কলকাতা: বিকাশ ভবনের সামনে শিক্ষিকাদের আন্দোলন নিয়ে মুখ খুললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি আন্দোলনকারীদের বিজেপি ক্যাডার বলে তোপ দেগেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যারা আন্দোলন করছেন তাঁরা শিক্ষক-শিক্ষিকা নন। তাঁরা বিজেপি ক্যাডার।
বিগত দুই বছর ধরে শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকারা আন্দোলন করে আসছিলেন। অগাস্টের মাঝামাঝিতেও শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ নিজেদের দাবি জানাতে বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলন করেছিল। মঙ্গলবার সেই আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায় পৌঁছয়। বিকাশ ভবনে পুলিশের সামনেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন কয়েকজন শিক্ষিকা ।
শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চের ৫ শিক্ষিকা বিষ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তৎক্ষণাৎ তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই ৫ জন শিক্ষিকার মধ্যে ২ জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় এখনও এনআরএসে ভর্তি রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষিকাদের প্রতি সমবেদনার বদলে কার্যত তোপ দাগলেন শিক্ষামন্ত্রী।
ফেসবুক পোস্টে তিনি অতীতের পরিস্থিতিতের সঙ্গে শিক্ষিকাদের বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের (এসএসকে) সহায়ক এবং প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্রের (এমএসকে) সহায়কদের বর্তমান পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে।
ফেসবুক পোস্টে ঠিক কী বলেছেন তিনি?
• বাম সরকারের আমলে পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন বিভাগের অধীনে SSK এবং MSK-র সহায়ক/সহায়িকা, সম্প্রসারক/সম্প্রসারিকারা নামমাত্র সাম্মানিক-এর বিনিময়ে কাজ করতেন। কাজের নিশ্চয়তা, আর্থিক নিরাপত্তা এবং অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা বলে কিছু ছিল না।
কিন্তু
মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার ১লা ডিসেম্বর, ২০২০ থেকে SSK এবং MSK-গুলিকে বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগের অধীনে এনে একটি সুসংবদ্ধ রূপ দেয়।
• সহায়ক সহায়িকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে মাসিক ১০৩৪০ টাকা এবং সম্প্রসারক সম্প্রসারিকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে ১৩৩৯০ টাকা করা হয়। এছাড়াও বাৎসরিক ৩%বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট চালু করা হয়েছে।
• প্রত্যেককে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে নিয়ে আসা হয়েছে।
• যাঁরা ৬০ বছর বয়সে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন, তাঁদের অবসরের সময়ে প্রত্যেকের জন্য ৩ লাখ টাকা এককালীন অবসর-ভাতা চালু করা হয়েছে। বাকিদের জন্যও এই সুবিধা দানের বিষয়ে অর্থ দপ্তরের সঙ্গে ফাইল চলছে।
• ৬০ বছর বয়েসে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত যাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের জন্য ১/২/২১ থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করা হয়েছে।
• মহিলাদের জন্য সরকারি নিয়মানুযায়ী মাতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
• এছাড়াও প্রত্যেককের জন্য চিকিৎসা সংক্রান্ত সহ বাৎসরিক ১৮ দিন ক্যাজুয়াল লিভ বা ছুটির অধিকার দেওয়া হয়েছে।
এই তুলনার পরেই তিনি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে লেখেন, ‘তারপরেও যারা আন্দোলন করছেন, তারা শিক্ষক শিক্ষিকা নন, বিজেপি ক্যাডার।’