নয়াদিল্লি: অনেক আগেই গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে রোহিঙ্গারা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর। বিষয়টি সংসদে জানিয়েছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বছর খানেক পরে সেই একই বিষয় নিয়ে আলোচনা হল সংসদে। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন দেওয়া সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
আরও পড়ুন- ‘হোপ টোয়েন্টি ফোর’, সোনিয়ার সঙ্গে বৈঠকের পর আত্মবিশ্বাসী মমতা
গত এক দশক ধরে রোহিঙাদের নিয়ে সমস্যা শুরু হয়েছে মায়ানমারে। ওই দেশের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা উপজাতিদের উপরে হামলা চালালে তারা দেশান্তরিত হতে শুরু করে। রোহীংগাদের একটা বড় অংশ প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। সেই সঙ্গে আরও অনেকে উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতেও প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ থেকেও অনেক রোহিঙ্গা ভারতে প্রবেশ করেছে।
আরও পড়ুন- করোনার টিকা বা নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়াও এখন যাওয়া যাবে দিঘায়
২০১৭ সাল থেকে ভারতে এই নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। রোহিঙ্গারা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকারক বলে দাবি করে কেন্দ্র। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে অনেক জঙ্গি ভারতে প্রবেশ করেছে বলেও দাবি করা হয় গোয়েন্দা রিপোর্টে। সেই সময়ের হিসেব অনুসারে ভারতে ৪০ লক্ষ রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে বলেও জানানো হয় সরকারিভাবে। এরপরে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে কেন্দ্র রোহিঙ্গা সমস্যাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে।
আরও পড়ুন- হাসিমারার সেনা শিবিরে পৌঁছল যুদ্ধবিমান রাফাল
সেই সময়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন রজনাথ সিং। তিনিই সংসদে দাবি করেছিলেন যে রোহিঙ্গারা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিপজ্জনক। চলতি বাদল অধিবেশনেও প্রসঙ্গটি ওঠে সংসদে। বুধবার জানতে চাওয়া হয় রোহিঙ্গারা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর, তাহলে তাদের কি ভারতে পুনর্বাসন দেওয়া হবে? এই প্রশ্নের জবাবে রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বলেছেন, “পুনর্বাসন দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা সরকারের নেই। রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য সকল অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ। নানাবিধ অনৈতিক কাজে রোহিঙ্গারা জড়িয়েছে বলেও খবর পাওয়া গিয়েছে।”
এই নিয়েই মঙ্গলবার ফের আলোচনা হয়েছে সংসদের নিম্ন কক্ষে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে সংসদে লিখিত আকারে জানানো হয়েছে যে মায়ানমার থেকে যে সকল অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে প্রবেশ করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন কোন রাজ্যকে ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাও জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। মণিপুর, মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশ এবং নাগাল্যান্ডের রাজ্য সরকারকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- কড়া নাড়ছে তৃতীয় ঢেউ, পুর বৈঠকে শিশুস্বাস্থ্যে গুরুত্ব ফিরহাদের
অন্যদিকে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন(CAA) এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। মঙ্গলবার সংসদের নিম্নকক্ষে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে এখনই কার্যকর করা হচ্ছে না নয়া নাগরিকত্ব আইন। যাবতীয় নিয়ম এবং বিধি প্রস্তুত করতে আরও ছয় মাস সময় চেয়েছে কেন্দ্র।