কলকাতা: ভারতের (India) মতো বৈচিত্রময় দেশে রহস্যের শেষ নেই। বিজ্ঞান অনেক রহস্য ভেদ করলেও এখনও কিছু কিছু স্থান ঢাকা রয়েছে রহস্যে। বৈচিত্র্যময় ভারতবর্ষে প্রায় প্রতি বছরই লক্ষ লক্ষ বিদেশি পর্যটক (Tourist) আসেন বৈচিত্র্যের খোঁজে। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা, কচ্ছ থেকে কামাখ্যা যেখানেই যান না কেন কিছু না কিছু দেখে তাক লাগবেই পর্যটকদের। যা কিছুর ব্যাখ্যা মানুষ দিতে পারে না সেটাই তার কাছে রহস্য। আবার ব্যাখ্যা দিলেই তো হল না, তা মন মতোও হতে হবে। তাই তো বিশ্বজুড়ে অদ্ভুদ বা রহস্যময় স্থানের অভাব নেই। ঠিক সেরকমই একটি জায়গা রয়েছে আমাদের দেশে। অরুণাচল প্রদেশ এবং তিব্বতের মধ্যবর্তী সীমানায় অবস্থিত শাংরি-লা উপত্যকা।
শাংরি-লা হল এশিয়ার কুনলুন পর্বতমালার একটি কাল্পনিক স্থান। এই উপত্যকাটিকে বহিঃ বিশ্বের প্রবেশদ্বার বলে মনে করা হয়। যে কোনও বস্তু বা ব্যক্তি এই উপত্যকায় প্রবেশ করলে নাকি তাদের অস্তিত্ব পৃথিবী থেকে মুছে যায়। তারা আর ফিরে আসে না। চিনের সেনাবাহিনী এই স্থানটি বহুবার খুঁজে বের করার চেষ্টা করেও অসফল হয়েছে। বাস্তবে স্থানটির খোঁজ না মিললেও সারা বিশ্বের তন্ত্র জ্ঞান এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলনের সঙ্গে এর নাম জড়িত। এটি নাকি বিশ্বের অন্যতম আধ্যাত্মিক কেন্দ্র।
শাংরি লা উপত্যকার নাম নাকি প্রথম শোনা গিয়েছিল ১৯৩০ সাল নাগাদ। ভারত থেকে পেশোয়ারগামী একটি বিমান মাঝপথে ভেঙে পড়ে। চার ব্যক্তি নিখোঁজ হন। সেই নিখোঁজেরাই নাকি সন্ধান পেয়েছিলেন শাংরি লা উপত্যকার। তাঁরা নিক সেখানে স্বচক্ষে দেকেছিলেন যে ওই উপত্যকায় নিবাসী সাধুদের বয়স থমকে রয়েছে। তারপর সেখানেই থেকে গিয়েছিলেন তাঁরা। আর কখনও ফিরে আসেননি তাঁরা। তবে এই গল্প কীভাবে ছড়িয়ে পড়ল তার সঠিক ব্যাখ্যা কেউ দিতে পারে না।
আরও পড়ুন:Hrithik Roshan | Aamir Khan | Allu Arjun | জব উই মেট
১৯৩৩ সালে ইংরেজ লেখক জেমস হিলটনের ‘লস্ট হরাইজন’ উপন্যাসে এই স্থানের নাম প্রথম শোনা যায়। হিলটন শাংরি-লাকে একটি রহস্যময়, সুরেলা উপত্যকা হিসেবে চিত্রিত করেছেন। হিমালয়ের কোলে অবস্থিত, বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন একটি স্থায়ী সুখি ভূমি নাকি এই শাংরি লা। এই শাংরি লা-তে বসবাসকারী লোকেরা নাকি অমর অথবা স্বাভাবিক আয়ুষ্কালের বাইরে শত শত বছর বেঁচে থাকে। এবং চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ পড়ে অতি ধীর গতিতে।
লেখক অরুণ শর্মা তাঁর বই “দ্য মিস্টিরিয়াস ভ্যালি অফ তিব্বত” দাবি করেছেন যে, এই উপত্যকাটি বায়ুমণ্ডলের ফোর্থ ডায়মেনশন বা চতুর্থ মাত্রা দ্বারা প্রভাবিত যা সময়কে থামিয়ে দেয়। এই উপত্যকায় পৌঁছানোর পরে নাকি মন, আত্মা এবং চিন্তার শক্তি অতিরিক্ত মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। এই স্থানটিকে বলা হয় প্রাচ্যের বারমুডা ট্রায়াঙ্গল।