Placeholder canvas
কলকাতা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
ব্যাঘ্রাচার্য বৃহল্লাঙ্গুলের দেশ
শুভেন্দু ঘোষ Published By: 
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ৬ জুন, ২০২১, ১১:০৯:৪৭ এম
  • / ৭২৯ বার খবরটি পড়া হয়েছে

ভারত এক সবজান্তা বৃহল্লাঙ্গুলের দেশ। তাই ‘বিচিত্র এই দেশ’কে করোনা যে মহাশ্মশানে পরিণত করে দিতে পারেনি, তার কারণ দেশবাসীর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন এই মত প্রকাশ করেছেন। করোনা মোকাবিলায় ভারত সরকারকে ব্রহ্মাস্ত্রে বিদ্ধ করে অমর্ত্য সেন আরও অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু তার মধ্যে মারাত্মক একটি শব্দ হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জোরে ভারত প্রথম দিকে বেশ ভালো অবস্থাতেই ছিল।
একথা আদ্যন্ত খাঁটি যে, ভারত এমন একটা দেশ যেখান থেকে ম্যালেরিয়ার ভয়ে আলেকজান্ডারের বাহিনী উজাড় হয়ে গিয়েছিল। ফি বছর মায়ের দয়া, ওলাওঠা, কালাজ্বর, প্লেগ, টাইফয়েড নিয়ে বসত করেছে দেশবাসী। ক্ষুধা-অপুষ্টি, চরম দারিদ্র্যের মতো ভাইরাসের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করেছে। হাঁপানি, রাজরোগ, অ্যানিমিয়া, ডায়েরিয়াকে শরীরের অতিথি করে রেখেছে। পুকুর, ইদারা, নদীর জল পান করেছে পরম প্রাপ্তি ঠাউরে। ওঝা-জড়িবুটি থেকে টিকা— অবিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের সঙ্গে সখ্য পেতেছে। তাঁদের কাছে করোনা ভাইরাস হজম করা যে নস্যি, তা কি বলার অপেক্ষা রাখে!
করোনা হোক বা যে কোনও আর পাঁচটা রোগব্যাধি শরীরকে অসুস্থ করে, যখন শরীরের নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতা তার কাছে হার মানে। মোটা দাগের ব্যাখ্যায় আমাদের শরীরে দু’ধরনের প্রতিরোধ শক্তি থাকে। প্রথমটি হল— অ্যাক্টিভ। দ্বিতীয়টি— প্যাসিভ। দুটিকেই আবার স্বাভাবিক ও কৃত্রিম এই দু’ভাগে ভাগ করা হয়। অ্যাক্টিভের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে, যখন কোনও রোগ সংক্রমণের প্রভাবে শরীর নিজে থেকে তার অ্যান্টিবডি তৈরি করে তা থেকে। আর প্যাসিভের স্বাভাবিক প্রতিরোধ গড়ে ওঠে মায়ের দুধ থেকে প্রাপ্ত অ্যান্টিবডির মাধ্যমে। দুটি ক্ষেত্রেই কৃত্রিম প্রতিরোধটি হল— টিকাকরণ কিংবা অ্যান্টিবায়োটিক।
সুতরাং, দেখা যাচ্ছে, আমাদের দেশের আপামর জনতা জন্মাবধি এত সংক্রমণের সঙ্গে যুঝেছে যে, তাদের ভিতরে স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। করোনা সংক্রমণের হারেও আক্রান্তের সংখ্যা মধ্য ও উচ্চবিত্তদের মধ্যেও বেশি। কারণ জীবনচর্যার কৌশলগত কারণে তারা বেশ কিছু রোগবালাই নিয়ে ঘর করে। যেমন— ডায়াবেটিস, মোটাত্ব, অনিদ্রা, কোলেস্টেরল-ট্রাইগ্লিসারাইড ও হৃদপিণ্ডের ধমনীতে মেদ জমার মতো অসুখ।
অপরপক্ষে গরিব মানুষ খেতে না পাওয়ায় তাদের এই রোগ প্রবণতা কম। না-খেতে পাওয়ার ও হাঁচিকাশি-জ্বরজারি-পেট খারাপের প্রতিরোধ ক্ষমতার জিনগত বিবর্তনে তারা ‘অমরত্ব’ লাভ করেছে। যে শিশুটি জন্ম থেকে আর ও ওয়াটার পান করেছে, তাকে একগ্লাস হাকিমি জল (কলকাতা কর্পোরেশনের রাস্তার কলের জল) খাওয়ালে পেট ছেড়ে দিয়েই সে মরে যাবে।
তাঁরা ফুটপাথে থাকে, তাঁরা মাঠে চাষ করে, তাঁরা ইটভাটার আগুনে সেঁকা হয়, তাঁরা হাতুড়ি চালায়, রিকশ টানে, মোট বয়। তাঁদের সন্তানরা ভাতের ফ্যান খায়, মুরগির চামড়ার চচ্চড়ি খায়, বাসি পাউরুটি, হোটেলের ফেলে দেওয়া ভাত, উচ্ছিষ্ট, বাবুর বাড়ির অভুক্ত তরকারি খেয়ে বড় হয়। দিনভর পেটের খিদে আর রাতে শরীরের খিদের বাইরে তাঁদের আর কোনও চিন্তাও নেই। তাই পূর্ণিমা হোক বা অমাবস্যা— রাতে তারা নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ে। সূর্য উঠলেই পশুর মতো খাদ্যের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে। জীবনের সাধ নেই, তাই মৃত্যুর ভয়ও নেই। হাড়ভাঙা খাটনির পর তারা অকাতরে ঘুমোয় বলে তাঁদের শরীরে সাইটোকিনস তৈরি হয়।
সাইটোকিনস হল একধরনের প্রোটিন বাহক। যা রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়। তারা দীর্ঘসময় রোদে থাকে। বাড়ে ভিটামিন ডি। বৃষ্টিতে ভেজে, ঘোর শীতে কাঁপে, তাই সাধারণ ফ্লু তাঁদের হয় না। মধ্য ও উচ্চবিত্তদের মতো তাঁদের পেশাগত বা দুঃখবিলাসজাত মানসিক চাপ নেই। ছেলের উচ্চশিক্ষা, উচ্চ বেতনের চাকরি বা মেয়ের বিদেশে বিয়ে দেওয়ার মতো উৎকণ্ঠা নেই। নতুন ফ্ল্যাটের মোহ নেই, কাঞ্চনমুক্তির অভিপ্রায়ও নেই। তাই তাঁদের মধুমেহ আছে, শ্বেতকণিকার অভাব আছে, অনিদ্রা আছে, কমবেশি মানসিক ভারসাম্যের অভাব আছে, হৃদপিণ্ড অলস হয়ে পড়ছে, বায়ু-অম্ল আছে। আর সব সময় একটা অসুখ নিয়ে অবচেতনে সুখানুভূতি আছে।
সুতরাং, দেখা যাচ্ছে অমর্ত্য সেন যা বলেছেন, তা যথার্থই। করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রের সরকার তো কৃতিত্বের দাবি করতেই পারে। সেটা স্কিৎজোফ্রেনিয়া হলে হোক না! কেননা ‘ব্যাঘ্রাচার্য বৃহল্লাঙ্গুল’ বা ‘অমিতোদর’ যেই হোক না কেন, নখের আঁচড়ে পরস্পরের পিঠ চুলকে দিলেও ভারতবাসী জানে, তারা অনন্ত খিদের অশ্বমেধে জয়ী। মৃত্যুর বাইজিনাচে তাঁরা ভুলবে কেন? দেশজুড়ে থালা বাজিয়ে বুক চিতিয়ে কৃতিত্ব জাহির করাই যায়, কারণ দেশবাসীর অধিকাংশ থালাই যে খালি!

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২ ১৩
১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০
২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫২৬ ২৭
২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

বাংলায় জন্ম নিতে চলেছি বলে মালদহে আবেগে ভাসলেন মোদি
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
শাহজাহান ঘনিষ্ঠের বাড়িতে মাটির নিচে অস্ত্র ভাণ্ডারের হদিশ
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
তৃণমূলের জন্য়ই ২৬ হাজারের চাকরি গেল, মালদহে তোপ মোদির
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
তামান্নাকে সমন মহারাষ্ট্র পুলিশের
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
স্ত্রী-ধনে অধিকার শুধু স্ত্রীর, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
ব্যালটে নয়, ভোট হবে ইভিএমেই, ভিভি প্যাট মামলায় নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
ভিভিপ্যাট খারাপ, গঙ্গারামপুরে থমকে ভোটপ্রক্রিয়া
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
বুথ থেকে বেরিয়েই ফের মোদিকে নিশানা প্রকাশের!
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
তৃণমূল-কংগ্রেস তুষ্টিকরণের রাজনীতি করছে, মালদহে অভিযোগ মোদির
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
১৫ দিন ধরে পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং, প্রতিবাদে পথ অবরোধ স্থানীয়দের
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
বিজেপিকে ভোট দিন, তৃণমূল প্রার্থীর নামে লিফলেট ঘিরে বিতর্ক!
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
এই রাজ্যে সভ্যভাবে ভোট হওয়া মুশকিল, বললেন মিঠুন
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
পানিহাটিতে সৌগত রায়ের নামে ব্যানার ছেঁড়া হল
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
স্টার্ক কি আজ বাদ? কী হবে নাইট একাদশ?
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দলীয় পতাকা ড্রেনে ফেলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team