কথায় আছে স্বাস্থ্যই সম্পদ (Health is Wealth)। আর সেই কথা বর্তমান সময়ে সত্যিই অনেকটা প্রযোজ্য। ব্যস্ত কর্মজীবনে নিজেকে ফিট (Fit) রাখতে আমরা কত কিই না করি। তার মধ্যে অন্যতম হল এক্সারসাইজ (Exercise), হালকা জিম (Gym), অ্যারোবিক্স (Aerobics), পিলাটিস (Pilates), ইত্যাদি। আবার ওজন ঠিক রাখতে আমরা অনেক রকম টোটকা ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু শুধু ওয়ার্কআউট করেই তো ফিট থাকা যায় না, তার সঙ্গে দরকার উপযোগী পানীয়, যা আপনার শরীরের এনার্জি লেভেল (Energy Level) বাড়াবে আবার আপনাকে সারাদিন অ্যাক্টিভ থাকতেও সাহায্য করবে। তাই দেখবেন ফিটনেস নিয়ে যাঁরা উৎসাহী, তাঁদের অনেকেই ওয়ার্কআউট রুটিনের (Workout Routine) আগে ও পরে বিশেষ কোনও পানীয় ব্যবহার করে থাকেন। যেমন ধরুন অনেকে গ্রিন টি (Green Tea) পছন্দ করেন, আবার অনেক চান প্রোটিন শেক (Protein Shake)।
গ্রিন টি নাকি প্রোটিন শেক?
ওয়ার্কআউটের আগে হোক বা পরে নিজেকে হাইড্রেট রাখা সবসময় দরকার। তবে ওয়ার্কআউটের পর এমন কিছু নেওয়া দরকার, যাতে এনার্জি লেভেল দ্রুত বাড়বে। তাই ওয়ার্কআউটের পর বেশিরভাগ ব্যক্তিই প্রোটিন শেক পছন্দ করেন। তবে স্বাস্থ্যোপকারীতা এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো উপাদান থাকার কারণে গ্রিন টি ভালো চয়েস হতে পারে, যাঁরা ওজন ঠিক রাখতে চান।
গ্রিন টি’র উপকারীতা
১. বিপাকক্রিয়া বর্ধক: গ্রিন টি আপনার বিপাকক্রিয়া অর্থাৎ মেটাবলিজম বাড়ায়, যার ফলে আপনার শরীর অতিরিক্ত ক্যালোরি পোড়াতে পারো। এতে আপনার ওজন ঝরে। তাছাড়া, গ্রিন টি’তে EGCG বা এপিগ্যালোক্টেচিন গ্যালেট (Epigallocatechin Gallate) আছে, যা রোগ প্রতিরোধক।
২. হার্টরেট নিয়ন্ত্রণ করে: এক্সারসাইজ করার সময় আপনার হার্ট রেট অর্থাৎ হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। গ্রিন টি শরীরকে রিল্যাক্স করে, ফলে আপনি যদি এই পানীয় পান করেন, তাহলে হৃদস্পন্দনের হার নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৩. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা পেশির ব্যথা ও ক্লান্তি দূর করতে সহায়তা করে।
৪. এনার্জি লেভেল উন্নত করে: এক্সারসাইজ করলে আপনার শরীরের এনার্জি লেভেল কমে য়ায়, ফলে গ্রিন টি পান করলে সারা দিন আপনার এনার্জি থাকবে।
৫. লো ক্যালোরি: ফিটনেস নিয়ে যাঁরা খাটেন, খাদ্যাভাসের উপর তাঁদের বিশেষ নজর থাকে। সুগার-ফ্রি পানীয় হওয়ায় গ্রিন টি অবশ্যই পান করতে পারেন।
প্রোটিন শেকের উপকারীতা:
১. পেশি বর্ধক: শরীরের পেশি গঠনের জন্য প্রোটিন একটি অত্যাবশ্যক উপাদান। দিনে আপনার যতটা পরিমাণ প্রোটিন দরকার, প্রোটিন শেক নিলে সেই পরিমাণটাও ঠিক থাকবে।
২. পোস্ট ওয়ার্কআউট রিকভারি: এক্সারসাইজ করলে পেশির উপর চাপ পড়ে এবং পেশিতে ক্লান্তি আসে। ওয়ার্কআউটের পর প্রোটিন শেক পান করলে পেশি সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে।
৩. বিপাকক্রিয়া বাড়ায়: প্রোটিন শেক শরীরে এনার্জি জোগায় এবং পেশির পুনর্গঠনে সহায়তা করে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ফ্যাট কমাতেও সাহায্য করে।
৪. অতিরিক্ত পুষ্টি: প্রোট্রিন ছাড়াও আমাদের শরীরে রোজ একাধিক পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন হয়। প্রোটিন শেক সেই ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
৫. উপযোগিতা: চিকেন কিংবা ডাল থেকে প্রোটিন আপনি নিতে পারেন, কিন্তু তা তৈরি করতে সময় লাগে। হাতে সময় কম থাকলে, প্রোটিন শেক চটজলদি সমস্যার সমাধান করতে পারে।
কোনটা বেছে নেবেন?
গ্রিন টি এবং প্রোটিন শেক দু’টোই উপকারী এবং উপযোগী। দু’টোই শরীরের বিপাকক্রিয়ায় উন্নতি ঘটায় এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে, আবার শরীরের মেদ ঝরাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এখন আপনার জন্য কোনটা দরকারি, সেটা আপনাকে আপনার প্রয়োজন মতো বেছে নিতে হবে। প্রয়োজনে কোনও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।