কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: চার স্তম্ভের উপর দাঁড় করিয়ে দেশের অর্থনীতির হাল ফেরানোর কথা বললেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ (Union Budget 2022)। উৎপাদন, পরিবেশমুখী পরিকল্পনা, আর্থিক বিনিয়োগ এবং প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি পরিকল্পনা, এই চার স্তম্ভের উপরেই কেন্দ্রীয় বাজেটের মূল কাঠামোকে দাঁড় করাতে চেয়েছেন নির্মলা সীতারমণ (Nirmala Sitaraman)। অর্থমন্ত্রীর বড় ঘোষণার মধ্যে রয়েছে, দেশের অর্থনীতিতে স্বতন্ত্র ডিজিটাল মুদ্রা চালু, সবমিলিয়ে ১৪টি ক্ষেত্রে ৬০ লক্ষ নতুন চাকরি, পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি। ২০২২-২৩ আগামী আর্থিক বছরের জন্য উন্নয়নের হার ৯.২ শতাংশে বেঁধে দিয়েছেন নির্মলা সীতারমণ।
অতিমারির সময় আর্থিক বৃদ্ধির গতিকে চাঙ্গা করতে বাজেট বরাদ্দের ৩৫ শতাংশ মূলধনি ব্যয় হিসেবে দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। টাকার অঙ্কে যা সাড়ে সাত লক্ষ কোটি। কেন্দ্রের আশা এতে করে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে, অর্থনীতির বৃদ্ধি গতি পাবে। প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি প্রকল্পের আওতায় কর্মসংস্থান এবং পরিকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজ্যগুলিকে সুদমুক্ত ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাজেটে। বরাদ্দ করা হয়েছে ১লক্ষ কোটি টাকা। আগামী পঞ্চাশ বছরের জন্য দেশের বিভিন্ন রাজ্য এই অর্থ একাধিক প্রকল্পে কাজে লাগাতে পারবে।
স্বাধীনতার ৭৫ বছরে আগামী ২৫ বছরে দেশের আর্থিক দিশা কোন পথে যাবে, তার একটা ব্লু-প্রিন্ট দেখানো হয়েছে সাধারণ বাজেটে। ২০৪৭ সালে স্বাধীনতার একশো বছর। ওই সময়ের মধ্যে শহরগুলোর জনসংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশে পৌঁছবে। বাজেটে তাই নাগরিক জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে, পরিবেশমুখী গ্রিন সিটি বা সবুজ শহর তৈরির দিকে জোর দেওয়া হয়েছে। জনসংখ্যার ভারে শহরগুলো যাতে একেবারে স্তব্ধ হয়ে না পড়ে তার জন্য নতুন নতুন শহর তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে বাজেটে। বরাদ্দ করা হয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। জোর দেওয়া হয়েছে কার্বনমুক্ত যান, প্রযুক্তি এবং সৌরক্ষমতা নির্ভর শহর তৈরির উপর।
আরও পড়ুন Budget 2022: কৃষক-গরিব-মধ্যবিত্তের জন্য কিছুই নেই
ডিজিটাল মুদ্রায় লেনদেন ও বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে কেন্দ্র আলাদা করে ব্যাংক ব্যবস্থা চালু করার কথা ঘোষণা করেছে। চালু হতে চলেছে দেশের স্বতন্ত্র ডিজিটাল মুদ্রা। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের একটা বড় অংশ এখন ক্রিপ্টো কারেন্সিতে বিনিয়োগে অভ্যস্ত। ভবিষ্যতে এই ধরনের লেনদেন থেকে বিপুল পরিমাণ কর আদায়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে কেন্দ্র। তাই ভারচুয়াল সম্পদ এবং মুদ্রা লেনদেনের আয়ের উপরে ৩০ শতাংশ কর ধার্য করা হয়েছে বাজেটে।
আয়করের ঊর্ধ্বসীমা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। তবে করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমা করার জন্য বাড়তি সময় দেওয়া হয়েছে। মোট আয়ের উপর যে কর দিতে হয়, সেই সংক্রান্ত ফাইল জমা দিতে এখন দু’বছর পর্যন্ত সময় পাবেন আয়করদাতারা। প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি মাস্টার প্ল্যানে এক্সপ্রেসওয়ে তৈরির কথা বলা হয়েছে। যাতে সাধারণ মানুষ এবং পন্য চলাচলের গতি বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন Union Budget 2022: বাজেটে বাড়ল কী কী, কমল কীসের দাম
যদিও বিরোধীদের বক্তব্য, কেন্দ্রের এই বাজেট মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত সাধারণ মানুষের জন্য নয়। বাজেটকে পুঁজিবাদি বাজেট বলেছে কংগ্রেস। একশো দিনের কাজ, ভোজ্য তেল, ফসলবিমা, গণবন্টন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ভরতুকি কাটছাঁট করার জন্য কেন্দ্রকে বিঁধেছে বিরোধীরা।