সকল মহিলার আইনসম্মত গর্ভপাতের অধিকারে সিলমোহর সুপ্রিম কোর্টের। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, নিরাপদ ও আইনসম্মত গর্ভপাতে অধিকার রয়েছে মহিলাদের। এর মধ্যে কে বিবাহিত, কে অবিবাহিত তার বিভাজন করা অসাংবিধানিক। বৃহস্পতিবার একটি মামলার রায়ে গর্ভপাত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিবাদ-বিসম্বাদের মীমাংসা করে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং বিচারপতি জে বি পারিড়ওয়ালাকে গঠিত বেঞ্চ গর্ভপাতের ক্ষেত্রে বিবাহিত ও অবিবাহিত মহিলার মধ্যে বিভাজনরেখা ছিন্ন করে দিয়েছে। ভারতের মেডিক্যাল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি (MTP) অ্যাক্টকে উল্লেখ করে বেঞ্চ বলেছে, এক্ষেত্রে ওই মহিলা বিবাহিত না অবিবাহিত তা আরোপ করা মনগড়া। সংবিধানে তার কোনও স্বীকৃতি নেই। এটা ধরে নেওয়া হয় যে, বিবাহিত মহিলারাই কেবলমাত্র যৌন সংসর্গ করার অধিকারী।
আরও পড়ুন: Monkeypox Vaccine: মাঙ্কিপক্স ভ্যাকসিন অত্যন্ত কার্যকরী, প্রাথমিক গবেষণায় উঠে এল তথ্য
২৪ সপ্তাহ গর্ভধারণের পরও গর্ভপাত করার অধিকার যে কোনও মহিলার আছে, তা বোঝাতে গিয়ে এ সংক্রান্ত আইন ও বিধির উত্থাপন করে বেঞ্চ। যদিও এই আইনবিধিকে সময়োপযোগী করে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেছে বেঞ্চ। বর্তমান সমাজের চাহিদা ও বাস্তবতার কথা চিন্তা করে পুরনো ধ্যানধারণার বাইরে বেরিয়ে নতুনের কথা চিন্তা করা উচিত বলে মনে করে আদালত। এ সংক্রান্ত আইনটি ১৯৭১ সালের। বেঞ্চ উল্লেখ করেছে, তার পর থেকে এই আইনে সংশোধন আনা হয়নি। তখনকার সময়ে গর্ভপাতের জন্য কেবলমাত্র বিবাহিত মহিলাদের কথাই ভেবে আইন প্রণয়ন হয়েছিল।
দেশের মহিলাদের সন্তান ধারণের স্বাধীনতা ও শারীরিক স্বাধিকারের বিষয়ে এক যুগান্তকারী রায় দিল এদিন সুপ্রিম কোর্ট। গর্ভপাতের সময় কোনও স্ত্রী যদি দাবি করেন, তাঁকে গর্ভধারণে বাধ্য করা হয়েছে, তাহলে সেটাকে বৈবাহিক বা দাম্পত্য ধর্ষণ বলে গণ্য করা হবে। এটাও রায়ে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, বিবাহিত মহিলাও ধর্ষণের শিকার হতে পারেন। কারণ ধর্ষণ মানে সম্মতি ছাড়া যৌন সঙ্গম। এক্ষেত্রে সেই মহিলাকে জোর করে গর্ভধারণে বাধ্য করা হয়। এমটিপিতে এই ধরনের গর্ভধারণকে ধর্ষণ বলে অন্তর্ভুক্ত করার কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যাকে স্বামীর দ্বারা জোর করে যৌন সঙ্গমের ফলে গর্ভধারণ বলে বর্ণনা করেছে শীর্ষ আদালত।