শহরের তীব্র দহন জ্বালায় প্রাণ ওষ্ঠাগত। কাজেও মন বসছে না। আবার এর মধ্যে বাচ্চাদের স্কুলে পড়ে গিয়েছে গরমের ছুটি (Summer Vacation)। শহুরে কোলাহলে আর ক্যাকোফোনিতে অভ্যস্ত রোজকার জীবন থেকে খানিক শান্তি খোঁজে বেরিয়ে পড়ুন। ঘুম থেকে উঠলেই শুনতে পাবেন পাহাড়ি ঝোরার শব্দ, পাখির ডাক। অফবিট বলতে যা বোঝায় তার স্বাদ পাবেন তামাং গাঁওতেই (Tamang Gano )।
পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার (Darjeeling district of West Bengal) সিঙ্গালিলা ন্যাশনাল পার্ক নাম জানা অনেকেরই। সেখানেই ছোট্ট গ্রামটির অবস্থান। ৭ হাজার ফুটের বেশি উচ্চতায় রয়েছে এই গ্রাম! এই গ্রামে সকালে ঘুম ভাঙায় পাহাড়ি ঝরনার শব্দ। তাকে সঙ্গত করে হিমালয়ের অসংখ্য পাখির ডাক। ছোট্ট ছবির মতো সাজানো এই গ্রামে সবুজ আর পাহাড় মিলেমিশে একাকার! এ যেন এক লুকানো স্বর্গ। ‘তামাং গাঁও’-এ পাড়াকের চেন ছুঁয়ে চলেছে নীল আকাশ।
এই গ্রামে তামাং গোষ্ঠীর মানুষদের বাস। এখানকার মানুষদন খুবই সহজ সরল। সারাবছর চাষবাস করে জীবিকা নির্বাহ করে তারা। বনের গাছ-গাছালিতে পাতা ঝরা আপনার মনে শিহরন জাগাবে। তামাং গাঁও থেকেই ছোট্ট নামলা জঙ্গল ট্রেক। সময় লাগে মাত্র ঘন্টা আড়াই তিন। এখান থেকে একদিনে ট্রেক করে পৌঁছে যাওয়া যায় সান্দাকফুতে। সময় লাগে ঘন্টা পাঁচেক। অ্যাডভেঞ্চার চাইলে যেতেই পারেন ব্ল্যাক ফরেস্ট ট্রেকে। পাইনের জঙ্গলের নিশ্ছিদ্র অন্ধকার শিহরণ জাগাতে বাধ্য।
এছাড়াও তিনতালে জঙ্গল ট্রেক, শতাব্দী প্রাচীন মানেদাড়া মনেস্ট্রি, গুমফা, জরায়ো পোখারী লেকও। বসন্তে রডোডেনড্রন গাছে ফুল আসে। চাইলে গাড়ি করে ঘুরে আসতে পারেন ধোত্রে, চিত্রে, লামাধুরা, মেঘমা, টংলু, মুংমুংখোলা, শ্রী খোলা, হ্যাংগিং ব্রিজ, রিমবিক মোনাস্টারি, গুম্বা দাঁড়া ভিউ পয়েন্টও। রাতের দূরে পাহাড়ের দিকে তাকালেই দেখা যায় গা জুড়ে আলোর জোনাকি মিটমিট করে জ্বলছে। পাহাড়ে নিস্তব্ধতায় প্রাণভরে শ্বাস নিতে চাইলে তামাং গাঁও বেছে নিতে পারেন। পায়ে হেঁটে ঘুরলে এই গ্রামের আসল স্বাদ নিতে পারবেন। গ্রাম ছাড়িয়ে খানিকটা উঠলেই আকাশ জুড়ে শুয়ে আছেন ঘুমন্ত বুদ্ধ। কাঞ্চনজঙ্ঘাকে (Kanchenjunga) দেখতে চাইলে অবশ্য ভোরে যাওয়াই ভালো।
কী ভাবে যাবেন
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নামতে হবে। স্টেশনের সামনে থেকে গাড়ি রিজার্ভ করে আসা যাবে তামাং গাঁও। দার্জিলিং থেকেও শেয়ার গাড়ি পাওয়া যাবে। এই গ্রামে থাকার জায়গা বিশেষ নেই। আছে কয়েকটা হোম-স্টে।