কলকাতা: কথায় বলে ভ্রমণপিপাসু বাঙালির পায়ের তলায় সরষে৷ তারা সবসময়ই বেড়াতে যাওয়ার জন্য ছুটি খোঁজে৷ একটু ছুটি পেলেই হল, দমবন্ধকর পরিবেশ থেকে একটু মুক্তির বাতাস নিতে অনেকে বেড়িয়ে পড়েন পাহাড়ের টানে। আর বাংলায় পাহাড় মানেই তো মূলত উত্তরবঙ্গ। কিন্তু বর্ষায় বেশিরভাগ পাহাড়ি এলাকায় ভ্রমণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কারণ এখানে পরিবর্তন আবহাওয়ার জন্য অনেক সময় বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। তা বলে কী বাঙালি ঘুরতে যাবে না! আর সে কারণেই বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনায় কিছু বদল আনতে হবে। উত্তরের পাহাড়ে যাওয়ার বদলে চলে যান কর্ণাটকের (Karnataka) গোকর্ণে (Gokarna)। বর্ষার মরশুমে উইকএন্ডের জন্য পারফেক্ট ডেস্টিনেশন এই গোকর্ণ।
কর্নাটক-গোয়া সীমান্তের কাছেই আরব সাগরের তীরে অবস্থিত গোকর্ণ। বালুচর ধরে দক্ষিণ দিকে হাঁটা দিলে সমুদ্রতট গিয়ে মেশে পাহাড়ের সঙ্গে। আবার পাহাড় টপকালেই আরেকটা সমুদ্র সৈকত। নাম কুদলে। অনেক ছোট ছোট সমুদ্র সৈকত রয়েছে গোকর্ণ জুড়ে। সবচেয়ে জনপ্রিয় ওম সমুদ্র সৈকত। সুনীল আরব সাগরের সৌন্দর্য বৃষ্টির দিনে ওমে বসে উপভোগ করতে পারবেন। গোয়া থেকে গোকর্ণ অনেক বেশি নির্মল এবং শান্তিপূর্ণ।
আরও পড়ুন:Lifestyle | চাইলেও ওজন কমাতে পারেন না? রয়েছে বৈজ্ঞানিক কারণ
গোকর্ণের বাসট্যান্ড থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটারের পথ এই ওম সমুদ্র সৈকত। ওমের বালিচরও শেষ হয় কোনও এক পাহাড়ের কাছে গিয়ে। পাহাড় বেয়ে যদি উপরে ওঠেন, তাহলে দেখতে পাবেন নিচের আরব সাগর। পাহাড়ের নিচে উপর আঁছড়ে পড়ছে ঢেউ। পাহাড়ের উপর থেকে ওম সমুদ্র সৈকতকে দেখলে মনে হয়, যেন পাশাপাশি দুটো অর্ধচন্দ্রাকৃতি ‘ও’।
গোকর্ণ, কুদলে, ওম ছাড়াও আরও অনেক সমুদ্র সৈকত রয়েছে এই শহরে। প্যারাডাইস বিচ, হাফ মুন বিচের মতো বেশ কয়েকটি জায়গাও পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়। এই দুই সমুদ্র সৈকতে ট্রেক করেন বহু পর্যটক। গোকর্ণের সমুদ্র সৈকতগুলো একান্তে সময় কাটানো বা কোস্টাল ট্রেকের জন্য আদর্শ। কিন্তু বোল্ডার থাকায় এখানে স্নান করা বিপজ্জনক। এমনকী বোল্ডারে ওঠাও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
সমুদ্র সৈকতই গোকর্ণের মূল আকর্ষণ। এছাড়াও রয়েছে মহাবালেশ্বর মন্দির। এই শিব মন্দিরে তীর্থযাত্রীদের ভিড় বেশি। এটি প্রায় ১৫০০ বছর পুরনো শিব মন্দির। এখানে রয়েছে ৬ ফুট লম্বা শিব লিঙ্গ। এসবের বাইরে খুব বেশি পর্যটক কেন্দ্র নেই গোকর্ণে ঘুরে দেখার মতো। কিন্তু গোকর্ণ থেকে আপনি হোন্নাভার, আঙ্কোলা, কারোয়ারের মতো জায়গাগুলো ঘুরে নিতে পারেন। গোকর্ণ থেকে হোন্নাভার, আঙ্কোলা, কারোয়ার ইত্যাদি ঘণ্টা দু-তিনেকের দূরত্বে অবস্থিত। বাজেট-বান্ধব ট্রিপ করতে সকলেই পছন্দ করেন। পকেট-বান্ধব ছুটির পরিকল্পনা করলে মাত্র ৫ হাজার টাকায় ঘুরে আসতে পারেন। তিন দিনের ছুটিতে অনায়াসে ঘুরে নেওয়া যায় গোকর্ণ।