ভারতে কম বয়সিদের মধ্যে ক্রমশ বাড়ছে হার্টের সমস্যা। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গাানাইজেশনের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বে হার্টের অসুখ যেমন স্ট্রোক ও ইসকেমিকে মৃত্যুর প্রায় ১/৫ অংশ মৃত্যু হচ্ছে ভারতে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বয়সের নিরিখে ভারতীয়রা অনেক কমবয়সেই, পাশ্চাত্য দেশগুলোর নাগরিকদের তুলনায় প্রায় এক দশক আগেই বিভিন্ন হার্টের অসুখে জর্জরিত হয়ে পড়ছেন।অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে হার্ট অ্যাটাকের সমস্যা দেখা যাচ্ছে যাঁদের মধ্যে তাঁদের প্রায় অন্তত ৪০ শতাংশের বয়স ৫৫ বছরের নীচে। গত ২৬ বছরে হার্টের অসুখে দেশে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশ। আর তাই এখন প্রমাদ গুনছেন চিকিৎসকরা। এই নিয়ে সত্ত্বর সচেতন হওয়ার প্রয়োজন, না হলে বিপদ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা।
তাই প্রয়োজন হার্টের অসুখের বিভিন্ন কারণগুলি নিয়ে সতর্ক থাকা। অনেক ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ নিয়ে সচেতন থাকলে আগে থেকে সমস্যার মোকাবিলা করা যেতে পারে এবং হার্ট অ্যাটাকের মত গম্ভীর পরিস্থিতি এড়ানো যেতে পারে। জেনে নিন ঠিক কোন কোন কারণে বাড়তে পারে হার্টের অ্যাটাকের সমস্যা।
ধূমপান
ধুমপানে চিনের পরেই বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। দেশে অন্তত ৩৪.৬ শতাংশ মানুষ ধূমপান করেন। এবং এই পরিসংখ্যার নিরিখে বিশ্বের মোট ধূমপায়ীর প্রায় ১২ শতাংশ ভারতের। ধূমপানের কারণে হার্ট রেট বেড়ে যায়। এটা বাড়লে অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। এর প্রভাব পড়ে হৃদযন্ত্রে রক্ত নির্বাহী গ্রন্থীগুলির ওপর।এর ফলে হার্টের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে এবং এই অবস্থায় বেশ কিছুদিন চলার পর হার্ট অ্যাটাক হয়।
স্থূলতা
ভারতে স্থুলতার সমস্যা রয়েছে। দেশে বয়সের তুলনায় অনেক বেশি ওজন ও স্থূলতার সমস্যা রয়েছে বাচ্চাদের।এরা যখন বড় হয় তখন হার্টের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। এবং এর ফলে দেশে হার্টের অসুখ বা হার্ট অ্যাটাকের কারণে মৃত্যুর সংখ্যার হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা অনেকেটাই বেড়ে যায়।
অতিরিক্ত স্ট্রেস
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণার রিপোর্ট অনুযায়ী সেন্ট্রাল ও পূর্ব ইউরোপের তুলনায় ভারতের কম বয়সীরা অতিরিক্ত স্ট্রেন ও টেনশনে ভোগেন। দেশ মৃত্যুর মোট শতাংশের প্রায় ১০ শতাংশের মৃত্যুর কারণ হিসেবে উঠে এসেছে হাইপারটেনশন। এবং বছরের পর বছরের দ্রুত গতিতে বেড়েছে চলেছে এই সমস্যা। গত ৩০ বছরের এর কারণে সমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শহর ও গ্রামবাসী। পাশাপাশি হাইপারটেনশন মানেই পরবর্তী ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়বিটিসের মত সমস্যার সৃষ্টি হওয়া।
ডায়বিটিস
গত তিরিশ বছরে উল্লেখ্যযোগ্য ভাগে ভারতে বেড়েছে ডায়বিটিস- টাইপ টু রোগীদের সংখ্যা। এই বৃদ্ধি এতটাই যে এর প্রভাব পড়েছে বিশ্বের ডায়বিটিসের পরিসংখ্যানেও।এবং দেশে এই ডায়বিটিসের টাইপ টু ও প্রাণ সংশয়ের মতো হার্টের বিভিন্ন সমস্যায় অসুস্থ হচ্ছেন ২৫ বছরের নীচে আছেন তাঁরাও।
তাই আজ, ২৯শে সেপ্টেম্বর, ওয়ার্ল্ড হার্টে ডে তে চলুন হার্টের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হই আমরা সবাই। যে হৃদস্পন্দন দিনের ২৪ ঘন্টা আমাদের জন্য কাজ করে চলেছে, বর্তমান সময় বলছে, প্রয়োজন তাঁর তালে তাল মিলিয়ে চলার।