নয়াদিল্লি: ১১ সেপ্টেম্বর ২০০১৷ সংক্ষেপে ৯/১১৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এক অন্ধকার দিন৷ আমেরিকার টুইন টাওয়ারে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন দুই হাজারের বেশি মার্কিন নাগরিক৷ আবার ওই দিনেই আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে বিশ্বকে শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ (Swami Vivekananda)৷ তবে সালটা ছিল ১৮৯৩৷ সেই কথা স্মরণ করিয়ে আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে জঙ্গি হামলার ২০ তম বর্ষপূর্তিতে শান্তির বার্তা দিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ (President Ram Nath Kovind)৷ বলেন, ‘বিবেকানন্দের শান্তির বার্তা বিশ্ব গ্রহণ করলে ৯/১১-র মত জঙ্গি হামলা এড়ানো যেত৷’
উত্তরপ্রদেশ জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে শনিবার এলাহাবাদ যান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ৷ সেখানেই তিনি শিকাগো সম্মেলনে (Chicago Conference) স্বামীজির ভাষণের নির্যাস তুলে ধরেন৷ রামনাথ কোবিন্দ বলেন, ‘১২৮ বছর আগে আজকের দিনে স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগো সম্মেলনে ভারতীয় দর্শন এবং ধর্মের কথা তুলে ধরেছিলেন৷ গোটা বিশ্ব জেনেছিল ন্যায়বিচার, সহানুভূতি এবং সহযোগিতা হল ভারতীয় সংস্কৃতির ভিত্তি৷ বিবেকানন্দের বার্তা গ্রহণ করলে গোটা বিশ্বকে ৯/১১-র মত জঙ্গি হামলার সাক্ষী হতে হত না৷ ওই হামলা ছিল মানবতার উপর আঘাত৷’
আরও পড়ুন: চার-চারটে বিমান ছিনতাই, ১৯ জঙ্গির টার্গেট আমেরিকার টুইন টাওয়ার-পেন্টাগন
দেশের আইনি ক্ষেত্রে কম সংখ্যক মহিলাদের উপস্থিতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি৷ তাঁর আশা, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির পর আইনি পেশায় মহিলাদের যোগদান আরও বাড়বে৷ আইন পড়া নিয়ে ছাত্রীদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হবে৷ রামনাথ কোবিন্দের কথায়, আইন এবং ন্যায়বিচার নিয়ে মহিলারা বেশি উন্মুখ৷ তারা সকলের ন্যায়বিচার নিয়ে কথা বলে৷ সবাই ন্যায় পাক এটা তারা চায়৷ এটা মহিলাদের প্রকৃতি৷ বিচারব্যবস্থা-সহ অন্যান্য পেশাতে মহিলাদের যোগদান বাড়লে সমাজে আরও ন্যায় প্রতিষ্ঠা হবে৷ রাষ্ট্রপতি ছাড়া এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা, আইনমন্ত্রী কিরণ রিজিজু, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, রাজ্যপাল আনন্দীবেন পটেল এবং এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতিরা৷
এলাহাবাদে নতুন আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তরে রাষ্ট্রপতি৷ ছবি-সৌজন্যে টুইটার৷
আরও পড়ুন: কারনালে বিচারবিভাগীয় তদন্ত, অভিযুক্ত আধিকারিক ‘ছুটিতে’, আন্দোলন প্রত্যাহার কৃষকদের
দেশের নিম্ন আদালতগুলিতে পরিকাঠামো উন্নয়নে আরও জোর দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি৷ তাঁর কথায়, এখনও দেশের বহু আদালতে ঠিকমত পরিষেবা পাওয়া যায় না৷ অনেক আদালতে কাজ করার মত পরিবেশটুকুও নেই৷ তার প্রভাব বিচারপতি থেকে শুরু করে আইনজীবীদের মধ্যেও পড়ে৷ ব্রিটিশরা এখান থেকে চলে যাওয়ার পর দেশের বিচারব্যবস্থা চরম অবহেলিত হয়েছে বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি৷ অপরদিকে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে কেন্দ্র খুব তাড়াতাড়ি যুগান্তকারী মেডিয়েশন ল বিল আনতে চলেছে বলে জানান আইনমন্ত্রী কিরণ রিজুজু৷ তিনি বলেন,‘আমরা চাই ভারত আন্তর্জাতিক সালিশি হাব হিসেবে পরিচিতি গড়ে তুলুক৷ সেই জন্য আগামী শীতকালীন অধিবেশনে সরকার মেডিয়েশন ল বিল আনতে চলেছে৷’