কলকাতা: ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ৩০ সেপ্টেম্বর ওই কেন্দ্রে ভোট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে ভবানীপুর কেন্দ্রেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। কিন্তু কেন বাকি আসনে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হল না? এই প্রশ্ন উঠছে। লিখিত বিবৃতিতে তার জবাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
গত ১ অগস্ট বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন। এই অতিমারির সময়ে উপনির্বাচন করার মত আদৌ পরিস্থিতি আছে কিনা জানতে চাওয়া হয় মুখ্যসচিবদের কাছে। একইসঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও ভার্চুয়াল বৈঠকে আলোচনা হয়। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো শুরু হয়ে যাবে। একইরকমভাবে অন্যান্য রাজ্যেও দশেরা বা গনেশ চতুর্থীর মত উৎসব রয়েছে। এইসব উৎসবের সময় কোভিড সংক্রমণ রুখতে বেশ কিছু নির্দেশিকা পাঠিয়ে দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন যে রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর দফতরে জমা দিয়েছে তাতেও আশঙ্কা অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহেই তৃতীয় ঢেউ আসতে চলেছে। তাই ভোট করতে হলে আগেই করতে হবে দাবি জানায় পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশার মত রাজ্যগুলো।
নির্বাচন কমিশনের এই সেই বিবৃতি
রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানান, পশ্চিমবঙ্গের কোভিড পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। একই সঙ্গে জানান, যে সমস্ত কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে সেখানে বন্যা পরিস্থিতির কোনও প্রভাব নেই। ভার্চুয়াল বৈঠকে হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সংবিধানের ১৬৪ (৪) ধারার প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বলেন, সংবিধানের ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনও মন্ত্রী যদি ৬ মাসের মধ্যে বিধান পরিষদীয় দলের প্রতিনিধি হতে না পারেন সেক্ষেত্রে সংবিধানের নিয়ম মেনে তাঁর মন্ত্রিত্ব পদ খোয়া যাবে। তখন সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে। সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে রাজ্যে সাংবিধানিক সংকট এড়াতে ভবানীপুর কেন্দ্রে যাতে উপনির্বাচন হয় নির্বাচন কমিশনের কাছে সেই আবেদন রাখেন মুখ্যসচিব। যাতে ওই কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেননা ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচনে জিতে আসতে না পারলে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে হত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী
আরও পড়ুন: ভবানীপুর উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা, ৩০ সেপ্টেম্বর ভোট
রাজ্যের এই বিশেষ আবেদন খতিয়ে দেখার পর ভবানীপুর ছাড়া বাকি ৪ টি কেন্দ্রে উপনির্বাচন আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। একই সঙ্গে রাজ্যের দুটি বিধানসভা কেন্দ্র সামসেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুর কেন্দ্রে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। অন্যান্য যে সকল রাজ্যে ভোট বাকি রয়েছে সেখানে উৎসব মিটলে তবেই দিনক্ষণ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন: সাধারণের প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে দিল্লি বিধানসভার সুড়ঙ্গে: স্পিকার