কলকাতা: সন্তানের ভবিষ্যৎ সুন্দর করার পেছনে বাবা-মায়ের (Parents) অবদান সব থেকে বেশি। একজন সন্তানের (Child) আত্মবিশ্বাস সর্বপ্রথম গড়ে ওঠে তার বাবা-মায়ের কাছ থেকেই। কীভাবে মানুষের সঙ্গে আচরণ করতে হয়, কীভাবে যেকোনও প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করতে হয় সে শিক্ষাও পায় পরিবার থেকে। আত্মবিশ্বাস অর্জনের শিক্ষাও তারা পরিবার থেকে পেয়ে থাকে। সন্তান আত্মবিশ্বাসী হলে সকল প্রকার ভয়, বাধাকে অতিক্রম করতে পারে। কিন্তু সমস্যা হল, অনেক বাবা-মা এই বিষয়টা অনুধাবনই করতে পারেন না যে তাঁদের সন্তানের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে। আর তাই সন্তানের ব্যর্থতার জন্য তাদেরকে আরও বেশি করে বকাঝকা করতে থাকেন, যা তাদের আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে দেয়। তাই জেনে নিন কীভাবে সন্তানের আত্মবিশ্বাস বাড়াবেন।
১) পাশে থাকতে হবে- সাফল্য এবং ব্যর্থতা দুইই জীবনের অঙ্গ। আর এই দুই সময়েই বাবা-মাকে সন্তানের পাশে থাকতে হবে। তাকে বোঝাতে হবে যে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই, আমরা সবসময় তোমার পাশে আছি। এই বিষয়টা একবার তার মাথায় ঢুকিয়ে দিতে পারলেই উপকার পাবেন। সন্তানের কনফিডেন্সের পাত্র পরিপূর্ণ হতে আর সময় লাগবে না। তাই এই কৌশলটা সবার প্রথমে ব্যবহার করুন।
২) প্রশংসা করতে হবে- সব ক্ষেত্রে সন্তান সফল হবে না তা স্বাভাবিক। সন্তান যদি কোনো কাজে হেরে যায় তাহলে তাকে তিরস্কার করবেন না। সন্তানের প্রচেষ্টার প্রশংসা করাটাই সবচেয়ে বড়। হারার কারণে তাকে লজ্জা না দিয়ে সে যে চেষ্টা করেছে তার জন্যই প্রশংসা করুন। এতে সে বারবার চেষ্টা করার উৎসাহ পাবে। আর সন্তান যদি কোনও ভুল করে, তাহলে না বকে সমস্যা সম্পর্কে বুঝিয়ে বলুন। তাহলেই কিন্তু ছোট্ট প্রাণ নিজের ভুল বুঝতে পারবে। এমনকী তার আত্মবিশ্বাস বাড়তেও সময় লাগবে না।
৩) তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে- সন্তানের উপর সব ব্যাপারে নিজের মত চাপিয়ে দিলে তাদের আত্মবিশ্বাস কমতে বাধ্য। তাই সব ব্যাপারে নিজের মত চাপিয়ে দেওয়ার বদভ্যাসটা এবার ছাড়ুন। বরং সময় বিশেষ বাড়ির খুদে সদস্যের কথাও শুনতে হবে। তার মনের মতো পদ বাড়িতে রান্না করুন, তার মনের মতো টিভি চ্যানেল সবাই মিলে বসে দেখুন। এতে সন্তান নিজেকে পরিবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসাবে মনে করবে। এমনকী তার আত্মবিশ্বাসও বাড়বে কয়েকগুণ। তাই এই কৌশল ব্যবহার করতে ভুলবেন না!
আরও পড়ুন:Recipe | Bhapa Paneer| ইলিশ বা চিংড়ি নয়, নিরামিষের দিনে বাড়িতে বানিয়ে ফেলুন ‘ভাপা পনির’
৪) বন্ধুর মতো ব্যবহার করুন- সন্তানের সঙ্গে আপনার দূরত্ব কমিয়ে ফেলতে হবে। তার সঙ্গে যত তাড়াতাড়ি বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি করতে পারবেন, ততই মঙ্গল। একমাত্র বন্ধুর মতো মিশতে পারলেই সে নিজের সমস্যার কথা অভিভাবকের কাছে বলবে। আর তার সমস্যার কথা জানা মাত্রই আপনাদের কাজ শুরু। একজন দায়িত্ববান মাতা-পিতা হিসাবে আপনারা তার সমস্যার সমাধান করার কাজে উদ্যত হন। এতেই দেখবেন সন্তান বুঝবে যে আপনারা তার পাশে রয়েছেন। ফলে তার আত্মবিশ্বাস বাড়তে সময় লাগবে না।
৫) পছন্দের বিষয় বেছে নিতে সাহায্য করুন- সবাই সব বিষয়ে ভালো হয় না। তাই সন্তানের দক্ষতার জায়গাটা আপনাকে ছোট থেকেই বুঝে নিতে হবে। আর তারপর সেই কাজেই তাকে উৎসাহ দিন। এই কাজটি করলেই খুব ছোট বয়সে সন্তান নিজের দক্ষতার বিষয়টা চিনে ফেলবে, আর বাকি সবার থেকে আপনি জীবনযুদ্ধে অনেকটাই এগিয়ে যাবে। তাই ছোটদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে চাইলে এই কাজটা অবশ্যই করতে হবে।