আইনজীবী-মুখ্যমন্ত্রীর মর্যাদাহানির চেষ্টায় সিবিআই। প্রতিবাদে সরব রাজ্য বার কাউন্সিল। রাজ্য বার কাউন্সিল নথিভূক্ত তিন আইনজীবীকে পরিকল্পিতভাবে হেনস্থা করছে সিবিআই। নথিভূক্ত আইনজীবীদের আইনি পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে গুরুতর এই অভিযোগ আনলেন বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অশোক দেব। তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং সাংসদ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় বার কাউন্সিলের নথিভূক্ত আইনজীবী হওয়া সত্ত্বেও, কলকাতা হাইকোর্টে এক মামলায় তাঁদের অসাংবিধানিকভাবে জড়ানোর চেষ্টা করছে সিবিআই। এই ধরণের কাজ শুধু আইনের পরিপন্থিই নয়, এধরণের কাজ করে সিবিআই এ রাজ্যের আইনজীবীদের মর্যাদা ভূলুন্ঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে, বলেন অশোকবাবু। তাঁর আরও দাবি, পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিল রাজ্যের আইনজীবী এবং আইন প্রক্রিয়া সুরক্ষায় দায়বদ্ধ। বার কাউন্সিল সাংবিধানিকভাবে আইনজীবীদের রক্ষাকবচ। কিন্তু বর্তমানে আইনজীবীরা মক্কেলদের আইনি সহায়তা দিতে গিয়ে সিবিআইয়ের হেনস্থার শিকার হচ্ছে। এদিকে রাজ্য বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করেছেন। এই চিঠি হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হবে। দেওয়া হবে সিবিআইয়ের সদর দফতরেও। চিঠিতে বলা হয়েছে, আমরা বিচারব্যবস্থা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে বলছি, যেভাবে হাইকোর্টে একটি চিঠির ভিত্তিতে রাতের অন্ধকারে কোর্ট বসিয়ে, বিরোধী পক্ষকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে, একতরফা রায়দান করা হয়, তা আইনি প্রক্রিয়া নয়। জনমানসে আইনি পদ্ধতিকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করানো হয়েছে। বিশেষত, নিম্ন আদালতের জামিনের নির্দেশ, সিবিআইয়ের হাতে সন্ধ্যা ৬টা ৩০-এ এসে পৌঁছয়। দফতরে পৌঁছে যাওয়ার পরেও চার অভিযুক্তকে জামিনে মুক্তি না দিয়ে বেআইনিভাবে সিবিআই দফতরে ৪ ঘন্টা বসিয়ে রাখা হয় হাইকোর্টের নির্দেশের জন্য। এই কাজ নিন্দনীয়। রাজ্য বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অশোক দেব ও কাউন্সিলের অন্য সদস্যরা গোটা ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা করছেন। বার কাউন্সিল জানিয়েছে, বিগত দিনের মতো আইনজীবীদের স্বার্থে এবং এ ধরণের ঘটনার প্রেক্ষিতে তারা তিন আইনজীবীর পাশে আছে।
অন্যদিকে বার কাউন্সিলের ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য আনসার আলি মণ্ডল বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং সাংসদ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় তিনজনেই আইনজীবী হওয়ায়, সিবিআইয়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে থাকলে নিয়মমতো তা বার কাউন্সিলে জানাতে হয়। অভিযোগ জানানোর জায়গা হাইকোর্ট নয়। বার কাউন্সিলে অভিযোগ জানালে ডিসিপ্লিনারি কমিটি তা ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে। ওই কমিটিতে রাজ্যে যেমন অ্যাডভোকেট জেনারেল আছেন, তেমনই ইন্ডিয়ান বার কাউন্সিলে সলিসিটার জেনারেলও রয়েছেন।