উত্তরাখণ্ড: বৃহস্পতিবার থেকে ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে ভগবান বিষ্ণুর আবাস বদ্রীনাথ ধামের (Badrinath Dham) দরজা। উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) চামোলী জেলায় অলকানন্দা নদীর পাড়ে রয়েছে বদ্রীনাথের মন্দির। ৭ এবং ৯ শতকে এই মন্দির নির্মাণের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। মন্দিরের গর্ভগৃহে রয়েছে ভগবান বদ্রীর এক মিটার লম্বা শালগ্রাম মূর্তি। তবে ভক্তরা এই মন্দিরে পুজো দিলেও এখানে শঙ্খ (Conch)বাজানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। কিন্তু কেন এই নিয়ম? এই ঘটনার পিছনে রয়েছে তিন তিনটি কারণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
প্রথমত, কথিত আছে বদ্রীনাথ ধামে দেবী লক্ষ্মী তুলসী রূপে ধ্যানমগ্ন থাকেন। ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিদের বিশ্বাস অনুযায়ী, তিনি যখন ধ্যানমগ্ন ছিলেন তখন ভগবান বিষ্ণ শঙ্খচূর্ণ নামে এক রাক্ষসের বধ করেছিলেন। হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী, কোনও শুভ কাজ করার সময় শাঁখ বাজানো হয়। কিন্তু, ভগবান বিষ্ণু শঙ্খচূর্ণ বধের পর শঙ্খ (Conch) বাজাননি। তুলসীরূপে ধ্যানমগ্ন দেবী লক্ষ্মীর একাগ্রতা নষ্ট করতে চাননি তিনি। সেই ঘটনা মাথায় রেখে আজও বদ্রীনাথের (Badrinath Temple) মন্দিরে শাঁখ বাজানো হয় না।
আরও পড়ুন:Badrinath Dham | প্রবল তুষারপাতের মধ্যেই ভক্তদের জন্য খুলে গেল বদ্রীনাথের দরজা
দ্বিতীয়ত, প্রচলিত রয়েছে, হিমালয়ে রাক্ষসের আতঙ্ক রয়েছে। তাঁদের ভয়ে ঋষি-মুণিরা মন্দিরে পুজো করতে যেতে পারেন না। এমনকী, আশ্রমের মধ্যেও ঋষি-মুণিরা ধ্যানে বসতে পারেন না। এই রাক্ষসরা তাঁদের গিলে খেয়ে ফেলতেন বলেও পুরাণে কথিত রয়েছে। রাক্ষসের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ হয়ে ঋষি অগস্থ ভগবতী মাতার দ্বারস্থ হন। ভাত ভগবতী কুষ্মাণ্ডদেবী রূপে প্রকট হন। নিজের ত্রিশূল দিয়ে রাক্ষসদের নিধন করেন। এই সময় অথাপি এবং বতাপি নামে দু’টি রাক্ষস পালিয়ে যায়। অতাপি মন্দাকিনি নদীতে ঝাঁপ মারে এবং বতাপি বদ্রীনাথের মন্দিরে একটি শঙ্খের (Conch) ভিতর আশ্রয় নেয়। মনে করা হয় শঙ্খ বাজানো হল ওই রাক্ষস শঙ্খ থেকে বেরিয়ে আসবে। তাই শাঁখ বাজানো হয় না বদ্রীনাথের মন্দিরে।
তৃতীয়ত, আধ্যাত্মিক কারণ ছাড়াও বদ্রীনাথের মন্দিরে (Badrinath Temple) শাঁখ (Conch) না বাজানোর পিছনে রয়েছে একটি বৈজ্ঞানিক কারণও। তুষারপাতের সময় বদ্রীনাথ ধান বরফে ঢাকা পড়ে যায়। বৈজ্ঞানিকদের মতে যদি তুষারপাতের সময় শঙ্খ বাজানো হয় তবে তুষারঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শঙ্খের প্রতিধ্বনিতে ধস নামতে পারে। ফলে প্রকৃতিকে চটাতে চান না কেউই।