কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাবিত বিজেপি বিরোধী জোটের ব্যাপারে এখনই কোনও আগ্রহ দেখাতে নারাজ অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। গুজরাত এবং হিমাচলপ্রদেশের ভোটের আগে তাঁরা এ নিয়ে কোনও আগ্রহ দেখাতেই রাজি নন বলে আম আদমি পার্টি বা আপের নেতারা জানিয়েছেন।
গত ২৭ মার্চ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবিজেপি রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী নেতাদের চিঠি দিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার বার্তা দেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি বিরোধী জোট এবং আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য অবিলম্বে বৈঠকে বসার পরামর্শও দিয়েছিলেন ওই চিঠিতে। এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার এবং শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত শুধু মমতার চিঠির ব্যাপারে উৎসাহ দেখিয়েছেন। কয়েকদিন আগে ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক জানিয়েছিলেন, তিনি তখন পর্যন্ত মমতার চিঠি পাননি।
আপের দুই বরিষ্ঠ নেতা দলের প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমকে জানান, এখনই তৃণমূলনেত্রীর চিঠির জবাব দেওয়ার মতো কোনও পরিস্থিতি আসেনি। আপের এক নেতা বলেন, এখন আমাদের পাখির চোখ গুজরাত এবং হিমাচলপ্রদেশের বিধানসভা ভোট। ওই ভোটের আগে বিরোধী জোটে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত আমরা নিচ্ছি না। আমরা মমতার চিঠির ব্যাপারে অবগত আছি। কিন্তু তাঁর প্রস্তাব নিয়ে এখন কোনও প্রতিক্রিয়া জানাবে না আপ।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এবং ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন গত সপ্তাহেই দিল্লিতে কেজরিওয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি দিল্লি গিয়েছিলেন সেখানকার সরকারি স্কুল এবং মহল্লা ক্লিনিক পরিদর্শন করতে। তা দেখে খুব খুশি স্ট্যালিন। তামিলনাড়ুতে তিনি দিল্লি মডেলের ধাঁচে মহল্লা ক্লিনিক চালু করতে চান। জাতীয় স্তরে বিরোধী জোট গড়ার ব্যাপারে স্ট্যালিনও আন্তরিক। উত্তরপ্রেদশ-সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটের আগে এবং পরে মমতার সঙ্গে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়েছে। তবে তৃণমূল চায় না, এই জোটের নেতৃত্বে কংগ্রেস থাকুক। বরং তারা কংগ্রেসকে জোটের বাইরে রাখতে চায়। যদিও স্ট্যালিন মনে করেন, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে জাতীয় স্তরে বিরোধী জোট সম্ভব নয়। শুধু তাই নয়, কংগ্রেসকেই তার নেতৃত্ব দিতে হবে। মমতা-সহ তৃণমূল নেতারা বারবারই অভিযোগ করছেন, বিজেপি বিরোধী জোটের ব্যাপারে কংগ্রেস আন্তরিক নয়। তাঁদের আরও দাবি, কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির গোপন আঁতাঁত রয়েছে। মমতার বক্তব্য, কংগ্রেস কিছু না করলে আমরা তো আর হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারি না।
ফেব্রুয়ারি মাসে বিরোধী নেতারা বলেছিলেন, পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফল বিজেপি বিরোধী জোটের ক্ষেত্রে একটা বড় মাপকাঠি হবে। কিন্তু পাঁচ রাজ্যের ভোটে বিজেপি ভালোই ফল করেছে। বিরোধী জোটের আশা ছিল, উত্তরপ্রদেশে এবার বিজেপি ধরাশায়ী হবে। কিন্তু আসন কমলেও যোগীর রাজ্যে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। যোগীই ফের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। আপের এক নেতা তখন বলেছিলেন, ভোটের পর আমরা বিজেপি বিরোধী জোটের ডাক দেব। সূত্রের খবর, পাঁচ রাজ্যের ফল বিরোধী নেতাদের খানিকটা হতাশই করেছে।
আরও পড়ুন: Jagdeep Dhankhar: অসুস্থ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, পৌঁছলেন বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজিতে
মমতা অবিজেপি আঞ্চলিক দলগুলির কনভেনশন ডাকার ব্যাপারে উৎসাহী। বিরোধীদের মূল লক্ষ্য, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপিকে পরাস্ত করা। ওই জোটের নেতৃত্বের প্রশ্নে নানা বিতর্ক আছে। তৃণমূল দাবি করে, মমতাই এখন বিরোধী জোটের প্রধান মুখ। তবে এ ব্যাপারে কেজরিওয়াল অন্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছেন। পঞ্জাবের ভোটে বিপুল গরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ের পর কেজরিওয়ালও বিরোধী নেতৃত্বের দাবিদার হতে চান। আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে আপই এখন দুটি রাজ্যের ক্ষমতায়। তাই তাদের আশাও বেশি। আপের এক নেতা বলেন, এই মুহূর্তে কোনও বিরোধী জোটে গিয়ে আমাদের লাভ নেই।