জীবনের নানা ওঠাপড়ায় কম-বেশি আমরা সকলেই হতাশ হয়ে পড়ি। অনেক ক্ষেত্রেই যেমনটা ভাবা হয়, পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় একেবারে তার উল্টো। এর প্রভাব পড়ে মনের উপর৷ এই সাময়িক খারাপ লাগা থেকে বেরেতে আমরা অনেকেই বেছে নিই পছন্দের কোনও কাজ। যেমন কোথাও ঘুরতে যাওয়া বা কেনাকাটা করা বা ভালমন্দ খাবার খাওয়া। প্রথম দুটি সময় ও খরচসাপেক্ষ৷ তাই পছন্দের খাবার খাওয়ার দিকেই ঝোঁকেন বেশি মানুষ। এরই নাম বিশেষজ্ঞরা দিয়েছেন ইমোশনাল ইটিং।
প্রথমে একবার, দু’বার পরে প্রত্যেকবার। মন খারাপ হলেই হাতের সামনে যা সহজলভ্য তা খেয়ে খুশি হই আমরা সকলেই। পেটের খিদে না থাকলেও মনের তাগিদে একাধিকবার খাই। সাময়িক মানসিক স্বস্তি আসে ঠিকই তবে বিপদও বাড়ে কয়েকগুন। খাবার খাওয়ার নিয়ম না মেনে যখন খুশি খাবার খেলে শারীরিক সমস্যা হতে বাধ্য। বিশেষ করে মন খারাপের সময় দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানুষ ঝোঁকেন যে কোনও ফাস্টফুড বা জাঙ্কফুডের দিকে।
মনে রাখবেন কোনও খাবারই আপনার পরিস্থিতি বা খারাপ লাগা বদলে দিতে পারে না। তাই নিজেই এই পরিস্থিতিতে থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন। কাজে লাগান এই কৌশলগুলি। উপকার পাবেন।
কখন সত্যি খিদে পেয়েছে আর কখন আবেগের তাগিদে
এই দুটোর মধ্যে বিভেদ করতে প্রথম প্রথম একটু অসুবিধে হবে। তাই আপনার খিদে ও নিত্যদিনের খাওয়ার অভ্যাসের দিকে নজর দিন। প্রয়োজনে খিদে পেলেই তক্ষুনি কিছু খেয়ে নেবেন না। বরং জল খান। জল খাওয়ার পরেও যদি খিদে পেতে থাকে বুঝবেন আপনার শরীরের এখন খাবার খাওয়ার প্রয়োজন।
খাওয়ার একটি সময় তালিকা বানিয়ে ফেলুন
এই সময় তালিকা মেনে খাবার খেলে দেখবেন প্রয়োজনের থেকে বেশি খাবার আপনি খেয়ে ফেলবেন না। অনিয়মিত খাবার খেলে ওজন বৃদ্ধি সহ নানান শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখুন
জীবনযুদ্ধে জয়পরাজয় লেগেই থাকে, ভেঙে পড়লে চলবে না। তাই চেষ্টা করুন আবেগতাড়িত না হয়ে সংযত থাকার। সমস্যা গভীর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। মানসিক ভাবে অস্থির প্রকৃতির হলে এই অভ্যাস দেখবেন আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে ইমোশনাল ইটিংয়ের দিকে। এর জেরে বাঘ্যাত ঘটবে আপনার শারীরিক ভারসাম্য আর সেখান থেকে সৃষ্টি হবে একাধিক শারীরিক সমস্যার। তাই সমস্যায় পড়লে মাথা ঠান্ডা রেখে সমস্যার সমাধানের উদ্দেশ্যে কাজ করুন।
অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস পাল্টে ফেলুন
আপনি ইমোশনাল ইটার হলে আপনার ভাললাগার কাজের একটি তালিকা তৈরি করে নিন। তা থেকে খাওয়ার বিষয়টা বাদ দিয়ে দিন। ইমোশনাল ইটিংয়ের হাতছানি থেকে দূরে থাকতে হাঁটুন। শরীর ও মন ভাল রাখার সবথেকে সহজ ও স্বাস্থ্যকর উপায় হল হাঁটা। হাঁটলে শুধু যে অশান্ত মন শান্ত হয় তা নয় বরং ধোঁয়াশা কাটিয়ে সমস্যার সমাধানে আপনাকে সাহায্য করে।
আপনার ভাল দিকগুলো মনে করুন
হতেই পারে আপনি কোনও কাজে সফল হতে পারেননি। তবে এই নিয়ে বিমর্ষ হয়ে নিজেকে ভর্ৎসনা করবেন না। বরং আপনার চরিত্রের ভাল দিকগুলো মনে করুন। একবার যদি নেতিবাচক চিন্তাভাবনা মাথায় ভিড় জমায়, তা হলে এই ইমোশনাল ইটিংয়ের হাত থেকে আপনাকে বাঁচানো মুশকিল হবে। মনে রাখবেন, আপনার সমস্যার সমাধান আপনার হাতেই। জীবনের ওঠাপড়াগুলো এক একটি অধ্যায় তাই খারাপ হলে ভালও হবে।