একদিকে ওমিক্রনের বাড়বাড়ন্ত অন্যদিকে তাপমাত্রার পারদের ঘন ঘন ওঠানাম, সর্দি, কাশি, জ্বর, নাক বন্ধ, নিশ্বাস নিতে কষ্ট থেকে শ্বাসকষ্ট। ইদানীং অনেকেই এই কষ্ট ভুগছেন। শ্বাসকষ্ট যাতে বাড়বাড়ি পর্যায় না পৌঁছায় তার জন্য বাড়িতে ইনহেলার থাকলে অনেক ক্ষেত্রেই সুবিধে হয়। বিশেষ করে যাদের দীর্ঘ দিনের হাঁপানির সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে এটা অত্যন্তু উপকারী। তবে ইনহেলার নিয়ে অনেকের মনেই নানা রকমের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যেগুলি ভিত্তিহীন। আপনিও এরকম কোনও ভ্রান্ত ধারণার শিকার নন তো। যেমন-
হাঁপানি, এমন একটা দীর্ঘমেয়াদি ব্যাধি যে ইনহেলারের মাধ্যমে ওষুধের ব্যবহার এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার একেবারে মোক্ষম উপায়। এই রোগ সচরাচর পুরোপুরি সারে না তাই হাঁপানির রোগীদের জন্য ইনহেলার লাইফলাইনের থেকে কিছু কম না। যেমন একবার সুগার বা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সারা জীবন খেয়ে যেতে হয় সে রকমই এই ইনহেলার হাঁপানির রোগীদের জন্য ভীষণ উপকারী।
অনেকের ধারণা ইনহেলারে স্টেরয়েড থাকায় হাড়ের সমস্যা বা হাড়ের বিকাশে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন ইনহেলারে স্টেরয়েডের পরিমান খুবই কম মাত্রায় থাকে মাইক্রোগ্রামে যা অন্য অনেক ওরাল স্টেরয়েডের তুলনায় নগন্য। পাশাপাশি ইনহেলারে থাকা স্টেরয়েড হাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরে ঢোকে। তাই বড়িতে থাকা স্টেরয়েডের আমাদের শরীর যতটা শুষে নেয় ততটা ইনহেলারের থাকা স্টেরয়েডের ক্ষেত্রে হয়না। এখানেই শেষ হাঁপানির সমস্যায় যদি এই স্টেরয়েডের ব্যবহার না করা হয় তা হলে বরং হিতে বিপরীত হতে পারে। বাচ্চাদের এই সমস্যা থাকলে তাদের বেড় ওঠার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়।
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে তীব্র শ্বাসকষ্টের সময় ওষুধ খেলে তা কাজ করতে অনেকটা সময় নেই সেক্ষেত্রে ইনহেলারে কাজ হয় খুব দ্রুত। এতে রোগীর কষ্ট যেমন কম হয় তেমন আবার বেশি ওষুধ খেতে হয় না। চিকিত্সকরা জানিয়েছেন সাধারণত ২মিলিগ্রাম অ্যাস্থালিন ট্যাপলেট ২০টা পাফ নেওয়ার সমান।
হাঁপানির টান উঠলে শুধু যে রোগীর আরাম হয় তা নয় বরং নিয়মিত ইনহেলারের ব্যবহারে হাঁপানিকে নিয়ন্ত্রণে রাখে । হাঁপানির পুরোপুরি কখনই সারে না তাই সময় মতো চিকিত্সা না করলে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। তাই প্রয়োজন মতো অল্প সমস্যা হলেও ইনহেলার ব্যবহার করা উচিত যাতে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক না হয়ে পড়ে।
হাঁপানি এমন একটা অসুখ যে একবার হলে পুরোপুরি সারে না। তবে ছোটবেলায় যাদের অ্যাজমার টেন্ডেন্সি থাকে তাদের নিয়মমতো শরীরচর্চা ও সঠিক চিকিত্সার মাধ্যমে হাঁপানির হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব। কিন্তু একবার হয়ে গেলে এই অসুখ সঠিক ওষুধ ও ইনহেলারের ব্যবহারে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে ওষুধও খেতে হয় না । তবে তার মানে এটা নয় যে অসুখ একেবারে সেরে গেছে। এক্ষেত্রে ইনহেলার সবসময় সঙ্গে রাখা ভাল।
(ছবি সৌ: Unsplash)