কলকাতা: আড়ি পাতা কাণ্ডে তদন্ত কমিশন গঠন করল রাজ্য৷ দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ একজন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এমভি লকুর৷ দ্বিতীয়জন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য৷ কীভাবে ফোন হ্যাকিং হয়েছে, কার কার ফোন হ্যাক করা হয়েছে তাঁরা খতিয়ে দেখবেন৷ গোটা ঘটনার তদন্ত করা করা হবে৷ সোমবার দিল্লি যাওয়ার আগে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একথা জানিয়েছেন৷
আরও পড়ুন- প্রাক্তন সেনাকর্মী থেকে RAW এজেন্ট, আড়ি পাতা তালিকায় নিরাপত্তারক্ষীরাও
তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, বিজেপি সরকার ‘স্পাইগিরি’ করছে৷ আড়ি পাতা বন্ধ করতে তিনি ফোনের ক্যামেরায় লিউকোপ্লাস্ট লাগিয়ে রেখেছেন৷ চরবৃত্তি নিয়ে মন্ত্রীদের সতর্ক করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সূত্রের খবর, কথা বলার জন্য মন্ত্রীদের পুরোনো মডেলের ফোন ব্যবহারের নিদান দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি মনে করেন, স্মার্টফোনের আগে যে ফোনের চল ছিল সেগুলি তুলনামূলক নিরাপদ৷ তাতে কথা বলা যেতে পারে৷ তাই বলে স্মার্টফোন ব্যবহার করতে বারণ করেননি৷ কিন্তু আধুনিক অ্যান্ড্রয়েড বা আইফোন শুধু মাত্র শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য ব্যবহার করতে বলেছেন৷ দল বা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কথা দামী ফোনে করতে বারণ করেছেন৷ খুব জরুরি কথা হলে সামনে ডেকে বলতে বলা হয়েছে৷ কিন্তু দামী ফোনে নৈব নৈব চ৷
Journalists, political opponents, members of the judiciary, cabinet colleagues… now, not even the ARMY spared. There is no ambiguity here.
This is a CRIME. Who is responsible ? #Pegasus
Discus this in #Parliament today. PM-HM must answer. https://t.co/tExe7EMi4e
— Derek O'Brien | ডেরেক ও'ব্রায়েন (@derekobrienmp) July 26, 2021
আরও পড়ুন- কলকাতা হাইকোর্টের সমস্যা মেটাতে বৈঠক ডাকলেন প্রবীণ বিচারপতি
শহীদ দিবসের মঞ্চ থেকে পেগাসাসকাণ্ড নিয়ে সুপ্রিমকোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিট গঠন করে সম্পূর্ণ বিষয় নিয়ে তদন্তের আর্জি জানান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের কাছে। বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল পেগাসাসকাণ্ড নিয়ে। আইনজীবী এমএল শর্মা ইজারায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাসের মাধ্যমে দেশের নেতা-মন্ত্রী থেকে ও সাংবাদিকদের মোবাইলে নজরদারি চালানো নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়ে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন।
আরও পড়ুন- বিকেলে দিল্লিতে মমতা, অভিষেক না মুকুল কোন ঠিকানায় উঠবেন তৃণমূল নেত্রী?
পেগাসাস নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। শুধু ভারত নয়, বিশ্বের আরও বেশ কয়েটি দেশে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কারণ, বিশ্বের ১৭টি সংবাদ সংস্থা তদন্ত চালিয়ে প্রায় ৫০ হাজার ফোন নম্বরের তথ্যভান্ডার প্রকাশ্যে এনেছে। কারণ, এই নম্বর গুলিতে ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও-র তৈরি সফটওয়্যারের মাধ্যমে আড়ি পাতা হয়েছে বলে অভিযোগ। ফোনে কী কথাবার্তা হয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপে কী আদান-প্রদান হয়েছে, ফোনে কী তথ্য, নথি, ছবি রয়েছে সেটাও দেখা হয়েছে। অথচ যাঁর মোবাইল হ্যাক করা হয়েছে, তিনি জানতেই পারেননি।
আরও পড়ুন- মহারাষ্ট্রে বন্যা ও ভূমিধসে মৃত শতাধিক, চলছে উদ্ধারকার্য
দেশীয় সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য ওয়ারে’র রিপোর্টে প্রকাশ, এই পেগাসাস স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে ভারতের সরকার ও বিরোধী পক্ষের নেতা, মন্ত্রী থেকে শুরু করে ৪০ জনের বেশি সাংবাদিক, শিল্পপতি, সমাজকর্মী, বিচারপতিদের ফোন হ্যাক করা হয়েছে। গোটা প্রক্রিয়াটা সরকারই করেছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। কিন্তু, পেগাসাস স্পাইওয়্যার সরকার কিনেছিল কি না তা স্পষ্ট করছে না। অথচ, পেগাসাস স্পাইওয়্যার নির্মাণ সংস্থা এনএসও-র বক্তব্য, শুধুমাত্র সন্ত্রাসী এবং শিশু যৌন নির্যাতনকারী, মাদক ব্যবসায়ী বা মানব পাচারকারীদের মত গুরুতর অপরাধীদের নজরদারি করার শর্তেই নির্বাচিত সরকারকে এই সফটওয়্যার বিক্রি করা হয়।