Placeholder canvas
কলকাতা সোমবার, ০৬ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
Mughal Era & Sanskrit Literature | মুঘল যুগে রচিত সংস্কৃত সাহিত্যে সম্রাট-নিজামদের প্রশংসা-কারনামা, সেসবও কি মুছে ফেলা হবে?
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  Buddhadeb Pan
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৩, ০৬:২৭:১৪ পিএম
  • / ৪০৮ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • Buddhadeb Pan

নয়াদিল্লি: ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেইনিং (National Council of Educational Research and Training – NCERT) সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যবই (History Text Book of Class 12) থেকে মুঘল সাম্রাজ্যের (Mughal Empire) অধ্যায় বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্কুলের পাঠ্যবই থেকে মুঘল ইতিহাসের অধ্যায় বাদ দেওয়ার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন মহলে নানান প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও সমালোচনার (Criticism) ঝড় উঠেছে। যোগীরাজ্য অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) রাজ্য সরকার বলেই দিয়েছে, সেখানকার সরকারি স্কুলগুলিতে এনসিইআরটি’র দ্বাদশ শ্রেণির সেই পাঠ্যপুস্তুকগুলিই গ্রহণ করা হবে, যেগুলিতে মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টা নতুন নয়। এর সূচনা গত বছর। পাঠকক্রম যৌক্তিককরণ বা সিলেবাস ব়্যাশনালাইজেশন (Syllabus Rationalization) অনুশীলনের অঙ্গ হিসেবে এনসিইআরটি বলেছিল, ক্লাস ১২-এর পাঠ্যপুস্তক থেকে কিছু অংশ বাদ দিতে হবে, যা প্রায় একই ধরনের বিষয় (Overlapping) এবং অপ্রসাঙ্গিক (Irrelevant)। 

ভারতের ইতিহাসে মুঘল যুগ (Mughal Era) নিঃসন্দেহে একটা বড় পর্ব। মুঘল ইতিহাসকে অগ্রাহ্য করে কখনই ভারতের প্রাচীন ইতিহাস সম্পূর্ণ হতে পারে না। কিন্তু এরই মাঝে আরও একটি কথা উঠে আসছে। পাঠ্যপুস্তক থেকে মুঘল সাম্রাজ্যের যে ইতিহাস বাদ দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু তার পরিবর্তে সেই স্থান পাঠ্যবইতে কোন বিষয় নেবে। আর যদি মুঘল ইতিহাসকে মুছে ফেলতে হয়, সেই সময় মুঘলদের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ইতিহাস কি চিরতরে মুছে ফেলা হবে, ভুলিয়ে দেওয়া হবে? ভারতে যে সময় মুঘল সাম্রাজ্য কায়েম ছিল, সেই সময় দেশে সংস্কৃত ভাষায় বহু কাব্য ও সাহিত্য রচনা হয়েছিল। 

আরও পড়ুন: 1857 Revolt | সিন্ধিয়ারা মহাবিদ্রোহে লক্ষ্মীবাই, তাতিয়া টোপির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, কটাক্ষ কংগ্রেসের 

সেই সময় সংস্কৃত জানা নামজাদা ও বিখ্যাত কবিদের মধ্যে অন্যতম নাম ছিলেন কবি জগন্নাথ পণ্ডিতরাজা (Jagannatha Panditaraja)। ইতিহাসে উল্লেখ আছে, তিনি শ্রেফ নাম বদল করে একই কবিতা তিন রাজাকে শুনিয়েছিলেন। শাহজাহান (Shah Jahan), জগৎসিংহ (Jagatsimha) এবং প্রাণনারায়ণ (Prananarayana)। কবি জগন্নাথকে পণ্ডিতরাজা উপাধী দিয়েছিলেন মুঘল সম্রাট শাহজাহান। পণ্ডিতরাজার অর্থ হলো পণ্ডিতদের রাজা (King of Scholars)। ইতিহাস বলে, কবি জগন্নাথ সুরাপান ও ভালোমন্দ খাওয়া-দাওয়াতে (Wined and Dined) মজে থাকতেন। তাঁর লেখায় – “আমি যা চাই, আমাকে কেবলমাত্র দু’জন দিতে পারেন – ঈশ্বর (God), নাহলে দিল্লির সম্রাট (Emperor of Delhi)। বাকি রাজারা আমায় যা দেন, তা আমি সপ্তাহে মুদির মাল কিনতে খরচ করি”

সেই সময়কার জনশ্রুতি ও ইতিহাসে অনুসারে, পণ্ডিতরাজা জগন্নাথ এক মহিলার প্রেমে হাবুডুবু খেতেন। তাঁর নাম ছিল লাভাঙ্গি (Lavangi)। তাঁকেও বিয়েও করেছিলেন সংস্কৃত কবি। এই মুসলিম মহিলাকেই বহু শ্লোকে যবনী (Yavani) হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। সেখান কবি বলেছেন, তাঁর ত্বক মাখনের মতো মসৃণ। তিনি যখন তাঁর সঙ্গে সময় কাটান, তখন তাঁর না চাই ঘোড়া, না চাই হাতি, আর না চাই অর্থ।

ঔরঙ্গজেবের (Aurangzeb) মামা শায়েস্তা খান (Shaista Khan) সংস্কৃত শিখে ছিলেন। তাঁর লেখা ছ’টি কবিতা রসকল্পদ্রুমে (Rasakalpadruma) সংরক্ষণ করা আছে। শাহজাহানের বড় ছেলে দারা শিকোহ (Dara Shikoh), তিনিও সংস্কৃত আয়ত্ত করেছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্যই ছিল, ইসলাম (Islam) এবং বেদান্তকে (Vedanta) একে অপরের মাধ্যমে বোঝা করা (Understand)। 

সেই সময় আরও একজন কবি ছিলেন। কবীন্দ্রাচার্য (Kavindracharya), শাহজাহানের আমলে বারাণসী পণ্ডিত সম্প্রদায়ের (Banaras Scholar Community) প্রধান ছিলেন। অসাধারণ বাকপটু ছিলেন তিনি। সম্রাটের সামনে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের কর বাতিল করার বিষয়টি এমনভাবে উপস্থাপন করেছিলেন যে প্রকৃতপক্ষে করটি বাতিল হয়। সারা দেশে কবীন্দ্রাচার্যের প্রশংসায় বহু কবিতা লেখা হয়েছিল, তার সবকটিই আজ কবীন্দ্র চন্দ্রোদয় (Kavindra Chandrodaya) বই আকারে সংরক্ষিত আছে।    
দক্ষিণ ভারত এমন একটি জায়গা, যা বহু সংস্কৃত কবি উপহার দিয়েছে ভারতের ইতিহাসকে। সেই সময় দক্ষিণ ভারতের বহু সংস্কৃত কবি বিভিন্ন ধর্মের একাধিক রাজা-সম্রাটের পৃষ্ঠপোষকতায় দিয়ে কাটিয়েছিলেন। কবি ভানুকার ষোড়ষ শতকের সেরকমই একজন সংস্কৃত কবি। তিনি শ্লোক লিখেছিলেন, যা আমরা সুপরিচিত শ্লোক সঙ্কলনে দেখতে পাই। ভানুকরের শ্লোক সঙ্কলনে বিভিন্ন রাজা-মহারাজা-সম্রাটের প্রশংসা করা হয়েছে। তাঁর পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে ছিলেন রাজা কৃষ্ণদেব রায় (Krishnadevaraya), নিজাম শাহ (Nizam Shah) এবং শের শাহ (Sher Shah), এঁরা সকলেই দাক্ষিণাত্যে শাসন করতেন। স্বাভাবিকভাবেই ভানুকরের সঙ্গে নিজামের ভালো সম্পর্ক ছিল। তাঁর উদারতা, সামরিক বিজয়ে দক্ষতা এবং এমনকি তার শারীরিক গড়ন নিয়ে শ্লোক ও পদ্যে প্রশংসা করা হয়েছে।     

ষোড়শ শতাব্দীতে আরও এরকজ সুপরিচিত সংস্কৃত কবি ছিলেন গোবিন্দ ভট্ট (Govinda Bhatta)। তিনি রেওয়ারের রাজা বাঘেলা রামচন্দ্রের (King Vaghela Ramachandra of Rewa) প্রশংসায় রামচন্দ্র-যশহ-প্রশস্তি (Ramachandra-yashah-prashasti) রচনা করেছিলেন। কিন্তু রামচন্দ্র গোবিন্দ ভট্টের একমাত্র পৃষ্ঠপোষক (Patron) ছিলেন না। বলতে গেলে, গোবিন্দ ভট্ট নিজেকে আকবরীয় কালিদাস (Akbariya Kalidasa) নামে অভিহিত করতেন। তাঁর পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যক্তি হলেন মোঘল সম্রাট আকবর। একটি প্রশংসামূলক পদ্যে (Laudatory Verses), তিনি আকবরকে হুমায়ুনের বংশের (Humayun’s lineage) শ্রেষ্ঠ রত্ন হিসেবে প্রশংসা করেছেন।

তবে মুঘল যুগে লেখা সব সংস্ক শ্লোক বা পদ্য কিন্ত সম্রাটদের সম্পর্কে নয়। সপ্তদশ শতকের কবি নীলকণ্ঠ শুক্ল (Nilakantha Shukla) সেরকমই এক উদাহরণ। তিনি বিখ্যাত ব্যাকরণবিদ ভট্টোজি দীক্ষিতের (Famous Grammarian Bhattoji Dikshita) শিষ্য (Disciple) ছিলেন। কবি নীলকণ্ঠ মুঘল আমলে বেনারসের একজন ব্রাহ্মণ গৃহশিক্ষক এবং একজন মুসলিম সম্ভ্রান্ত মহিলার মধ্যে প্রণয় নিয়ে একটি মহাকাব্য রচনা করেছিলেন।

ভারতবর্ষ এমন একটি দেশ যেখানে সংস্কৃত কবিরা ইসলামী শাসনে শ্লোক, কাব্য, সাহিত্য রচনা করেছিলেন, তেমনই আবার রামায়ণ (Ramayana), মহাভারত (Mahabharata), এমনকি শুকসপ্ততির (Shuka Saptati) মতো ধ্রুপদী সংস্কৃত কাব্য, সাহিত্য ফার্সি ভাষায় (Persian Language) অনুবাদ হয়েছে। রজমনামা (Razmnamah), এটি মহাভারতের একটি ফার্সি অনুবাদ। ষোড়শ শতকের শেষের দিকে আকবর কর্তৃক প্রণীত হয়েছিল এই রজমনামা। বলা হয়, ইসলামের একেশ্বরবাদী দেবতা এবং সংস্কৃত মহাকাব্যে বর্ণিত অগণিত দেবতাদের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতেই রচিত হয়েছিল এই ফার্সি অনুবাদ। তার সঙ্গে স্থান পেয়েছে কোরানে লেখা বহু কথা-বাগবৈশিষ্ট। উল্লেখিত আছে, আল্লাহর কাছে আদাহ উদ্দেশে বর্ণিত নামাজ।

এখন প্রশ্ন হলো, মানুষ কিভাবে জানবেন, এতসব কথা। কোনও বই, কোনও পাণ্ডুলিপি, কিংবা শিলালিপি থেকেও এসব উদ্ধারের চেষ্টাও করা হয়নি। প্রশ্ন হলো, সেই দায়িত্ব কার? পাঠ্যবই থেকে ভারতীয় ইতিহাসের একটি যুগ বাদ দেওয়া হচ্ছে, তাহলে মুঘল আমলের সংস্কৃত সাহিত্যও কি মুছে ফেলা হবে? মুছে ফেলা হবে কি সংস্কৃত সাহ্যিত্য মুঘল সম্র্রাট, নিজামদের প্রশংসার কথা?

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সুখ-সম্পদে ভরে উঠবেন এই ৫ রাশির জাতক
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
লখনউ দুরমুশ, আইপিএলের মগডালে KKR
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
নারিনের ব্যাটে ভর করে ২৩৫ করল KKR
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
কাল, সোমবার এসএসসি মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
ফের নারিনের তাণ্ডব, বড় রানের পথে কলকাতা
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
স্কুলে বেত খেয়েছিলাম: প্রধান বিচারপতি
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
হোয়াইট হাউসের গেটে ধাক্কা গাড়ির
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
৯ নম্বরে ব্যাট করতে এলেন ধোনি, চলছে ট্রোলিং
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
এশীয় বংশোদ্ভূত সাদিক খান লন্ডনের মেয়র
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
লখনউয়ের বিরুদ্ধে কী হবে নাইটদের একাদশ?
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
শ্রেয়সের হৃদরোগের কারণ কোভিড ভ্য়াকসিন!
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
বাড়িতে পিঁপড়ের উপদ্রব! জেনে নিন কীভাবে রেহাই পাবেন
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
একমাত্র রোহিতকেই ভয় পেতেন অধিনায়ক গম্ভীর!  
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team