কোনওদিন গুলি করে মারবে। সুতরাং, এখান থেকে চলে যাওয়া ছাড়া আমাদের কাছে আর কোনও বিকল্প নেই।
অবতার কৃষণ ভাট নামে একজন জানালেন, আমরা ট্রাক তৈরি রেখেছি। যে কোনও সময় বেরিয়ে পড়তে পারি। চারদিকে হিন্দু সংখ্যালঘুরা ভয়ের আবহে বাস করছেন। বারামুল্লার প্রায় ৫০ শতাংশ হিন্দু চাকরিজীবী ভিটে ছেড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কাশ্মীর পুলিস-প্রশাসন ইন্দ্রনগরসহ বিভিন্ন এলাকা সিল করে রেখেছে, যাতে পণ্ডিতরা ঘর ছাড়তে না পারে।