এই পৃথিবীকে (Earth) ভবিষ্যতে মহাপ্রলয়ের হাত থেকে বাঁচাতে মহাশূন্যে বিশাল বিস্ফোরণ ঘটাল আমেরিকা। ৩৪ কোটি ৪০ লক্ষ ডলার খরচ করে পাঠানো ডার্ট (DART) মহাকাশযানকে কক্ষপথেই ধ্বংস করে দিল মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা (NASA)। মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মতে, এর ফলে ভবিষ্যতে ধেয়ে আসা কোনও গ্রহাণুর ( Asteroid) পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ার ঢাল তৈরি হবে। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই সূর্য থেকে একটি আগুনের গোলা ছিটকে শুক্রের গায়ে আছড়ে পড়েছিল। সে রকম কোনও ঘটনা যাতে পৃথিবীর মানুষের সঙ্গে না ঘটে, সেই সতর্কতায় জেনেবুঝেই আমেরিকা এটা করল।
বাইবেলের (Bible) নিউ টেস্টামেন্টে (New Testament) বর্ণিত ‘আর্মাগেডন’ (Armageddon) অর্থাৎ শুভ-অশুভের লড়াইয়ের কথা রয়েছে। যে যুদ্ধক্ষেত্রে পৃথিবীর শেষ যুদ্ধ হবে। সেটাই মানবসভ্যতার অন্তিম যুদ্ধ বলে বর্ণনা করা রয়েছে। হিন্দুমতেও কলিকালকেই শেষ যুগ বলে বলা রয়েছে। এই কলিতেই পাপের ভারে পৃথিবীতে মহাপ্রলয় এসে উপস্থিত হবে এবং তার ধাক্কায় ধ্বংস হবে সবকিছু। আমেরিকার এই মিশনকেও কক্ষচ্যুত অন্যান্য গ্রহাণুর ‘বহিঃআক্রমণ’ থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করার ‘আর্মাগেডন’ কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আমেরিকার বড় ধাক্কা, প্রাক্তন মার্কিন গোয়েন্দাকে নাগরিকত্ব দিল রাশিয়া
মাত্র ১০ মাস আগে দি ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডিরেকশন টেস্ট (DART) মিশন হাতে নিয়েছিল নাসা। এবং জেনেবুঝেই একটি গ্রহাণুর বুকে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। নাসা এই পরীক্ষাটি চালিয়েছে একটি যুগ্ম গ্রহাণুতে, যাকে ডিডিমোস, গ্রিক ভাষায় যমজ বলে। এই পদ্ধতিতে ভবিষ্যতে পৃথিবীর দিকে কোনও গ্রহাণু ধেয়ে এলে তাকেও বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নষ্ট করা সম্ভব হবে। মহাকাশযানটি নিজস্ব কক্ষপথ থেকে সামান্য সরে ২৪ হাজার কিমি গতিতে গিয়ে একটি যমজ গ্রহাণুর বুকে আছড়ে পড়ে।
এর ফলে নাসার বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, গ্রহাণুটিও এই প্রতিঘাতে সামান্য কক্ষচ্যুত হয়েছে। যার ফলে নাসার বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এইভাবে পৃথিবীর দিকে যদি কোনওদিন কোনও গ্রহাণু ছিটকে আসে তাহলে আমরাও তাকে কক্ষচ্যুত করতে পারব। এই পরীক্ষার সময় জেমস ওয়েব এবং হাবল টেলিস্কোপ সারাক্ষণ প্রতিঘাতের ছবি তুলেছে। এই গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে ৯৬ লক্ষ কিমি দূরের। মাত্র ১৯৯৬ সালে এটি আবিষ্কার হয়। বিস্ফোরণের পর গ্রহাণুটি কক্ষ থেকে নড়েছে কিনা তা বুঝতে আরও কয়েক সপ্তাহ লেগে যাবে নাসার।