বর্ষাকাল মানেই একগুচ্ছ রোগের আগমন। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া, হেপাটাইটিসের বাড়বাড়ন্ত। আর এ বছর যে পরিমাণ ভিজেছে শহর! ইতিমধ্যেই জমা জলে দাত নখ বার করতে শুরু করেছে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার জীবাণু। তাই এই নিয়ে বাড়তি সতর্ক থাকার প্রয়োজন। ডেঙ্গু মানেই প্রচণ্ড জ্বর, অসহ্য মাথা যন্ত্রণা, অসম্ভব ক্লান্তিবোধ, শ্বাসকষ্ট ও গা-বমি ভাব। করোনাকালে যত এই ধরনের রোগের থেকে দূরে থাকা যায় ততই ভাল। মশার হাত থেকে যথাসম্ভব নিজেকে ও পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখুন। কিন্তু নেহাত শেষ রক্ষা না হলে কী ভাবে ডেঙ্গুর মোকাবিলা করবেন জেনে নিন-
ডেঙ্গু হলে ভীষণ ভাবে ভেঙে পড় শরীর। প্রভাবিত হয় আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। সেক্ষেত্রে নিত্যদিনের খাদ্যাভ্যাসে কিছু অদলবদল এনে কীভাবে সুস্বাস্থ্য ফিরে পাবেন এই নিয়ে তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও বার্তা তাঁর অনুগামীদের জন্য শেয়ার করেছেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসক ডাঃ দীক্ষা ভাবসর। প্রয়োজনে কাজে লাগাতে পারেন আপনিও-
বিশ্রাম অত্যন্ত আবশ্যক
ডেঙ্গুর কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভীষণ কমে যায়। তাই এই সময় বিশ্রামের খুবই প্রয়োজন। সঠিক বিশ্রাম পেলে তাড়াতাড়ি সেরে ওঠা সম্ভব।
প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে
দিনে অন্তত ৩-৪ লিটার জল খান। ফলের রসও খেতে পারেন। তবে বাজার থেকে কেনা চিনিযু্ক্ত ফলের রস না খাওয়াই ভাল। জলের পাশাপাশি আপনি বাটারমিল্ক, ডাবের জল, পাতি লেবুর জল, মৌরি ভেজানো জল ও টাটকা ফলের রস খেতে পারেন, আরও ভাল হয় যদি গোটা ফল খান, ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন দীক্ষা ভাবসর। শরীরের প্রচুর পরিমাণে তরল পদার্থ যাওয়া মানেই এগুলি থেকে পুষ্টিকর উপাদান সহজেই শুষে নিয়ে তাড়াতাড়ি সেরে উঠবে শরীর।
View this post on Instagram
কোন খাবার খাবেন? এবং কোন খাবার এড়িয়ে যাবেন?
বিভিন্ন ভিটামিন সি যুক্ত ফল যেমন আমলকি, কিওয়ি, কমলালেবু ও আনারস খেতে পারেন। এগুলি শরীরের পক্ষে ভীষণ উপকারী। একইভাবে ভীষণ উপকারী বেদানা ও পেঁপে। পাশাপাশি খেতে পারেন টাটকা শাকসবজি দিয়ে তৈরি ভেজিটেবিল সুপ। ডেঙ্গুর প্রভাবে এই সময় শরীরের হজম প্রক্রিয়ার গতি কিছুটা স্লথ হয়ে যায়। সেকারণে বাড়িতে রান্না করা সহজপাচ্য খাবার খাওয়া ভীষণ প্রয়োজনীয়। এই সময় জাঙ্ক বা প্রসেস্ড খাবার যত পাড়বেন এড়িয়ে যান।
কোন পথে প্রতিকার?
অসুস্থ অবস্থায় দিনে অন্তত ২০ মিলি করে পেঁপে পাতার রস খেতে হবে । এতে শরীরের প্লেটলেট কাউন্ট বাড়বে। এই রস খেতে তেঁতো তাই খেতে অসুবিধে হলে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। আমলকির রস ও গিলয় জুস মিশিয়ে খেতে পারেন। একইভাবে খেতে পারেন হুইটগ্রাসের রস। এগুলি প্লেটলেট কাউন্ট ও ইমিউনিটি বাড়িয়ে তুলতে ভীষণ কার্যকরী বলে জানিয়েছেন ডাঃ দিক্ষ ভাবসর।
সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেলে সূর্যের রশ্মি নিন যাতে শরীর প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি পায়। ডেঙ্গু অনেক সময় ফিরে আসে (Relapse) করে কারণ শরীরে এই ভাইরাসের জীবাণু অনেক সময় থেকে যায়। তাই সুষম আহার খেলে ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করলে সুস্থ থাকবেন। পাশাপাশি মশার কামড়ের থেকে সতর্ক থাকতে বলে। প্রয়োজনে মশকুইটো রিপেল্যান্ট (Mosquito Repellant) ক্রিম বা লোশন সঙ্গে রাখুন।