কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক : ওমা একি, এতো একটা ছোট বাঘের বাচ্চা মনে হচ্ছে। হ্যাঁ, তাই তো। ঠিক তাই। এতো ঝড়জল হচ্ছে। বৃষ্টিতে ভিজে যাবে তো! ওর মা নেই? ও একা একা কী করছে? টিন-শেডের পাশ দিয়ে হাঁটছে। চলনে, ঠাঁটে দেখো, একদম বাঘের বাচ্চাই বটে।
পঁয়তিরিশ সেকেন্ডের ভিডিও। ভিডিওতে কেউ একজন বলছেন ‘শের কা বাচ্চা হ্যায়। চিতে কা।’ তারপর মরাঠি ভাষায় কিছু কথা। কেউ একটু দূর থেকে বলছেন, ‘এই ওটাকে ধর না।’ একজন উত্তরে, ‘না না। কমপ্লেন হয়ে যাবে। পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যাবে। কথা কম বল।’ এরই মধ্যে বৃষ্টি বাঁচিয়ে একটু আড়াল দেখে বাঘের বাচ্চা গিয়ে বসে ওই টিন-শেডের ধার ঘেঁষে। তারপর? তারপর আর কিছু নেই, ভিডিও শেষ। পঁয়তিরিশ সেকেন্ড তো, আর কত থাকবে। তা হলে বাচ্চাটার কী হল?
ভিডিওটি টুইট করেন এনডিটিভি’র সাংবাদিক সোহিত মিশ্র। ট্যাগ করেন, দেবেন্দ্র ফড়নবিশ আর আদিত্য ঠাকরেকে। ‘দেবেন্দ্রজী এই সেই জায়গা, যেখানে আমরা কারশেড বানানোর পরিকল্পনা করেছিলাম। আজ ওখান থেকেই একটা তেন্দুয়ার বাচ্চা বেরিয়েছে।’ তেন্দুয়াকে আমরা বাংলায় কী বলব? চিতা? সে যাই হোক, পাঠক নিশ্চয়ই এতক্ষণ ভাবছেন জায়গাটা কোথায়। জায়গাটা একেবারে মুম্বই শহরের নাকের ডগায়।
माननीय @Dev_Fadnavis जी, यह वही जगह है जहाँ आप आरे में कारशेड बनाना चाहते थे, आज एक तेंदुए का बच्चा वहाँ से बाहर आता नज़र आ रहा है..
आरे को जंगल घोषित किया गया है, लेकिन अबतक कारशेड के लिए लगाए गए इस टिन को हटाया नहीं गया है, उम्मीद है यह भी जल्द किया जाएगा @AUThackeray pic.twitter.com/E63EgFlVXj
— sohit mishra (@sohitmishra99) September 28, 2021
মাকে হারিয়ে এ দিক সে দিক ঘুরছিল বাচ্চাটা। বৃষ্টির মধ্যে একেবারে মুম্বইয়ের রাস্তায়। গায়ের লোম গুলো একেবারে কাদামাখা। ওই যাঁরা ভিডিও করছিলেন তাঁরাই ফোন করেন বনকর্মীদের। পুলিশও আসে। যদি কোনও সাহায্য করা যায়। বনকর্মীরা বাচ্চাটাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তারপর? তারপর কী হল? কী আর হবে, কাদাটাদা মুছিয়ে পরিস্কার করে, তারপর দুধ খাইয়ে বনকর্মীরা গরম কম্বলে মুড়িয়ে রাখল। আর সে ব্যাটা আরাম পেয়ে নাক ডেকে ঘুমোতে লাগল।
বনকর্মীরা উদ্ধার করেন বাঘটিকে
নিশ্চিন্তে ঘুমচ্ছে ছোট্ট বাঘের ছানাটি
আরও পড়ুন – প্রিয় খাবার ছিল দুধ-ঘি, প্রয়াত ২১ কোটির মদ্যপায়ী সুলতান
মুম্বই আরে অঞ্চলের এই জায়গাটা সঞ্জয় গান্ধী জাতীয় উদ্যান লাগোয়া। গত বছর মহারাষ্ট্র সরকার এখানকার প্রায় ৬০০ একর জমি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে বিজেপি সরকার এখানে কারশেড করার পরিকল্পনা করে। যা নিয়ে পরিবেশ-কর্মীদের সঙ্গে সরকারের সংঘাত বাধে। প্রায় তিন হাজার গাছ কেটে ফেলার যে পরিকল্পনা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জোরাল হয়। কারশেডের পরিকল্পনা বাতিল হয়েছে। কিন্তু সেই টিনশেড এখনও পড়ে। যার মধ্যে পথ ভুলে চলে এসেছিল ওই বাঘের বাচ্চাটা।