নয়াদিল্লি: হরিয়ানার কৃষক বিক্ষোভে লাঠি চার্জের বিরুদ্ধে মানবধিকার কমিশনে অভিযোগ জানাবে কংগ্রেস। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা, দীপেন্দর হুডা-সহ একদল কংগ্রেস নেতারা স্মারকলিপি জমা দেবেন। কৃষকদের নির্মম ভাবে পেটানোর অভিযোগ তোলা হবে। সেই পুলিশি আক্রমণ ও কৃষকদের মাথায় আঘাত করার নির্দেশ ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ঘুরছে৷ বহু মানুষ সমালোচনা করেছে৷
A Congress delegation of senior leaders including former Haryana CM Bhupinder Singh Hooda, Deepender Hooda, Kumari Selja will go National Human Rights Commission (NHRC) tomorrow against the lathi charge on farmers in Karnal, Haryana.
— ANI (@ANI) August 30, 2021
কৃষক আন্দোলন ভন্ডুল করতে পুলিশকে কৃষকদের মাথায় আঘাত করার নির্দেশ দিচ্ছেন মহকুমা শাসক৷ শনিবার হারিয়ানার কার্নাল জেলার ঘটনা৷ সেই নির্দেশের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে৷ যা কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচিত হয়েছেন কার্নালের মহকুমা শাসক আয়ুশ সিনহা৷
আরও পড়ুন- বুদ্ধদেব গুহ বিজেপির ম্যানিফেস্টো লিখেছেন, তথাগত রায়ের টুইটে শোরগোল
এই সমালোচনা শুধু বিজেপি বিরোধী মানসিকতার লোকজনই করছে এমনটা নয়৷ বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধিও সেই ভিডিও টুইটারে পোস্ট করেছেন৷ একই সঙ্গে তিনি লিখেছেন, আশা এই ভিডিওটি এডিট করা৷ আর তা যদি না হয়ে থাকে তাহলে আমাদের গণতান্ত্রিক দেশে সাধারণ নাগরিক সঙ্গে এমন আচারণ মেনে নেওয়া যায় না৷
I hope this video is edited and the DM did not say this… Otherwise, this is unacceptable in democratic India to do to our own citizens. pic.twitter.com/rWRFSD2FRH
— Varun Gandhi (@varungandhi80) August 28, 2021
আরও পড়ুন- বাংলার বিজেপি থেকে আরও অনেকেই যোগাযোগ করছেন, ত্রিপুরার বিধায়করাও: ব্রাত্য
শনিবার হরিয়ানায় কৃষক আন্দোলন ভন্ডুল করতে কার্নালের মহকুমা শাসক পুলিশকে লাঠি চার্জের নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ নির্দেশে পরে পুলিশের থেকে ‘লাথ মারোগে না’ বলে উত্তর জানতেও চেয়ে ছিলেন৷ সেই নির্দেশ পেয়ে পুলিশ বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী কৃষকদের উপর নির্বিচারে লাঠি চার্জ করে৷ বহু কৃষক জখম হয়৷ পরে জানা যায়, পুলিশের লাঠি চার্জে ১০ জন কৃষক গুরুতর জখম হয়েছেন৷ কৃষকদের অপরাধ ছিল যে, মুখ্যমন্ত্রী মনোহার লাল খাট্টার , রাজ্য বিজেপি প্রধান ওম প্রকাশ ধনকড়-সহ অন্যান্য বিজেপি নেতাদের উপস্থিতিতে অবরোধ করেছিল৷
আরও পড়ুন- জোর করে বাংলা দখলের চেষ্টা করেছিল বিজেপি, তৃণমূলে যোগ দিয়ে বললেন বিষ্ণুপুরের বিধায়ক
ভাইরাল হওয়া ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে, কার্নালের মহকুমা শাসক আয়ুশ সিনহা একদল পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন৷ পুলিশরা কী করবে তা নির্দেশ দিচ্ছেন৷ যাতে কোনও ভাবেই কৃষকরা ব্যারিকেডের ওপাশে যেতে না পারেন৷
আরও পড়ুন- আসছে ‘কোটা ফ্যাক্টরি ২’ , প্রকাশ্যে এল টিজার
আয়ুশ সিনহা পুলিশদের বলছেন, ‘এটা খুব সহজ সরল ব্যাপার যে কেউই হোক না কেন, তারা কেউই যেন ওখানে পৌঁছতে না পারে৷ যে কোনও মূল্যে কেউই যেন ওখানে যেতে না পারে৷ শুধু আপানারা লাঠি তুলবেন আর পেটাবেন……এটা খুবই পরিষ্কার, এর বাইরে আর কোনও নির্দেশের প্রয়োজন নেই৷ তাদের শুধু কঠোরভাবে আঘাত কর। আমি যদি একজনও বিক্ষোভকারীকেও দেখি, সঙ্গে সঙ্গে আমি দেখতে চাই মাথা-হাত পা গুড়িয়ে গিয়েছে৷’ এখানেই ভিডিও-টি শেষ হয়নি৷ মহকুমা শাসককে আরও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আর কোনও সন্দেহ আছে? প্রত্তুত্যরে পুলিশ দল উত্তর দেয়, না স্যার৷’
আরও পড়ুন- বাঁধের কাজ না করেই লোপাট লক্ষ লক্ষ টাকা, কাঠগড়ায় বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য
বরুণ গান্ধি ছাড়াও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা৷ তিনি টুইট করে লিখেছেন, খাট্টার সাহেব আপনি আজকে হরিয়ানাবাসীর হৃদয়ে লাঠির বন্যা বইয়েছেন৷ আগামী প্রজন্ম কৃষকদের এই রক্ত ঝরার কথা মনে রাখবে৷ “
স্বারজ ইন্ডিয়ার প্রধান ও কৃষক নেতা যোগেন্দ্র যাদব বলেছেন, হরিয়ানা পুলিশের আসল চেহারা বেরিয়ে এসেছে৷ কৃষকরা ওখানে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দলের নেতাদের উপস্থিতির বিরোধিতা করছিলেন৷ এটাই হরিয়ানা পুলিশের আসল চেহারা৷”
আরও পড়ুন- চিটফান্ড কাণ্ডে অভিযুক্ত হিমন্তকে ‘সারদা’ খোঁচা তৃণমূলের
শনিবার সকালে কার্নাল জেলার গুরুদ্বরা সাহিব অঞ্চলে জমাতের কথা ছিল প্রতিবাদী কৃষকদের৷ কিন্তু, কার্নালের জেলা শাসকের নির্দেশে পুলিশের লাঠিচার্জে তা সম্ভব হয়নি৷ কারণ, স্থানীয় কার্নাল জেলার শাসকের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, আমরা দু’দিন ধরে এখানে আছি৷ ঘুমায়নি৷ যে কোনও ভাবেই জমায়েত বন্ধ করতে হবে৷ এটা ওপেন ওর্ডার৷ মারোগে না লাথ!’ এরপরই পুলিশি তাণ্ডব শুরু হয়৷