কলকাতা: বর্ষা এলেই বাংলায় ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ে। তবে আজকাল কমবেশি সব ঋতুতেই এই মারণ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ডেঙ্গি প্রতিরোধের জন্য মশার বংশবৃদ্ধি আটকানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। তবে এবার এই মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধের এক নতুন পন্থা আবিষ্কার হতে চলেছে। গবেষণা বলছে, যেসব মশার শোনার ক্ষমতা থাকে না, সেই সব মশার মাধ্যমে ডেঙ্গি রোগ ছড়াবে না। সাধারণত, উভয় লিঙ্গের মশা ডানা ঝাপটানোর সময় নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কের শব্দ তৈরি করে। পুরুষ মশারা এই শব্দের মাধ্যমে নারী মশাদের আকৃষ্ট করে। আর গবেষকরা এই শব্দ-আকর্ষণের পন্থাকে ব্যবহার করে পুরুষ মশাদের শ্রবণ ক্ষমতা কেড়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন। সেই সঙ্গে এই পদ্ধতিতে পুরুষ মশার জিনগত পরিবর্তন করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু এর মাধ্যমে কীভাবে ডেঙ্গি প্রতিরোধ করা সম্ভব? দেখে নিন।
বিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, শ্রবণ ক্ষমতাহীন পুরুষ মশাদের সঙ্গে নারী মশাদের এক খাঁচায় তিন দিন রাখা হলেও তারা কোনো শারীরিক সংযোগ করেনি। এটি তাদের স্বাভাবিক প্রজনন আচরণের থেকে অনেকাংশে আলাদা ছিল। সাধারণভাবে, পুরুষ মশারা নারী মশাদের সংস্পর্শে আসার ২০ সেকেন্ডের মধ্যেই প্রজনন করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই এক মিনিটের কম সময়ে সম্পন্ন হয় এই সঙ্গম ক্রিয়া। তবে গবেষণায় বলা হয়েছে, ৪০০ হার্জের কম্পাঙ্কযুক্ত শব্দে পুরুষ মশারা সঙ্গমের ইচ্ছে দেখায়নি। অর্থাৎ, এই মিউটেশন যে মশার শ্রবণ ক্ষমতায় গভীর প্রভাব ফেলে, তা মোটামুটি পরিষ্কার। আর সঙ্গম ছাড়া মশার বংশবৃদ্ধি হবে না। ফলে ডেঙ্গির মতো রোগের প্রাদুর্ভাব অনেকাংশে কমানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
আরও পড়ুন: দিন দিন বসবাসযোগ্য হয়ে উঠছে মঙ্গল গ্রহ! গবেষণায় উঠে এল নতুন তথ্য
উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪০ কোটি মানুষ প্রতি বছর মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, পুরুষ মশাদের প্রজননক্ষমতা কমিয়ে দিলে মশার সংখ্যা কমানো সম্ভব হবে। কারণ যদি পুরুষ মশারা প্রজনন করতে না পারে, তাহলে ডিম নিষিক্ত হবে না এবং নতুন মশা জন্মাবে না। তবে, পুরুষ মশাকে বধির করার এই পদ্ধতি ছাড়াও বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন এলাকায় জীবাণুমুক্ত পুরুষ মশা ছেড়ে দেওয়ার পদ্ধতিটিকেও ব্যবহার করার কথা ভাবছেন। এটিও মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
দেখুন আরও খবর: