কলকাতা: বাংলার সংগীত জগতের এক স্বর্ণযুগের অবসান। প্রয়াত গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। আজ সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা নাগাদ অ্যাপোলো হাসপাতালে তাঁর জীবনাবসান হয়। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। গত ২৬ জানুয়ারি, বুধবার সন্ধ্যা থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রবাদ প্রতিম সঙ্গীতশিল্পী। ২৭ জানুয়ারি এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছিল তাঁর। এর পর গীতশ্রীর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ এলে তাঁকে অ্যাপোলোতে স্থানান্তরিত করা হয়।
১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর কলকাতার ঢাকুরিয়া এলাকায় জন্ম। ৬ ভাইবোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে ছোট। পণ্ডিত সন্তোষ কুমার বসু, অধ্যাপক এটি ক্যানন এবং অধ্যাপক চিন্ময় লাহিড়ীর কাছে সন্ধ্যা সঙ্গীতের প্রশিক্ষণ নেন। তবে তাঁর গুরু ছিলেন উস্তাদ বড়ে গোলাম আলী খানের ছেলে উস্তাদ মুনাওয়ার আলী খান। ‘সপ্তপদী’, ‘পথে হল দেরী’, ‘অগ্নি পরীক্ষা’, ‘দেওয়া নেওয়া’, ‘পিতা পুত্র’ – একের পর এক সিনেমায় তাঁর কণ্ঠের জাদু শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে।
হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, রবিন চট্টোপাধ্যায় ও নচিকেতা ঘোষের সঙ্গে তিনি অনেক কাজ করেছেন। ১৯৭১ সালে ‘জয় জয়ন্তী’ এবং ‘নিশিপদ্ম’ ছবিতে গান গেয়ে শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। গান দুটি হল – ‘আমাদের ছুটি ছুটি’, ‘ওরে সকল সোনা মলিন হল’। এছাড়াও ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ উপাধিতে সম্মানিত করে। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁকে পদ্ম পুরষ্কার নেওয়ার কথা বলা হলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।
আরও পড়ুন: Sandhya Mukherjee : সন্ধ্যা তারার আলো
Deeply mourned by the sad demise of the legendary figure of the arena of music #sandhyamukherjee .
May her soul rest in peace.
Would have been better,had she not been insulted by @BJP4India Govt at her fag end of life.
She will live in our heart forever.
— DR SANTANU SEN (@SantanuSenMP) February 15, 2022
শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে প্রশিক্ষিত হলেও তাঁর বেশিরভাগ কাজ বাংলা আধুনিক গানে। ১৯৫০ সালে তারানা চলচ্চিত্রে একটি গান দিয়ে তিনি মুম্বইতে হিন্দি গান গাওয়া শুরু করেন। ১৭টি হিন্দি চলচ্চিত্রে নেপথ্য গায়িকা হিসেবে গান গেয়েছিলেন। ব্যক্তিগত কারণে ১৯৫২ সালে কলকাতা শহরের বাড়িতে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৬৬ সালে বাঙালী কবি শ্যামল গুপ্তকে বিয়ে করেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। শ্যামল তাঁর অনেক গানের জন্য কথা লিখে দিয়েছিলেন।