বেঙ্গালুরু: কাল, শনিবার ভোর হলেই দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হতে শুরু করবে, আগামী পাঁচ বছর (আপাতত) কাদের দখলে থাকবে কর্নাটক বিধানসভা। কিন্তু, ফল যাই হোক কংগ্রেস বা বিজেপি কোনও শিবিরই জেডিএস নেতা এইচ ডি কুমারস্বামীকে মুখ্যমন্ত্রী করতে নারাজ। অন্তত বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত জাতীয় দুটি দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে সরকার গঠনের দাবি জানিয়ে এসেছে। প্রবীণ কংগ্রেস নেতারা এদিন জানিয়েছেন, যদি ত্রিশঙ্কু ফল হয় এবং কুমারস্বামীর সঙ্গে জোটও হয়, তাহলে তাঁরা ২০০৪ সালে মডেলে সরকার গঠন করবেন। যেখানে জেডিএসকে কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী বাছাই করতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে কন্নড় রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই দাবি-প্রতি দাবি চলছে। জেডিএস অভিযোগ তুলেছে, কংগ্রেস এবং বিজেপি তাদের সম্ভাব্য জয়ী বিধায়কদের কিনতে দর হাঁকাহাঁকি করেছে। বিজেপির রাজ্য সহসভাপতি নির্মলকুমার সুরানার দাবি, আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ হচ্ছি। এবার হাতে গোনা কয়েকজন নির্দল বিধায়ক হবেন। আমার আশা তাঁরা আমাদেরই সমর্থন জানাবেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশিও বুক বাজিয়ে বলেন, ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছানোর বিষয়ে দৃঢ় বিশ্বাসী আমরা। বিজেপি নিজের ক্ষমতায় সরকার গঠন করবে। সমস্ত বুথ ফেরত সমীক্ষা ভুল প্রমাণ হবে।
আরও পড়ুন: HC | Abhishik | কুন্তল মামলায় অভিষেককে রক্ষাকবচ দিল না কলকাতা হাইকোর্ট
এসব দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে এদিন কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী মুখ তথা রাজ্য সভাপতি ডি কে শিবকুমার বলেন, ভোট পরবর্তী সমীক্ষাগুলির নিজস্ব ধরন আছে। তবে আমি আমার আগের সিদ্ধান্তেই অটল আছি। আমরা ১৫০ আসন পাব। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সুরজেওয়ালাও বলেন, বিজেপি তো তাদের পরাজয় স্বীকার করেই নিয়েছে। কর্নাটকের মানুষকে অসংখ্য ধন্যবাদ কংগ্রেসের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য। শুধু কাল ফল বেরনো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রবীণ বিজেপি নেতা ইয়েদুরাপ্পার বাড়িতে বৈঠক করেন দলের শীর্ষ নেতারা। ওই বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই। তিনিও ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছানোর বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। জোট সরকারের কোনও প্রয়োজন নেই বলে তিনি দাবি করেন। তাই অন্য কোনও দলের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্ন ওঠে না, দাবি তাঁর।
ভোট পরবর্তী সমীক্ষার ইঙ্গিত, বিজেপির ক্ষমতায় ফেরা প্রবল অনিশ্চিত। সেই হিসেবে এই খেলার রেফারি হতে চলেছে এইচ ডি কুমারস্বামীর দল জেডিএস। তাই ইতিমধ্যেই জেডিএসের সঙ্গে চূড়ান্ত দরাদরি কষছে কংগ্রেস এবং বিজেপি দুই শিবিরই। দলের নেতা কুমারস্বামীও বলেছেন, দুই পক্ষই তাঁদের সঙ্গে কথা চালাচালি করছে। তাঁর কাছে সকলেই সমর্থন চেয়ে রেখেছে।
তবে ২০১৮ সালে কংগ্রেস যেমন বাধ্য হয়ে আঞ্চলিক দলের কাছে মাথানত করে মুখ্যমন্ত্রিত্ব পদ ছেড়ে দিয়েছিল, এবার সে সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বুথ ফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত মিলে গেলে জেডিএস অর্থাৎ কুমারস্বামীকে সরকারের চালকের আসন নাও ছাড়তে পারে সোনিয়া-রাহুলের দল। বিজেপি শিবির থেকেও সেই আঁচ ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে। উল্লেখ্য, আগেরবার মাত্র ৩৭ জন বিধায়ক নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন কুমারস্বামী।