ঋতু পরিবর্তনের সময় এই আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে অনেকেই গায়ে হাতে পায় ব্যথা কিংবা অল্পেই ক্লান্তি অনুভব করেন। নিত্য শরীরচর্চার অভ্যেস থাকলেও এই সময় শরীর ও মন দুই সায় দেয় না। এদিকে এভাবে শরীরচর্চায় ব্যাঘাত ঘটলে তার প্রভাব পড়তে পারে আপনার ওয়েট লস জার্নিতেও। এদিকে শরীর বিশ্রাম চাইলে তা না দিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এই অবস্থায় ওয়েস্ট লস জার্নিতে যাতে কোনও ব্যঘাত না ঘটে তার জন্য নিত্য দিনের খাদ্যতালিকায় সামান্য কিছু পরিবর্তন করলেই ভাল ফল পাবেন। এই যেমন রান্নাঘরের নিত্য প্রয়োজনীয় মশলাপাতি কাজে লাগাতে পারেন। যেমন-
দারুচিনি
দারুচিনি নিয়ে বেশ কিছু গবেষণায় জানা গেছে যে আমাদের শরীরের কোষগুলিতে গ্লুকোজের কার্যকলাপ বাড়িয়ে দেয় দারুচিনি। এর ফলে খাবার খাওয়ার পড়ে শরীরে ইনসুলিনের বেড়ে যাওয়ার যে প্রবণতা থাকে তা নিয়ন্ত্রণ করে। আবার অপর একটি গবেষণায় জানা গেছে হাই-ফ্যাট যুক্ত খাবার রান্নায় যদি দারুচিনি যোগ করা যায় তা হলে রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা প্রায় ২০ শতাংশ কমিয়ে রাখে। এর পাশাপাশি শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এই বিশেষ ধরনের ফ্যাট, ট্রাইগ্লিসারাইড, স্ট্রোক ও হার্টের অসুখের অন্যতম কারনগুলির একটি। তাই ওজন কমানোর পাশাপাশি আপনার হার্টকেও সুস্থ রাখতে পারে এই দারুচিনি। নিত্যদিনের খাদ্যতালিকায় দারুচিনি যোগ করতে চাইলে চা, কফি, স্মুদি, ইয়গহার্ট, ওটমিল, ওয়্যাফেলস ও ফলের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।
কালো মরিচ
কালো মরিচে পিপারিন নামে একটি বিশেষ উপাদান আছে যা শরীরের বাড়তি মেদা ঝরাতে সাহায্য করে। এই পিপারিন নিয়ে বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে এই পিপারিনে শরীরের নতুন ফ্যাট সেলের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখে আর এই প্রক্রিয়ায় শরীরের মেটাবলিক চেন রিঅ্যাকশন সৃষ্টি করে এটা শরীরে ফ্যাট নিয়ন্ত্রণে রাখে।
হলুদ
রান্না ছাড়াও ঔষধগুন সম্পন্ন হলুদ। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং হলুদের অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি কার্যকারিতাও রয়েছে যা আমাদের হজম ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি এতে কারকিউমিন নামের যে ফাইটোকেমিকেল তা সরাসরি আমাদের শরীরের যে কোনও ইনফ্লেমেশন কমিয়ে শরীরকে আরাম দেয়। এই কারকিউমিন লেপটিন নামক হরমোনের উত্পাদনে সাহায্য করে এই হরমোন শরীর মেদ কম করে।
লঙ্কার গুঁড়ো
যারা ঝাল খেতে ভালবাসেন এবং লাল লঙ্কা খেলেও কোনও রকম সমস্যা হয় না তারা ওজন কমাতে এই টোটকা কাজে লাগাতে পারেন। লঙ্কার গুঁড়োয় ক্যাপসাইসিন নামক একটি উপাদান আছে যা মেটাবলিজম বাড়িয়ে তোলে। বেশ কিছু গবেষণায় জানা গেছে এই উপাদান ফ্যাট অক্সিডেশন বাড়িয়ে দেয় এর ফলে বেশি পরিমানে বাড়তি ফ্যাট নষ্ট হয়ে যায়।
আদা
আদা ঔষুধগুন সম্পন্ন তা আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। তবে আদা যে ওজনও কমাতে পারে তা হয়ত জানেন না অনেকেই। আদায় একাধিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পাশাপাশি ক্যাপসাইসিন নামক বিশেষ উপাদান রয়েছে যা কিছুক্ষণের জন্য মেটাবলিজমের প্রক্রিয়ার মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। এর পাশাপাশি আদা খাবারের থার্মিক এফেক্ট বাড়িয়ে দেয় তাই খাবারে আদা দেওয়া থাকলে তা খেয়ে তৃপ্তি আসে এবং বার বারে খিদে পায় না।
(ছবি সৌ: Unsplash)