ফেব্রিয়ারি (February) মাস মানেই ভালবাসার মাস। হাতে গোলাপ মনে বসন্তের ছোঁয়া। এই নিয়েই শুরু হয়ে গিয়েছে এবছরের প্রেমপর্ব। ভালবাসার উৎসব ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে। ভ্যালেনটাইন সপ্তাহের (Valentines Week) তৃতীয় দিন অর্থাৎ ৯ ফেব্রুয়ারি চকোলেট ডে (Happy Chocolate Day) পালন করা হয়। অশেষ প্রেমের একটি চিহ্ন হল চকোলেট। এই দিন নিজের প্রিয় মানুষটাকে চকোলেট দিয়ে মনের কথা না জানালেই নয়। কিন্তু জানেন কি কীভাবে প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে এই চকোলেট ভাগ করে নেওয়ার রীতি শুরু হয়েছিল। চলুন জেনে যাওয়া যাক।
জানিয়ে রাখা ভাল, এই চকোলেট ডে একটি খ্রিস্টান অনুষ্ঠান। সেন্ট ভ্যালেনটাইন (Valentine) সম্মানিত করার এটি একটি বিশেষ দিন। এটি সংস্কৃতির দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসাবে স্বীকৃত কিন্তু কোনও দেশেই সরকারি ছুটির দিন হিসেবে বিবেচিত হয় না। জানা যায়, জে এস ফ্রাই অ্যান্ড সন্স সংস্থা প্রথম ১৮৪৭ সালে শক্ত চকোলেট তৈরি শুরু করে। ভিক্টোরিয়ার যুগে চকোলেট প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে উপহার হিসেবে বেশ বিখ্যাত ছিল। ইউরোপ ও আমেরিকায় ভালোবাসা জানানোর অন্যতম উপহার ছিল এই মিষ্টি।
আরও পড়ুন:Calcutta High Court: বীরভূমে পাথরের গাড়ি থেকে তোলা, হাইকোর্টে মামলা
১৯ শতকে একটি ব্রিটিশ পরিবার তাদের কোকো মাখন ব্যবহার করার পদ্ধতি খুঁজছিলেন। রিচার্ড ক্যাডবেরি নামে এক ব্যক্তি সমাধান বলে দেন। ১৮৬১ সাল নাগাদ জনের দ্বিতীয় পুত্র রিচার্ড ক্যাডবেরি বাবার ব্যবসায় যুক্ত হন। তিনিই ক্যাডবেরি চকোলেটকে রোম্যান্সের সঙ্গে মিশিয়ে প্রচার আরম্ভ করেন। অর্থাৎ, ক্যাডবেরি চকোলেট এমনই এক মুখরোচক খাবার যা যে কেউ তার ভালোবাসার মানুষকে উপহার দিতে পারে। সেই সূত্র ধরে তিনি ১৮৬৮ সালে প্রথম ভ্যালেনটাইন ডে উপলক্ষে এক সপ্তাহ ধরে উপহারযোগ্য রঙিন মোড়কে ক্যাডবেরি চকোলেট বাজারে নিয়ে আসেন। তারপর থেকে প্রায় দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে চকোলেট মানুষের রসনা পরিতৃপ্ত করে আসছে। প্রথম দিকে চকোলেটে স্বাদ আনার জন্য চিনি জাতীয় মশলা মেশানো হত। এখন অবশ্য বিভিন্ন স্বাদের চকোলেট বাজারে পাওয়া যায়।
ভালোবাসার উপহার হিসেবে ক্যাডবেরি চকোলেটের (Chocolate) জনপ্রিয়তা দেখে বছর দশেকের মধ্যে রিচার্ড ক্যাডবেরি বার্মিংহামের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে বিশাল জমি কিনে চকোলেট কারখানা স্থাপন করেন এবং সেই সঙ্গে সেখানকার কর্মীদের জন্য ‘বর্নভিলে’ নামে একটা মডেল গ্রাম তৈরি করেন। পরবর্তীকালে ক্যাডবেরি পরিবার হাসপাতাল নির্মাণ হ বহু জনহিতকর কাজে প্রচুর অর্থ দান করেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চকোলেট তৈরি হওয়া শুরু হলেও জনপ্রিয়তায় ক্যাডবেরি চকোলেটের ধারে-কাছে কেউ পৌঁছতে পারেনি। চকোলেট বলতে এখনও অধিকাংশ মানুষ শুধু ক্যাডবেরিকেই বোঝে।
সে যাই হোক, আজ বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে চকোলেট ডে (Happy Chocolate Day)। আজ নিজের ভালোবাসার মানুষকে দিন এমন উপহার। এতে যেমন গাঢ় হবে প্রেমের রঙ তেমনই সম্পর্কে আসবে মিষ্টতা। সঙ্গে গোলাপ দিতে ভুলবেন না যেন। কারণ গোলাপ হচ্ছে ভালোবাসা প্রতীক। সারা বছর এই সাতটা দিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন অনেকেই। পছন্দের মানুষকে মনের কথা জানানোর এটিই সেরা সময়। তেমনই ভালোবাসার সপ্তাহে চকোলেট ডে (Happy Chocolate Day) একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।