লাগাতার বৃষ্টির জের। রাজ্য জুড়ে কোথাও জলমগ্ন এলাকা আবার কোথাও বা বাড়ছে নদীর জলস্তর। বিপর্যস্ত সাধারণ জনজীবন। এরই মধ্যে আশার খবর মিলল দুর্গাপুর সংলগ্ন অঞ্চলগুলিতে। কমানো হল দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ। গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টির ফলে সমস্ত নদীগুলির জলস্তর বেড়ে গিয়েছিল। সেই তালিকায় ছিল দামোদরও। প্রায় বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছিল নদ। এর সঙ্গে মাইথন ও পাঞ্চেত থেকেও জলছাড়া হচ্ছিল। এই দুইয়ের চাপে পড়ে শুক্রবার দফায় দফায় জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়ে চলেছিল দুর্গাপুর ব্যারেজ। শনিবার ভোরেও প্রায় ৭০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। এতে আশঙ্কায় পড়েছিল নিম্ন অববাহিকায় বসবাসকারী মানুষেরা। জল এভাবে ছাড়তে থাকলে ডুবে যেতে পারে আশপাশ। শনিবার সকাল ৯ টার খবর অনুযায়ী, দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে এখন ৫০ হাজার ৫২৫ কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে। অর্থাৎ ৩ ঘন্টার ব্যবধানে প্রায় ২০ হাজার কিউসেক কমানো হয়েছে। এতে অনেকটাই স্বস্তিতে দামোদরের নিম্ন অববাহিকার মানুষরা।
আরও পড়ুনঃ আজও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা
একই চিত্র প্রায় সব জায়গাতেই। রাতভর অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে কম বেশি সব জায়গাতেই। এর ফলে শুধু দামোদরই নয়, বীরভূম সহ প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের অনেক জায়গাতেই বেড়েছে জলস্তর। কোথাও বা নদ-নদীর জলস্তর বিপদসীমার মধ্য দিয়ে বইছে। এর ফলে জলাধার কিংবা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়তে হচ্ছে। যেমন, ঝাড়খণ্ডের দেওঘর সংলগ্ন সিকাটিয়া জলাধার থেকে ৪০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই অজয় নদের জলস্তর ফুলে ফেঁপে উঠেছে।
আরও পড়ুনঃ সোমবার থেকে বাড়ছে দূরপাল্লার ট্রেন
বীরভূম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। নানুর, ইলামবাজার, জয়দেব, দুবরাজপুর প্রভৃতি নদ-নদী সংলগ্ন গ্রামের মানুষকে স্থানীয় স্কুলে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে মাইকিং করে বারবার সতর্ক করা হচ্ছে গ্রামবাসীদের। অন্যদিকে, বীরভূমের ইলামবাজার ব্লকের শাল নদীর উপর গোলটে হাসরা গ্রামের মাঝখানে জল বেড়ে সেতু ভেঙে গেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায়ই ৫০ টি গ্রামের মানুষ পারাপার করছে। পারুই থেকে ইলামবাজার যাওয়ার অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম এই পথ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন।এছাড়াও অজয়, ময়ূরাক্ষী, শাল, কোপাই, কুঁয়ে নদীর জল কানায় কানায় বিপদসীমার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, লাভপুর ব্লকের ঠিবা অঞ্চলে কুয়ে নদীর জল ছাপিয়ে জয়চন্দ্রপুর, কান্দরকুলে, চর্তুভূজপুর প্রভৃতি অঞ্চল জলমগ্ন।