গুয়াহাটি: ভারতে পাচার হওয়া রোহিঙ্গা মহিলাদের নির্মম অবস্থা নিয়ে অনুসন্ধানমূলক প্রবন্ধ লিখে লরেঞ্জো নাটালি মিডিয়া প্রাইজ অ্যাওয়ার্ড ২০২১ পেলেন অসমের ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট পরী সাইকিয়া। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি এই বিষয়টির উপর অনুসন্ধানমূলক গবেষণা চালিয়েছেন।
প্রবন্ধটি ইমপালস এনজিও নেটওয়ার্কের (আইএনজিএন) অন্তর্গত ইমপালস মডেল প্রেস ক্লাবের ট্রান্স-বর্ডার হিউম্যান ট্রাফিকিং ফেলোশিপের অংশ। অনিরাপদ অভিবাসন, শোষণ এবং মানব পাচারের সমস্যা মোকাবিলায় হাসিনা খারবিহ ১৯৯৩ সালে ওই এনজিওটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের কি পুনর্বাসন দেওয়া হবে, সংসদে জবাব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের
পরী জানিয়েছেন, পুরো গবেষণাটির মধ্যে বেশ কয়েকটি ধাপ রয়েছে। কাশ্মীরে রোহিঙ্গা মহিলাদের খুঁজে বের করা, বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর তাঁরা যে বাড়িগুলিতে ছিল সেখানে যাওয়া এবং শেষ ধাপে বাংলাদেশের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ওই মহিলাদের পরিবারের সদস্যদের খুঁজে বের করা, গোটা প্রক্রিয়াটি খুব কঠিন ছিল।
সাইকিয়া তাঁর গল্পে লিখেছেন, কাশ্মীরে পুরুষদের কাছে বিক্রি হওয়া রোহিঙ্গা নারীদের দুঃখজনক অভিজ্ঞতার কথা। মায়ানমার থেকে এই মহিলাদের কীভাবে বাংলাদেশের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল এবং পরে কাশ্মীরের ভারতীয় পাচারকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাও তার লেখায় উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রুখতে রাজ্যগুলিকে কড়া নির্দেশ কেন্দ্রের
রোহিঙ্গা বধূদের ভয়ঙ্কর পরিবেশে কয়েকদিন ধরে আটকেও রাখা হয়েছিল। পরীর গল্পে তা উঠে এসেছে। মায়ানমারে তাঁদের পরিবারে কাছে ফিরে আসতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাঁরা খাদ্য ও চিকিৎসা পরিষেবা থেকেও বঞ্চিত ছিলেন। ২০১৫ সালে পরী দিল্লির রেড লাইট এলাকা জিবি রোডে শিশু পাচারের ঘটনা নিয়ে অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন লিখেছিলেন।
লরেঞ্জো নাটালি মিডিয়া প্রাইজ অ্যাওয়ার্ড ২০২১ ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা বাতিল করা হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে পুরস্কার দেওয়া হয়। গ্র্যান্ড প্রাইজ, ইউরোপ প্রাইজ এবং সেরা উদীয়মান সাংবাদিক- এই তিনটি বিভাগের প্রত্যেকটিতে পুরস্কার প্রদান করেন কমিশনার জুট্টা উর্পিলাইনেন।
আরও পড়ুন: ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের আবাস
‘বৈষম্য’, ‘দারিদ্র্য দূরীকরণ’, ‘স্থিতিশীল উন্নয়ন’, ‘পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং জলবায়ু কর্ম’, ‘ডিজিটাল গ্যাপ’, ‘ই-গভর্নেন্স এবং উদ্যোক্তা’, ‘চাকরি ও কর্মসংস্থান’; ‘শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন’, ‘শান্তি, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার’ সহ দশটি বৈচিত্র্যপূর্ণ বিষয়ে লেখার জন্য সাংবাদিকদের তিনটি প্রধান পুরস্কার প্রদান করা হয়।
পুরস্কারের পাওয়ার পর হাসিনা খরবিহ এবং কর্ম পালজোরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সেই সব মহিলাদের প্রতি, যারা তাঁকে বিশ্বাস করে নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছিলেন।