নয়াদিল্লি: ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দিল্লির তখত-এ-তাউস থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারকে উৎখাত করতে বিরোধীরা জোটবদ্ধ হচ্ছে। পাটনায় প্রথম বৈঠকেই ঐক্যের বিনুনি বাঁধার কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। কংগ্রেসের নেতৃত্বে দেশের তামাম বিরোধীরা যখন বিজেপি হটানোর ডাক দিয়েছে, তখন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থা জারি নিয়ে বিঁধলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর সুরে পোঁ ধরলেন অন্য বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরাও।
১৯৭৫ সালের এই দিনে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন তৎকালীন কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। সেই জরুরি অবস্থার ৪৮ তম বর্ষপূর্তিতে রবিবার মোদি ‘কালা দিনগুলি’র স্মরণ করেন। সেই সময় ইন্দিরা-বিরোধী বহু দলের নেতানেত্রীকে বিনা কারণে, বিনা বিচারে জেলে ভরা হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদি এদিন সেই ২১ মাসের অবিস্মরণীয় দিনগুলির কথা মনে করিয়ে দেন। তাঁর কথায় জরুরি অবস্থা ছিল ভারতের ইতিহাসে এক কালা অধ্যায় যা সাংবিধানিক মানমর্যাদা, মূল্যবোধের সম্পূর্ণ বিপরীত।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023 | নির্বাচনের আগে ফের উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদ
এক টুইটে মোদি লিখেছেন, আজ আমি সেই মানুষগুলিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি, যাঁরা জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় এক হয়ে লড়াই করেছিলেন। প্রসঙ্গত, যে মোদি জরুরি অবস্থার সমালোচনা করে কংগ্রেসকে তিরে গাঁথতে চেয়েছেন, সেই মোদির বিরুদ্ধেই বিরোধীরা বারবার অভিযোগ তুলেছে দেশে ‘অঘোষিত জরুরি অবস্থা’ জারি করে রেখেছে বিজেপি। দলের তরফেও এক টুইটে ইন্দিরার ছবি দিয়ে লেখা হয়েছে, ভারতীয় গণতন্ত্রের কালোতম অধ্যায় বলে। শুধু মোদি বা দল নয়, স্মৃতি ইরানি, রাজনাথ সিং, কিরেন রিজিজু, প্রহ্লাদ জোশি, নীতিন গড়করি, দেবেন্দ্র ফড়নবিশ সহ বহু বিজেপি নেতা হ্যাশট্যাগ ডার্ক ডেজ অপ ইমারজেন্সি দিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন।
পর্যবেক্ষক মহলের মতে, গত শুক্রবার নীতীশ কুমারের ডাকে পাটনায় যে মহা মন্ত্রণাসভা বসেছিল, তা নিয়ে চাপে রয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। উল্লেখ্য, ইন্দিরার জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে ভারতব্যাপী গণ-আন্দোলন এই পাটনা থেকেই আছড়ে পড়েছিল সেবার। ইন্দিরা কংগ্রেস তখন ছিল গণশত্রু। জনতা দলের সেদিনের আন্দোলনের ঢেউয়ে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু এবার ইতিহাসের পাতা উলটে গিয়েছে। সেই কংগ্রেসেরই হাত ধরে বিরোধী দলগুলি মিলিত হয়েছে। আর তাতেই একের পর এক বিধানসভা নির্বাচন ও লোকসভা ভোটের মুখে ভয় পেয়েছে বিজেপি। তাই বিশেষ করে এবছর জরুরি অবস্থা নিয়ে কংগ্রেসকে তেড়েফুঁড়ে আক্রমণে নেমেছে মোদি অ্যান্ড কোম্পানি।