কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: মানুষ সাধারণত দেহের কোনও ক্ষতস্থান পরিষ্কার করে তা জীবাণুমুক্ত করে। তারপর সেই ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ বেঁধে দেয়। পরে প্রয়োজন হলে ডাক্তারের কাছে যায়। কিন্তু শিম্পাঞ্জিরা (Chimpanzee) কী করে? তারাও কি চিকিৎসার জন্য ওষুধ ব্যবহার করে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, শিম্পাঞ্জিরা দেহের কোনও ক্ষতস্থানে কোনও জীবন্ত পতঙ্গ (Chimpanzee Use Crushed Insects) ঢুকিয়ে দেয়। তাতে ক্ষত সেরে যায়।
এমনটাই বলা হয়েছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০১৯ সালে এ ব্যাপারে গবেষণা শুরু হয়েছিল। সোমবার কারেন্ট বায়োলজি পত্রিকায় ওই গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়। জার্মানির অসনাব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সাইমন পিকো গবেষণাটি করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার গিবন প্রজাতির শিম্পাঞ্জিদের উপর তিনি সমীক্ষা চালান। ২০১৯ সালে তিনি লক্ষ্য করেন, সুজি নামে এক মহিলা শিম্পাঞ্জি অনেকক্ষণ ধরে তার ছেলের পায়ের একটি ক্ষতস্থান দেখছিল। কী করবে সে ভেবে পাচ্ছিল না। আচমকাই সেখান দিয়ে একটি বড়সড় পতঙ্গ উড়ে যাচ্ছিল। সুজি সেটিকে খপ করে ধরে মুখে পুড়ে দেয়। তারপর সেটিকে বার করে তা ছেলের ক্ষতস্থানে চেপে ধরে বেশ খানিকটা সময় নিয়ে। তারপর দেখা যায়, ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছে। এই রকম দুবার সে পতঙ্গ ধরে একইভাবে ছেলের ক্ষতস্থানে চেপে ধরে।
আরও পড়ুন: Lata Mangeshkar: লতা মঙ্গেশকরের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিশেষ ডাকটিকিট কেন্দ্রের
গ্যাবন আটলান্টিক উপকূলে লোয়াঙ্গা ন্যাশনাল পার্কে পরবর্তীকালে গবেষকরা ৪৫ টি শিম্পাঞ্জির উপর সমীক্ষা চালান। দেখা গিয়েছে, তারা প্রায় সকলেই নিজের বা অন্যদের ক্ষতস্থানে এভাবে পতঙ্গ খেয়ে তা বার করে লাগিয়ে দিচ্ছে। তাতে ক্ষত শুকিয়েও যাচ্ছে।
এই বিচিত্র অভিজ্ঞতাই স্থান পেয়েছে গবেষণা পত্রে। পিকা বলেন, পতঙ্গের শরীরে অনেক নাম না জানা উপাদান থাকে। তা আমরা অনেকেই জানি না। সেগুলি অ্যান্টিবায়োটিক (antibiotic) হিসেবে কাজে লাগতে পারে ভবিষ্যতে। এই গবেষণা এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে চিকিৎসা ক্ষেত্রে।