শরীরের নানান ক্রিয়া প্রক্রিয়া সুচারুভাবে করতে এবং শরীরকে বর্জ্য পদার্থ মুক্ত রাখতে লিভারের ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সব কাজ করার পাশাপাশি লিভারে আর একটি ভাল দিক হল লিভার নিজের ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলিকে নিজেই সারিয়ে তোলে এবং প্রয়োজন অনুসারে কোষগুলিকে প্রতিস্থাপন করে চলে লিভার বা যকৃৎ। তবে ক্রমাগত এই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে এক সময় লিভারের এই ক্ষমতা হ্রাস পায়। এটা অল্প কয়েক দিনে হয় না বরং দীর্ঘদিনের বেশ কিছু ভুল অভ্যেসের ফলে একটু একটু করে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে লিভার। এই সব অভ্যেস অজান্তেই লিভারের একাধিক সমস্যা ডেকে আনে তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই প্রতিবছর ১৯ এপ্রিল পালন করা হয় ওয়ার্ল্ড লিভার ডে(World Liver Day 2022)। মস্তিষ্কের পর শরীরের সবচেয়ে জটিল অঙ্গ হল এই লিভার। আজ ওয়ার্ল্ড লিভার ডে উপলক্ষ্যে দেখে নিন নিত্যদিনের কোন কোন অভ্যেসের কারণে লিভারের বিপদ বাড়তে পারে।
প্রচুর পরিমাণে ওষুধ খাওয়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে লিভার
আমরা যে সব ওষুধ, গাছড়া বা সাপ্লিুমেন্ট খাই সেগুলো পিত্তরস নিঃসরণ করে হজম করে লিভার। তবে দীর্ঘদিন ধরে এই সব ওষুধ ও ঔষধি মাত্রাতিরিক্ত শরীরে গেলে ক্রমে লিভারের ওপর চাপ বাড়তে থাকে। সময় থাকতে ব্যবস্থা না নিলে কিংবা চিকিত্সকের পরামর্শ না নিলে লিভার ফেল হওয়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে।
কম ঘুমোনোর অভ্যেস লিভারের বিপদ ডেকে আনতে পারে
আধুনিক জীবনযাপনের একটা খারাপ দিক হল অনিয়মিত ঘুম। তা কাজের চাপেই হোক কিংবা দীর্ঘসময় ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডে কাটানোর অভ্যেস। একাধিক কারণে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব তৈরি হচ্ছে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে খারাপ ঘুম কিংবা পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে লিভারের পর অক্সিডেসিভ স্ট্রেস বাড়তে থাকে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শরীর। এই কারণেই দিনে অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমোনোর পরামর্শ দেন চিকিত্সকরা।
স্থুলতা ও পুষ্টির অভাব
হাই ক্যালোরি খাবার, ট্র্যান্সফ্যাট, স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও বেশি চিনি যুক্ত খাবার বেশি খাওয়া হলে লিভারে ফ্যাট জমে। যাদের মধ্যে স্থুলতার সমস্যা রয়েছে তাদের মধ্যে এই সমস্যা সব থেকে বেশি দেখা যায়। তাই স্থুলতার সমস্যা রয়েছে যাদের তাদের মেদ কমানোর পাশাপাশি খাওয়া দাওয়া নিয়েও সচেতন থাকার প্রয়োজন রয়েছে।
অতিরিক্ত ভিটামিন এ
আমাদের শরীরের জন্য ভিটামিন এ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টাটকা ফল ও শাক সবজি এই ভিটামিন প্রচুর মাত্রায় পাওয়া যায়। তাই এই সব খাবার আমাদের নিত্যদিনের খাদ্যতালিকায় রাখলে
শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ পৌঁছায়। কিন্ত সমস্যা বাঁধে যখন এই সব প্রাকৃতিক উপায়ের বদলে কেউ যখন ভিটামিন এ-র ঘাটতি পূরণের জন্য ভিটামিন এ-র হাই ডোজ সাপ্লিমেন্ট খাওয়া শুরু করেন। এই ভিটামিন এ সাপ্লিমেন্ট লিভারের বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই চিকিত্সকের পরামর্শ ছাড়া কোনও হেলথ সাপ্লিমেন্ট খাওয়া উচিত না।
মদ্যপান ও ধুমপান
প্রচুর মাত্রায় মদ্যপান লিভারের জন্য কতটা ক্ষতিকারক তা আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। এদিকে ধুমপান শুধু ফুসফুস নয় বরং লিভারের বিপদ ডেকে আনে। অ্যালকোহল আর টোব্যাকো বা তামাক লিভারের বর্জ্য পদার্থ নিকাশের ক্ষমতা কমিয়ে আনে এবং লিভারের বিপদ ডেকে আনে।
আরও পড়ুন: লিভার ভাল রাখতে এই সব খাবার নিয়মিত খেতে পারেন