কলকাতা: হিন্দু তীর্থযাত্রী থেকে পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের স্থান হল কেদারনাথ (Kedarnath) ধাম। যাঁরা তীর্থ করতে ভালবাসেন তাঁদের কাছে তো বটেই, ট্রেকিং করেন যাঁরা, তাঁদের কাছেও কেদারনাথ ভ্রমণ স্বপ্নের মতো। ইতিমধ্যে কেদারনাথ ধামের দরজা খুলে গিয়েছে ভক্তদের জন্য। মে মাস থেকেই ট্রেক শুরু হয় কেদারনাথের। মে-জুন মাস জুড়ে পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। তারপর বর্ষা ঢুকতেই আবার বন্ধ হয়ে যায় ট্রেকিং। এরপর আবার কেদারনাথ ট্রেকিং শুরু হয় সেপ্টম্বরে। অক্টোবরের শেষে বন্ধ হয়ে যায় কেদারনাথ মন্দিরের দরজা।
তবে এই দুগর্ম এই পাহাড়ি পথ পেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছনো যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। সমতলের এক রকম আবহাওয়া ছেড়ে দুম করে এত উঁচুতে উঠতে গেলে শারীরিক সমস্যা হতে পারে বয়স্কদের। তাই পথে যা কোনও বিপদের সম্মুখীন না হন, তাই কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। সরকারি তরফেও তীর্থযাত্রীদের উদ্দেশে নানা রকম নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তাই কেদারনাথ যাত্রার সময় এই বিষয়গুলি মাথায় রাখুন-
১) বাবা কেদারনাথের মন্দির হিমালয়ের পাহাড়ের মাঝে অবস্থিত। তাই তীর্থযাত্রা করার আগে আবহাওয়া সম্পর্কে জেনে নিন। কেদারনাথ মন্দিরে যাওয়ার সেরা সময় হল মে-জুন মাস এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস। এই সময়ের বাইরে কেদারনাথ মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকে। তাছাড়া বর্ষাকালে না যাওয়াই ভালো। কারণ পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় এখানে ভূমিধসসহ অন্যান্য দুর্যোগের ঝুঁকি থাকেই।
২) কেদারনাথের আবহাওয়া আগে থেকে বোঝা যায় না। ৩, ৫৮৪ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই অঞ্চলের যে কোনও সময় আবহাওয়া পরিবর্তন হতে পারে। তাই আবহাওয়া অনুযায়ী জামাকাপড় বহন করা জরুরি। যেহেতু এখানে সারাবছর ঠান্ডা থাকে, তাই শীতবস্ত্র আপনাকে নিতেই হবে। যেহেতু হেঁটে উঠতে হবে, তাই যত কম জামাকাপড় নেবেন, ততই ভাল। ভ্রমণের সময় ছাতা, রেইনকোট সঙ্গে রাখুন। কারণ পাহাড়ে যে কোনও সময় বৃষ্টি হতে পারে।
৩) কেদারনাথে ষাটোর্ধ্ব তীর্থযাত্রীদের ভিড়ও থাকে। কিন্তু পাহাড়ের পথে হেঁটে কেদারনাথ পৌঁছানো সহজ কাজ নয়। এর জন্য শরীরকেও ফিট হতে হয়। রুদ্রপ্রয়াগ থেকে ৮৬ কিলোমিটারের পথ। তাই সমতল থেকে পাহাড়ে উঠতে একটু কষ্ট হয়। তাই ধাপে ধাপে ট্রেক করুন। একদিনে বেশি পথ হাঁটবেন না। যদি বয়স বেশি হয়, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকে কিংবা বাতের সমস্যা রয়েছে, তাহলে কেদারনাথ যাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৪) সঙ্গে রাখুন প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং শুকনো খাবার। জ্বর, ডায়ারিয়া, বমির ওষুধ, অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম, পেইনকিলার ইত্যাদি সঙ্গে রাখুন। এছাড়া শুকনো খাবার হিসেবে ড্রাই ফ্রুটস, কেক, বিস্কুট, চকোলেট, গ্লুকোজ সঙ্গে রাখুন।
আরও পড়ুন:Ghaseti Begum | কে হবেন ‘ঘসেটি বেগম’ স্বস্তিকা না জয়া!
৫) আগে থেকে হোটেল বুক করে রাখুন। এছাড়া সঙ্গে রাখুন প্রয়োজনীয় নথিপত্র। চারধাম ভ্রমণের জন্য অনুমতি পত্রের প্রয়োজন পড়ে। এর জন্য আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড কিংবা পাসপোর্ট সঙ্গে থাকলেই চলবে।
৬) অনেক সময় মানুষ একদিনে ফেরার কর্মসূচি তৈরি করে, যা ঠিক নয়। সর্বদা সকালে যাত্রা শুরু করুন এবং দর্শনের পরে সেখানে রাতের জন্য বিশ্রাম করুন। পরের দিন গৌরীকুন্ডে ফিরে যাত্রা শুরু করুন।