খেয়ে সুখ শীতকালেই।রকমারি শাকসবজি তো আছেই, রকমারি আমিষ পদ খেয়েও আইঢাইয়ের কষ্ট নেই। তবে অনেকের কাছে এটাই চিন্তা। গত কয়েকদিন যে হারে পারদ নেমেছে তাতে লেপ থেকে বরোতেই ইচ্ছে করে না৷ শরীরচর্চা তো দূর অস্ত্। তার উপর আবার ভাজাভুজি, লুচি, পরোটা, রকমারি মিষ্টি, নলেন গুড়ের সন্দেশ খাওয়ার লোভও সামলানো যায় না। আর তার ফলে বাড়ছে ওজন। মাঝে মধ্যে যে পেটেরও গণ্ডগোল হচ্ছে না, তা-ও নয়। এখন উপায়? যদি বলি আছে। লুচির লোভটা যদি সংবরণ করতে পারেন তা হলে পরোটা খাওয়া চালিয়ে যেতে পারেন। ওজন তো বাড়বে না, বরং কমাতে সাহায্য করবে।
পেঁয়াজের পরোটা
ত্বক ভাল রাখতে পেঁয়াজ ভীষণ কার্যকরী। এতে প্রচুর কোলাজেন থাকে। আর এই কোলাজেন যে আমাদের পক্ষে কতটা কার্যকরী তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তা ছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে কেন ভিটামিন অপরিহার্য তা আর নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। পাশাপাশি এই পেঁয়াজের পরোটা শুধু ওজন কম করতে নয়, সার্বিক ভাবে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
পালং শাকের পরোটা
দিনের শুরুটা যদি পুষ্টি ও স্বাদের সুন্দর মেলবন্ধনে হয় ক্ষতি কী? পালং শাকের তৈরি পরোটা খেলে এটাই হবে। পেটও ভরবে আর মন তো ভরবেই, সঙ্গে সহজে শরীর পাবে একগুচ্ছ পুষ্টিকর পদার্থ। যেমন ভিটামিন বি, ভিটামিন ই ও ভিটামিন কে এবং নানা রকমের ম্যাক্রনিউট্রিয়েন্টস যেমন পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। ক্যালোরির পরিমাণ যথেষ্ট কম। আর হাই গ্লাইসিমিক ইন্ডেক্স থাকায় এটা পেট ভরে রাখবে দীর্ঘক্ষণ। ফলে খাই খাই বাতিক থাকলে তা কমবে। ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
মেথি পরোটা
শীতকালের এই শাক কোন কাজে লাগে না, ওজন কমানো হোক কিংবা ত্বক ভাল রাখা এমনকি চুল ভাল রাখতেও মেথির কার্যকারিতা নিয়ে কথা হবে না! মেথি শাকে রয়েছে প্রচুর ভাল ফাইবার। এই ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়াও মেথিতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি কার্যকারিতা রয়েছে। এর ফলে শরীরে ক্ষতিকারক কোনও পদার্থ সহজে বাসা বেঁধে স্বাস্থ্য ও ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
তবে পরোটা বানাতে গিয়ে এই ভুলগুলো একেবারেই করবেন না
পরোটা বানাতে গিয়ে খুব বেশি ঘি বা তেল ব্যবহার করবেন না। পরোটা সেঁকা হয়ে গেলে তার উপর সামন্য ঘি দিতে পারেন। গরুর তৈরি দুধে ঘি খেলে সহজে ওজন বাড়ে না। বরং স্বাস্থ্যের উপকারী। তবে বাড়িতে তৈরি কিংবা ভেজালমুক্ত ঘি হলে তবেই ভাল ফল পাবেন।
টক দই দিয়ে পরোটা খান। এটা ঠিক বাঙলিরা এই ধরনের খাবারে অভ্যস্ত নয়, কিন্তু ব্রেকফাস্টে হেভি কিছু খেতে হলে প্রোসেস্ড মুইসলির থেকে এই খাবার অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। দইয়ে প্রোবায়োটিক আছে এটা মেটাবলিজম বাড়িয়ে তোলে। এ ছাড়া দই, ফ্যাট বার্নার মানে মেদ ঝরানোর কাজ ভাল করে।
গ্লুটেনে অ্যালার্জি থাকলে গমের বদলে ওটমিল, জোয়ার বা বাজরা ব্যবহার করতে পারেন। মাল্টিগ্রেন খেতে পারেন, এতে শরীরে প্রচুর ফাইবার যাবে। ফলে পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা থাকবে খিদে পাবে কম।
ময়দা ব্যবহার না করাই ভাল। ময়দা খেলে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হতে পারে।
লাল লঙ্কার বদলে জোয়ান ব্যবহার করতে পারেন হজমে সাহায্য করবে।
(ছবি সৌ:Unsplash)